ঢাকা, শনিবার ২৩, নভেম্বর ২০২৪ ৪:৩১:৪৫ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ঢাকায় আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে, বাড়ছে শীতের তীব্রতা পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির দাম কমলেও আলুর দাম বাড়তি রাজধানীতে মা-মেয়েকে এসিড নিক্ষেপ করে ছিনতাই

ঈদযাত্রায় সঙ্গী জানজট, ভোগান্তি বহুগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৩৫ পিএম, ১৯ জুলাই ২০২১ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

লকডাউন শিথিলের পর থেকে দেশের বিভিন্ন ঘাট ও মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বহুগুণে বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তীব্র যানজট, অতিরিক্ত ভাড়া, ঠা ঠা রোদ ও ভ্যাপসা গরম যাত্রীদের কষ্ট কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকামুখী পশুবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে। শিমুলিয়া ঘাটে ফেরি ও লঞ্চযোগে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পার হচ্ছেন। পদ্মায় প্রচণ্ড স্রোতের কারণে ফেরি ও লঞ্চ পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে। ফলে ঘাটে গাড়ির পাশাপাশি মানুষের সারি আরও দীর্ঘ হচ্ছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইল শহর থেকে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত অন্তত ২৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট তৈরি হয়েছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকছে মানুষ।

মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়ায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়ে গেছে। ফেরি ও লঞ্চে পারাপার হচ্ছে মানুষ। উত্তাল পদ্মায় ফেরিগুলো যানবাহন পার করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তাই ঘাটে জট লেগে গেছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল শনিবার সকাল থেকেই। ফেরিঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন আরও দীর্ঘ হচ্ছে। লঞ্চঘাটে মানুষের অস্বাভাবিক জট। সবকিছু ছাপিয়ে একেবারে ফেরির পন্টুনে গিয়ে ঠেকেছে মোটরসাইকেল জট। যাত্রীবাহী যানকে বেশি প্রাধান্য দেয়ায় পণ্যবাহী ট্রাকের লাইন আরও দীর্ঘ হচ্ছে। শিমুলিয়া বন্দর মাঠে ট্রাকের দীর্ঘ সারি। তাই কয়েকটি ট্রাক লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় খানবাড়ি পয়েন্টে। ভিড় এড়াতে পরিবার পরিজন নিয়ে ভোরে ঘাটে পৌঁছলেও পদ্মা পারি দিতে পারছে না লোকজন। তাই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জট ও বিড়ম্বনা দুটোই বাড়ে।

গোপালগঞ্জগামী তাহমিনা বলেন, এভাবে লকডাউন শিথিল করা হলো, কিন্তু ফেরি বাড়ানো হলো না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরি পাওয়া যাচ্ছে না। ভয়ঙ্কর করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না যাত্রীরা।

বিআইডব্লিউটিএ সহ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ সফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, পদ্মায় প্রবল স্রোত থাকায় তিনটি ফেরি চলতে পারছে না। কিন্তু ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাকি ফেরিগুলো পারাপার করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তাই দুইপাড়ে সহস্রাধিক যান পারাপারের অপেক্ষায়।

তিনি জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ রুটে ১৭টির মধ্যে ১৪টি ফেরি সচল। আর এই রুটে ৮৭ লঞ্চের মধ্যে চলাচল করছে ৮৩ লঞ্চ। লঞ্চে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহনের বিধান থাকলে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নেয়া হচ্ছে।

এছাড়া দৌলতদিয়া লঞ্চ-ফেরিঘাটে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় রয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এই ঘাট দিয়ে অনেকে বাড়ি ফিরছেন। পাশাপাশি শত শত গরুবাহী ট্রাক পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছে। অতিরিক্ত গরমে বহু গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা পোর্ট অফিসার মাসুদ পারভেজ জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে এমভি ও এমএল লঞ্চ সহ মোট ৩৭টি লঞ্চ চলাচল করছে। তিনি বলেন, এই দুই নৌরুটে কোন লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়তে পারছে না। সকল লঞ্চে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে।

এদিকে, টাঙ্গাইল মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ সৃষ্টি হওয়ায় বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইল শহরের রাবনা বাইপাস এলাকা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এই মহাসড়কে থেমে থেমে চলে যানবাহন। এতে মহাসড়কে আটকে থেকে দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, পবিত্র ঈদ-উল-আজহা সামনে রেখে ঘরমুখী মানুষের চাপ রয়েছে। পাশাপাশি কোরবানির পশুবাহী যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করছে মহাসড়কে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা সূত্র জানায়, স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে সিরাজগঞ্জের অংশে গভীর রাত থেকেই যানজটের সৃষ্টি হয়। ওই যানজটের সারি দীর্ঘ হতে হতে সেতুর পূর্বপ্রান্ত পর্যন্ত চলে আসে। এ জন্য সেতুতে টোল আদায় বন্ধ হয়ে যায়। যানজট দীর্ঘ হতে হতে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস পর্যন্ত চলে আসে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কের উত্তরবঙ্গগামী লেনের পুরোটাই যানবাহনে ঠাসা। একই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে অনেক সময়। ধীরগতিতে কিছুদূর এগোতেই যানবাহনগুলোকে আবার থেমে থাকতে হচ্ছে।

ট্রাকচালক আমিন মিয়া বলেন, শহর বাইপাসের আশেকপুর থেকে রসুলপুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে তাঁর প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। যানজট নিরসনে মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে জেলা পুলিশের ছয় শতাধিক সদস্য কাজ করছেন। এর বাইরে হাইওয়ে পুলিশও কাজ করছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত জানান, মহাসড়কে তিনগুণের বেশি পরিবহন চলাচল করছে। এতে গাড়ির চাপ যেমন বেড়ে গেছে তেমনি সিরাজগঞ্জের অংশে মহাসড়কের বর্ধিতকরণ কাজের কারণে সৃষ্টি হওয়া যানজট টাঙ্গাইল এসে থেমেছে। এতে পরিবহন সহজেই সেতুর পার হতে পারছে না।

-জেডসি