ঢাকা, শুক্রবার ১৫, নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫০:৫৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
১৭ বছর পরও সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে উপকূলবাসী গাজায় ত্রাণ বহনকারী ট্রাকে ক্ষুধার্ত মানুষের হানা ফের কমলো স্বর্ণের দাম, ভরিতে কত দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস শেখ হাসিনাকে নিয়ে যা জানাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতীয় নির্বাচন কবে জানালেন ড. ইউনূস

এই হেমন্তে ঢাকায় ছাতিম ফুলের সুগন্ধ!

আইরীন নিয়াজী মান্না  | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:১২ এএম, ৩১ অক্টোবর ২০২৩ মঙ্গলবার

ছাতিম ফুল।  ছবি লেখক।

ছাতিম ফুল। ছবি লেখক।

এই হেমন্তে ঢাকা শহরের বাতাসে সন্ধ্যা থেকে একটি মিষ্টি তীব্র গন্ধ পথচারির মনে দোলা জাগায়৷ একটু লক্ষ্য করলেই যে কেউ পেতে পারে সে গন্ধ৷ হেমন্তের ঠিক এ সময়টায় ছাতিম ফুলের সুবাসিত গন্ধে মন উতালা হয়ে উঠে৷ 

ছাতিম ফুলের গন্ধে
মন ছুটে যায় আনন্দে
বাতাসে সাদা ফুলের দোলা
খুশিতে মনদুয়ার খোলা!

হ্যাঁ সত্যি, ছাতিম ফুলের গন্ধ মনে এক অপরুপ দোলা দিয়ে যায়। আমরা কেবল ছাতিম গাছের ভূতের কথাই জানি! কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না, এই ছাতিম গাছে কী অপরূপ ফুল ফোটে; সে ফুলের গন্ধ কতো সৌরভময়। একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে হেমন্তে ঢাকার বাতাসে সন্ধ্যা থেকে একটি মিষ্টি তীব্র গন্ধ পথচারির মনে দোলা জাগায়৷ একটু লক্ষ্য করলেই যে কেউ পেতে পারে সে সুগন্ধ৷ 

আমাদের এই রাজধানীসহ সারা দেশের এখন এ ফুল বাতাসে মাদকতার সৃষ্টি করছে৷ এখনও আমাদের এই ইট-পাথরের রাজধানীতে ছাতিম গাছের বেশ দেখা মেলে। আর গ্রাম-গঞ্জে তো আছেই।

ঢাকা মহানগরীর প্রায় সব এলাকাতেই ছাতিম গাছের দেখা পাওয়া যায় ৷ ঝাঁকড়া পত্রপল্লব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা উচু এই গাছের শাখা প্রশাখায় ভরা পাতা আর সাদার মধ্যে সবুজাভ রঙে থোকায় থোকায় ফুলে প্রকৃতির কি নিসর্গ তা না দেখলে অনুভব করা যায় না৷ 

শরতের শেষ ভাগ থেকে হেমন্তের শেষ ভাগ পর্যন্ত এমনভাবে ফুল ফোটে যে পাতা দেখাই যায় না৷ দূর থেকে দেখে মনে হয় মাথার ওপর কেউ ধবধবে সাদা চাদর মেলে ধরেছে৷ অনেক দূর থেকে ভেসে আছে ফুলের সৌরভ৷ 

ছাতিমের ইংরেজি নাম Indian Devil tree (ইন্ডিয়ান ডেভিল ট্রি)৷ ছাতিম 'অ্যাপোসাইনেসি' বর্গের অন্তর্ভূক্ত উদ্ভিদ৷ বৈজ্ঞানিক নাম Alstonia scholaris (এলস্টোনিয়া স্কলারিস)৷ ছাতিম মূলাবর্তে সাতটি পাতা এক সঙ্গে থাকে বলে সংস্কৃতে এবং হিন্দিতে একে 'সপ্তপর্ণ' বা 'সপ্তপর্ণা' নামে ডাকা হয়৷ 

ছাতিমের আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া৷ এই গাছ বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্র জন্মে৷ সাধারণত আদ্র , কর্দমাক্ত, জলসিক্ত স্থানে ছাতিম বেশি জন্মে৷ এছাড়া অন্যান্য অনেক ক্রান্তীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলেও গাছটি পরবর্তীতে বিস্তার লাভ করেছে৷ 

বৃটিশদের কাছে ছাতিম ভুতুরে ইমেজের হলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ছাতিম গাছকে 'প্রাদেশিক বৃক্ষ' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷ 

ছাতিম গাছ ২০ থেকে ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়৷ বহুশাখাবিশিষ্ট গাছটির ছাল গন্ধহীন, অসমতল ও ধুসর৷ ছাতিম পাতার উপরের দিক চকচকে আর তলার দিক ধুসর থাকে৷ এর শাখা পত্রমূলাবর্তবিশিষ্ট৷ ১০ থেকে ১৫ সে. মি. লম্বা পাতা একই মূলাবর্তে ৪ থেকে ৭ টা পর্যন্ত থাকে৷ শাখার শীর্ষে সবুজ মেশানো সাদা রংয়ে থোকায় থোকায় ক্ষুদ্রাকৃতি ফুল ফোঁটে৷ ৩০ থেকে ৬০ সে. মি. লম্বা সরু ফল এক বৃন্তে সাধারণতঃ দুটো করে ঝুলে থাকে৷ ছাতিমের বীজ লম্বাটে ডিম্বাকার, কিনারায় আঁশ থাকে আর শেষ প্রান্তে এক গোছা চুল থাকে৷ 

ছাতিম গাছের অভ্যন্তরে দুধের মতন সাদা এবং অত্যন্ত তেতো কষ প্রচুর পরিমাণে থাকে৷ ছাতিমের কষ ও বাকল বা ছাল ওষুধের কাজে ব্যবহার করা হয়৷ আমাশা, জ্বর, ম্যালেরিয়ে, চর্মরোগ ও স্নায়ূর শক্তিসূত্রে অসাড়তা আনে বলে রক্তের চাপ কমাতে ছাতিম উপকারী৷ 

ছাতিমের কাঠ দিয়ে খুব সাধারণ মানের আসবাবপত্র, প্যাকিং কেস, চায়ের পেটি, পেনসিল এবং দেশলাইয়ের কাঠি, শিশুদের লেখার জন্য স্লেট তৈরি করা হয়৷ এছাড়া এটি দিয়ে চামচ, কর্ক প্রভৃতি বানানো হয়৷