ঢাকা, সোমবার ২৫, নভেম্বর ২০২৪ ১৫:২৯:১৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে ব্রাজিলে বাস খাদে পড়ে ২৩ জনের প্রাণহানী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ ১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী

অনলাইনে বাড়ছে নারী উদ্যোক্তা, সঙ্গে ক্রেতাও

মাজেদুল হক তানভীর | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১২:৩১ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০১৭ শুক্রবার

বর্হিবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আজ অনেক এগিয়ে। ভিড় এড়িয়ে কেনাকাটার দিনও শেষ। প্রযুক্তির ছোয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা হয়ে উঠছে সহজ। যান্ত্রিক কর্মব্যস্ত দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আজ প্রযুক্তিনির্ভর। নারীরাও আজ প্রযুক্তিবান্ধব। প্রযুক্তির কল্যানে অনলাইনে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়ছে। শুধু উদ্যোক্তাই নয়, অনলাইনে ক্রেতার দিক দিয়েও নারীরা এগিয়ে। এমন কয়েকজন অনলাইন নারী উদ্যোক্তা ও ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন মাজেদুল হক তানভীর।

আফসানা নূর কেয়া

আফসানা নূর কেয়া। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে স্বামীর সহযোগীতায় অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার বড় চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করেন তিনি। প্রথমে ‘স্মার্ট ফ্যাশন অ্যান্ড এক্সেসরিজ’ নামে ফেসবুক পেজে ছোট আকারে হিজাব দিয়ে ব্যবসা শুরু করে নিজেকে ঝালিয়ে নেন কেয়া। এরপর বড় পরিসরে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেন। নারীরাই মূলত তার ক্রেতা। ক্রেতাদের আকর্ষিত করতে নানা পণ্যের সম্ভার রেখেছেন তার ফেসবুক পেজে। হিজাব, থ্রি- পিস, কুরতি, আন স্টিচ ড্রেস রয়েছে তার পেজে। প্রায় এক বছর ধরে নিজের ব্যবসা সাজাতে তিল তিল করে ঘাম ঝরাচ্ছেন পরিশ্রমী এই নারী উদ্যোক্তা। বর্তমানে তার নিজস্ব আউটলেট রয়েছে মহাখালীতে।

ফারহানা রহমান

এক কন্যার জননী ফারহানা রহমান সংসার সামলানোর পাশাপাশি সমান তালে গড়ে তুলেছেন তার অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা। ‘ডিভাস ওয়াল্ড’ নামক একটি ফেসবুক পেজের স্বত্তাধিকারী তিনি। বিভিন্ন ডিজাইনের আকর্ষণীয় জুয়েলারি, প্লাজো, মোবাইলের কাভার রয়েছে তার কালেকশনে।

তিনি জানান, ১৮-৩০ বছরের নারীরাই মূলত তার ক্রেতা। দুই বছর আগে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তার অনলাইন ব্যবসার পুঁজি দাঁড়িয়েছে দুই লাখ টাকায়। ভবিষ্যতে নিজের ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান ফারহানা।

আয়েশা সুমি

অনেকটা একইভাবে নিজের উদ্যোগের কথা জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী আয়েশা সুমি। তিনি বর্তমানে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী ফিল্ড রিসার্স হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি ‘কুন্দনিকা’ নামে ফেসবুক পেজের কর্ণধার। তিনি উইমেননিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় সকলেই অনলাইন নির্ভর। তথ্য প্রযুক্তির এই সময়কে কাজে লাগিয়ে কিছু করার মানসিকতা থেকেই মূলত অনলাইন ব্যবসার দিকে আসা।’

কেয়া, ফারহানার ও সুমির মতো অনেক নারী এখন অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ফ্যাশন হাউস, জুয়েলারি হাউসসহ নিত্যপণ্যের সম্ভার এখন অনলাইনে। ঘরে বসে কল করে কিংবা এসএমএস (ক্ষুদে বার্তা) পাঠিয়ে পছন্দের পণ্যটি ক্রেতাদের হাতের নাগালে পৌঁছে দিচ্ছে অনলাইন উদ্যোক্তারা।

অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ কর্ণধারই নারী। এ ধরনের ব্যবসায় জড়িত থেকে নারীরা ঘরে বসেই যেমন উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন তেমনি ক্রেতারাও ঘরে বসে তাদের কাঙ্খিত পণ্যটি পাচ্ছেন।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইক্যাব)-এর সভাপতি রাজিব আহমেদ উইমেননিউজকে বলেন, ‘ই-কমার্স নারী উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বাড়াচ্ছে যা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক দিক। এছাড়া নারীদের ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে ই-কমার্স। শুধু তাই নয়, অনলাইনভিত্তিক ক্রেতা হিসেবেও এগিয়ে আছেন নারীরা’।

তিনি বলেন, ‘আমাদের হিসেব অনুযায়ী ফেসবুকে ৮ হাজার পেজ রয়েছে, এরমধ্যে প্রায় ৫ হাজার পেজের কর্ণধার নারী। ইক্যাবের তথ্যমতে, ‘গত বছর এক হাজার কোটি টাকা ই-কমার্স সেক্টরে লেনদেন হয়েছে।’

কথা হলো কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গেও। রাজধানীর একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘মার্কেটে যেয়ে কেনাকাটা করার চেয়ে ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করা অনেক বেশি সুবিধাজনক। তাই অনলাইনে কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি।’

ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মী মেহেরুন্নেসা বলেন, ‘অফিস করে সংসার সামলানো, বাচ্চাদের দেখাশুনা করার পর কেনাকাটার জন্য বাড়তি সময় বের করা কষ্টকর। এজন্য তিনি অনলাইন শপিং সাইটগুলোর উপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

তিনি বলেন, আমি গত এক বছর ধরে অনলাইনের মাধমে পণ্য কিনছি। সঠিক সময়ে ঘরে বসেই পণ্য হাতে পেয়ে যাচ্ছি। মেহেরুন্নেসার মতো অনেক ব্যস্ত নারী ক্রেতার আস্থা এখন অনলাইন শপিং সাইটগুলোতে।

তবে সম্প্রতি অনলাইন কেনাকাটায় অনেকে প্রতারণা করছেন। ছবিতে দেখানো পণ্যের সঙ্গে বাস্তবের পণ্যটির মিল খুঁজে পাচ্ছেন না অনেক ক্রেতা। তাদের অভিযোগ, হোম ডেলিভারির মাধ্যমে তারা যখন সেই পণ্যটি হাতে পাচ্ছেন তখন তাদের পছন্দের রঙের সঙ্গে ডেলিভারি পণ্যটির অনেক পার্থক্য থাকে। এছাড়া পণ্যের দাম নিয়েও সংশয় রয়েছে অনেক ক্রেতার মনে। অনেকের অভিযোগ অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো লোক ঠকিয়ে রোজগার করে।

ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা না করে, তাদের আস্থা অর্জনে জন্য উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিলেন ই-ক্যাবের সভাপতি রাজিব আহমেদ।