লেখক লীলা মজুমদারের জন্মদিন আজ
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৫:১০ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
জন্ম ভারতের রায় পরিবারের গড়পাড় রোডের বাড়িতে হলেও শিলঙের মেঘ-পাহাড়ে কেটেছে তাঁর ছোটবেলা। লেখালেখির শুরুটা করেন পাহাড়ি শহর শিলঙে সেই ছোটবেলাতেই। প্রায় আট দশকের বর্ণাঢ্য সাহিত্য জীবনে তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য বাংলা গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস। তবে বিচরণ ছিল সবচেয়ে বেশি শিশু সাহিত্যে। শিশুদের আনন্দ দিতেই একের পর এক রচনা করেছেন শিশুতোষ গ্রন্থ।
কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন ভারত সরকারের শিশু সাহিত্য পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কার, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কারসহ আরো অনেক পুরস্কার।
এপার-ওপার দুই বাংলাতেই তিনি সমান জনপ্রিয় ছিলেন। বাংলা সাহিত্যে শতায়ু লাভ করেছেন যে দু-একজন সাহিত্যিক তাঁদের মধ্যে তিনি একজন। সেই প্রয়াত শতায়ু বর্ষী সাহিত্যিক লীলা মজুমদারের জন্মদিন আজ ।
১৯০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয়া লীলা মজুমদার রায় পরিবারের প্রমদারঞ্জন রায় ও সুরমাদেবীর সন্তান। তিনি সম্পর্কে লেখক সুকুমার রায়ের বোন ও বিখ্যাত ভারতীয় পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পিসি হন। শিলঙের লরেটো কনভেন্টে পড়াশোনার মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। ইংরেজী সাহিত্যে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া প্রথম বাঙালি হিসেবেও তিনি গৌরব অর্জন করেছেন।
তিনি কর্মজীবন শুরু করেন বিশ্বভারতীতে ইংরেজীর শিক্ষক হিসেবে। এরপর কিছুদিন আশুতোষ কলেজে পড়ানোর পর চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বাধীনভাবে সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। দীর্ঘ দুই দশক এভাবে কাটিয়ে আকাশবাণীতে যোগ দেন প্রযোজক হিসেবে। সাত-আট বছর কাজ করার পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফের শুরু করেন সাহিত্য চর্চা। এর পাশাপাশি তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৪ সাল অবধি সত্যজিৎ রায়ের সন্দেশ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
তাঁর প্রথম গল্প লক্ষ্মীছাড়া ১৯২২ সালে সন্দেশ পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-হলদে পাখির পালক, টং লিং, পদি পিসীর বর্মী বাক্স, সব ভুতুরে প্রভৃতি। সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি লীলা মজুমদার অনেক শিক্ষামূলক রচনা ও রম্যরচনা ইংরাজী থেকে বাংলায়ও অনুবাদ করেছেন।
আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী লীলা মজুমদার ব্যক্তিগত জীবনে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ডাঃ সুধীর কুমার মজুমদারকে। যার কাছ থেকে আজীবন তিনি সাহিত্য চর্চায় অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। ‘পাকদন্ডী’ নামে একটি আত্মজীবনীও রচনা করেছেন এই লেখক। যেখানে তাঁর শিলঙের ছোটবেলা, কলকাতার জীবন ও কর্মজীবনসহ উঠে এসেছে রায় পরিবারের নানা মজার ঘটনা।
দীর্ঘ সাহিত্য জীবন অতিবাহিত করার পরে ২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল কলকাতায় জীবনাবসান ঘটে শতবর্ষ আয়ু লাভ করা লেখক লীলা মজুমদারের।