ঢাকা, শনিবার ২৮, ডিসেম্বর ২০২৪ ১:৪২:২৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একসঙ্গে চলবে: ড. ইউনূস সবজিতে স্বস্তি, চাল ও মাছের দাম ঊর্ধ্বমুখী টেকনাফে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের ৭২ যাত্রীকে উদ্ধার কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী কাবেরী আটক ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন’ নিয়ে জাতীয় সংলাপ শুরু আজ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ সাংবাদিক নিহত লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা

ঈদে দেশীয় খেলনা মন ভরাচ্ছে কচিকাঁচাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৩৬ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২২ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বছর ঘুরে আবারও দুয়ারে কড়া নাড়ছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। দেশে করোনা পরিস্থিতি অনেকাংশেই শিথিল হওয়ায় এবারের ঈদের ব্যঞ্জনাও একটু অন্যরকম। গত দুই বছর মহামারির কারণে মানুষ সাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা যেমন করতে পারেনি, তেমনই ঈদ আনন্দও ছিল ফিকে। অনেকটা ঘরবন্দি অবস্থায় সরকার আরোপিত বিধিনিষেধের আওতায় ঈদ উদযাপন করেছে মানুষ। করোনার সেই প্রতিকূল দিনগুলো কাটিয়ে এরইমধ্যে স্বাভাবিকতা ফিরেছে জনজীবনে। ঈদ ঘিরে তাই এবারের কেনাকাটায় সবচেয়ে বেশি উৎফুল্ল শিশু-কিশোররাও।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মার্কেট-শপিংমলগুলোতে রমজানের শুরু থেকেই সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা চলছে শিশুদের পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য। এর মধ্যে আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে খেলনা। শিশুরা এমনিতেই খেলনাপ্রিয়, তার ওপর ঈদের খুশি আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে তাদের হাতে বাহারি খেলনা তুলে দিচ্ছেন অভিভাবকেরা। আর তাতে ঈদ ঘিরে সবচেয়ে বেশি কাটতি খেলনার দোকানগুলোতে। রাজধানীর খেলনা বিক্রেতারা বলছেন, বছরের মোট বেচাবিক্রির ১৫ থেকে ২৫ শতাংশই হয় ঈদ মৌসুমে।
ঢাকার চকবাজার, লালবাগ ও গুলশান এলাকায় খেলনার দোকানগুলো ঘুরে বেচাকেনার চাঙা ভাব চোখে পড়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় ও ব্যস্ততম খেলনার বাজার পুরনো ঢাকার চকবাজার। ঐতিহাসিকভাবেই চকবাজার রকমারি পণ্যের প্রধান পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত। তবে গত কয়েক বছরে চকবাজারে সব-ছোট মিলিয়ে গড়ে উঠেছে খেলনার কয়েকশো পাইকারি দোকান।

এ বছর রমজানের শুরু থেকেই চকবাজারে পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি রমরমা। ছোট বাঁশি থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি নানা দামের পুতুল এখান থেকে কেনাবেচা হচ্ছে পাইকারি দামে। পাইকারি ক্রেতারা সেগুলো নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। খুচরা বাজারে মানভেদে হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে একেকটি খেলনা।

মাত্র কয়েক বছর আগেও দেশের শহর বা গ্রামাঞ্চলে বিক্রি হওয়া যে কোনো দামের প্লাস্টিকের খেলনা ছিল আমদানিনির্ভর। তবে গত প্রায় এক দশকে অবস্থার কিছুটা হলেও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিকের বাহারি খেলনার বড় অংশই তৈরি হচ্ছে দেশে। বিশেষত, পুরান ঢাকা ও আশপাশের কিছু এলাকা ঘিরে ক্ষুদ্র বা মাঝারি আকারে গড়ে উঠেছে এ শিল্পটি।

এবারের ঈদ বাজার নিয়ে বাংলাদেশ টয় মার্চেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহজাহান মজুমদার বলেন, ঈদ মৌসুমে খেলনা বিক্রি প্রায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। এসময় ঈদের কেনাকাটায় মার্কেট ও শপিংসেন্টারলোতে শিশু-কিশোরদের আনাগোনাও বাড়ে। ফলে পোশাকসহ অন্য জিনিসপত্রের সঙ্গে খেলনার প্রতিও তাদের বাড়তি আকর্ষণ থাকে।

তিনি বলেন, ঈদ এলেই ছোটদের বিভিন্ন উপহার দেওয়ার রেওয়াজ বহু পুরোনো। এক্ষেত্রে শিশুদের পছন্দের তালিকায় উপরের সারিতে থাকে খেলনা। আবার শিশুরা বড়দের কাছ থেকে পাওয়া সেলামির টাকা দিয়েও পছন্দের খেলনা কিনে থাকে। সব মিলিয়ে ঈদের পূর্বাপর দিনগুলোতে প্রচুর খেলনা বিক্রি হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদ বাজারে খেলনার কাটতিতে চাহিদা পূরণে দেশীয় খেলনার কারখানাগুলোতে শ্রমিকেরা দিনরাত একাকার করে কাজ করছেন। প্লাস্টিকের পুতুল থেকে শুরু করে বাহারি গাড়ি, ফিশিং গেম, গিটার, রাইফেল, অ্যাম্বুলেন্স ও মোবাইলসহ নানা ধরনের যন্ত্রের রেপ্লিকার মতো খেলনাগুলো দেশের শিল্প কারখানাগুলোতে প্রচুর তৈরি হচ্ছে। ঢাকাকেন্দ্রিক আশপাশের এলাকাগুলোতে গড়ে ওঠা ছোট-বড় এ ধরনের প্রায় ১৫০টির মতো খেলনা কারখানায় এখন প্লাস্টিকের খেলনা তৈরির ধুম। বর্তমানে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ খেলনার জোগান দিচ্ছে এসব কারখানা। চকবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সেসব খেলনা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুচরা বাজারে।

এবারের ঈদে খেলনা বিক্রির কেমন হচ্ছে, জানতে চাইলে টয় ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী হাজী নুর হুসাইন বলেন, বেচাবিক্রি এখন পর্যন্ত ভালো। ঈদ সামনে রেখে আগামী দিনগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় আরও বাড়তে পারে। কিন্তু সেটা কতটা বাড়বে তা আগেভাগে বলা মুশকিল। কারণ, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্যের এ বাজারে বিলাসী পণ্য কেনার মতো টাকা মানুষের হাতে কমই আছে।

রাজধানীর খেলনা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক দশক আগেও খেলনার বাজার ছিল চীনের দখলে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশেই অনেক খেলনা তৈরি হচ্ছে। বাজারটি ভালোভাবে ধরতে পারায় দ্রুত এ খাতের বিকাশ হয়েছে। দেশীয় খেলনা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো এরইমধ্যে মোট মার্কেট শেয়ারের ৭০ শতাংশ কব্জায় নিয়েছে। বিশেষত, প্লাস্টিকের খেলনার বেশিরভাগই এখন দেশে তৈরি।

দেশের মার্কেট-শপিংসেন্টারগুলোতে বড় সাইজের খেলনার একটি আলাদা বাজার রয়েছে। ছোট খেলনার চেয়ে বড় খেলনায় উপকরণের পরিমাণ কম হলেও মূল্যমানের কারণে এ বাজার আরও বড়। বিগ টয়েসের মধ্যে দেশে প্রচলিত উপকরণ শিক্ষামূলক খেলনা, চলাফেরা করা প্রাণি, ট্রাইসাইকেল, স্কুটার ও অন্যান্য চালানোর মতো গাড়ি, ব্লক ও প্যাজেল, স্পোর্টস আইটেম, ওয়াকার, ইনডোর ও আউটডোরের খেলনা উল্লেখযোগ্য।

এগুলোর অধিকাংশ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, গাজী গ্রুপের মতো বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী তৈরি করছে। আবার আমান প্লাস্টিকসহ কিছু প্রতিষ্ঠানও এখন বড় খেলনা বানাচ্ছে। যেগুলো আসছে ঈদেও গিফট হিসেবে শোভা পাবে দেশের কচিকাঁচাদের হাতে।