‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ ছাগল পেলে দিন ফিরেছে বিলকিসের
বাসস
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০৪ এএম, ১ জুন ২০১৯ শনিবার
মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের শোলমারী গ্রামের বিলকিস খাতুন ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ ছাগল পালন করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়েছেন। নিজে হয়েছেন স্বাবলম্বী। প্রতিবছর ছাগল বিক্রি করে উপার্জন করে তার লাভ থাকে লক্ষাধিক টাকা।
গৃহবধু বিলকিস এখন ওই অঞ্চলের দরিদ্র, অসহায়, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের আলোর দিশারী।
জেলা শহর থেকে দশকিলোমিটার উত্তরে সীমান্তবর্তি শোলমারী গ্রামের আবুল বাশারের স্ত্রী বিলকিস খাতুন (৩৫) ছাগল পালন করে সংসারে স্বামীকে সহযোগিতার পাশপাশি, জায়গা কিনে পাকাঘর করেছেন। সন্তানদের লেখাপাড়া করাচ্ছেন। এখন আর অভাবে তাদের কষ্ট করতে হয়না।
ওই গ্রামের মেয়ে বিলকিস খাতুন জানান, ১৬-১৭ বছর আগে বাবা-মা তার বিয়ে দেন সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের রাজ মিস্ত্রি আবুল বাশারের সাথে। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন দরিদ্র আবুল বাশার। তার পৈত্রিক ভিটাবাড়ি-জমি বলতে তেমন কিছুই নাই।
বিলকিস স্বামীকে নিয়ে যান বাবার বাড়ি শোলমারী বাঙালপাড়ায়। সেখানে বাবার জমিতে কুঁড়ে ঘর করে বসবাস করতে শুরু করেন তারা। বিলবিস সিদ্ধান্ত নেন স্বামীকে সহযোগিতা করার।
তিনি তার মায়ের দেয়া একটি ছাগল নিয়ে পালতে শুরু করেন। ওই ছাগল তার জীবনে আশির্বাদ হয়ে দেখা দেয়। একটি থেকে দু’টি, দু’টি থেকে চারটি। এভাবে এখন তার ৬২টি ছাগল। এর আগেও তিনি প্রয়োজনের তাগিদে কয়েকবার ছাগল বিক্রি করে টাকা সংসারে দিয়েছেন। সামনে ঈদে তিনি তার খামার থেকে কমপক্ষে আরো ২ লাখ টাকার ছাগল বিক্রি করবেন।
শোলমারী গ্রামের বাঙালপাড়া মাঠে ছাগল চরানোর সময় কথা হয় বিলকিস খাতুনের সাথে। তিনি জানান, ছাগল পালনের মাধ্যমে স্বামীর সংসারে সহযোগিতা করতে পেরে তিনি খুবই খুশি।
এতগুলো ছাগল দেখাশুনা, খাবার দেওয়া ও চিকিৎসার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, সমস্যা হয়না। পরিবারের সদস্যরা সহযোগিতা করেন। এছাড়া ছাগলের জন্য বাড়তি খাবারও কিনতে হয়না। গ্রামের পশু ডাক্তার ছাগলের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
বিলকিসের স্বামী আবুল বাশার বলেন, বিয়ের পর নিজের গ্রামে ঘর-বাড়ির সমস্যার কারণে শ্বশুর বাড়িতে কুঁড়ে ঘর তুলে থাকি।বর্তমানে শোলমারী গ্রামের বাঙালপাড়ায় ৪ কাঠা জমি কিনে পাকা ঘর তুলেছি। এ কাজে স্ত্রী বিলকিস খাতুন তাকে বড় ধরনের সহযোগিতা করেছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লতিফুন্নেসা লতা বলেন, বিলকিস খাতুনের এ উদ্যোগ এলাকার জন্য অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তার দেখাদেখি এলাকার অনেকে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন।