ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১, নভেম্বর ২০২৪ ১৫:১৬:৫৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে আজও অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

একুশে বইমেলা: আমাদের সবেধন নীলমণি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:২৬ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার

ছবি: উইমেননিউজ২৪.কম।

ছবি: উইমেননিউজ২৪.কম।

লেখক, পাঠক, প্রকাশক- বাংলাদেশে প্রায় সবার লক্ষ্য ফেব্রুয়ারি মাস৷ বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা ঘিরেই সব পরিকল্পনা৷ বই নিয়ে ভাবনা কেবল একটি মাসে সীমিত কেন?

আগের শতকের বাহাত্তরের ফেব্রুয়ারি মাসে একাডেমি প্রাঙ্গণে বটের তলে চট বিছিয়ে বই প্রদর্শন শুরু করেন প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহা৷ যেখানে একাত্তরে প্রতিষ্ঠিত তার প্রকাশনা মুক্তধারার ৩২টি বই উপস্থাপিত হয়৷ সেখানে এবারের বইমেলায় ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার একটি দিনেই প্রকাশিত নতুন বইয়ের সংখ্যা ৬৯টি৷

চিত্তরঞ্জন সাহার হাত ধরে যার সূচনা- যা সময়ের পরিক্রমায় বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা হিসেবে রূপ পায়, তার পরিসর যে দিনে দিনে বড় হয়েছে তা সংখ্যা আর জায়গা দিয়ে সহজেই মাপা যায়৷ গত কয়েক বছরে বইমেলা একাডেমির নিজের গণ্ডি ছাড়িয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছড়িয়ে গেছে৷ তাতে কমেনি পাঠকের ভিড়, বরং বেড়েছে৷ বেড়েছে প্রকাশক ও বইয়ের সংখ্যাও৷ এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে ৬৩৫ প্রতিষ্ঠান৷ যেখানে আগের বছর প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ছিলো ৬০১৷ গতবার বই বিক্রি হয়েছে ৪৭ কোটি টাকার৷ তার আগে তথা ২০২২ সালে টাকার অঙ্ক বেশি ছিলো, যার পরিমাণ ৫২ কোটি৷ তখন নতুন বই প্রকাশ হয় তিন হাজার ৪১৬টি৷ ২০২৩ সাল আবার সেই তুলনায় এগিয়ে, কারণ বইয়ের সংখ্যা ছিলো তিন হাজার ৭৫০৷

গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির সবচেয়ে ছোট্ট মাসে যদি সাড়ে তিন হাজারের বেশি সৃজনশীল-মননশীল বই বের হয়, তবে বছরের বাকি ১১ মাস প্রকাশিত বই সংখ্যা কত? এমন প্রশ্নে সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বইমেলাকে কেন্দ্র করেই ৮০-৯০ শতাংশ সৃজনশীল বই প্রকাশিত হয়৷ সারাবছর নতুন বই তেমন প্রকাশিত হয় না৷ তবে বইমেলা সামনে রেখেই সারাবছর ব্যস্ত থাকতে হয়৷ ফেব্রুয়ারিতে বইগুলো প্রথম মার্কেটিং করা হয়৷ তারপর সারাদেশে মার্কেটিং করা হয়৷'

তবে একুশে বইমেলায় প্রকাশকদের চেয়ে বেশি সুযোগ থাকে পাঠকদের জন্য- এমনটা মনে করছেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সবশেষ কমিটির সভাপতি ফরিদ আহমেদ৷ 

তিনি বলছেন, মেলায় কয়েক লাখ শিরোনামের বই একই সঙ্গে ঘুরে দেখতে পারেন পাঠক৷ কোনো দোকানে গিয়ে এতো বই দেখা বা পছন্দ করার সুযোগ থাকে না৷

শুধু প্রকাশক নন, অনেক লেখকও বইমেলা সামনে রেখেই লেখালেখি করেন৷ ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বই নিয়ে নানা প্রচারণায়ও দেখা যায় তাদের৷ এক্ষেত্রে সক্রিয় একজন লেখক তৌহিদুর রহমান৷ তিনি বলছেন, এখন অবধি তার ৪৫টি বই বের হয়েছে৷ এরমধ্যে একটি মাত্র বই প্রকাশিত হয়েছে বইমেলার বাইরে অন্য সময়ে৷ তার দাবি, বইয়ের প্রচারণার ক্ষেত্রে যে খরচ, সেটা প্রকাশক করে থাকেন৷ কিছু ক্ষেত্রে খরচ তিনিও বহন করেন৷

শুধু বইমেলা নয়, সারাবছরই সৃজনশীল-মননশীল বইয়ে চোখ রাখেন ঢাকার বাসিন্দা তানিয়া আক্তার৷ তিনি বলেন, বছরের অন্যান্য সময় বই কিনতে হলে আগে অনলাইনে খোঁজ করতে হয়৷ কিন্তু বইমেলায় একই সঙ্গে অনেক প্রকাশনা থাকে বলে সুবিধা হয়৷ এখন বেঙ্গল বই, বাতিঘরের মতো বিক্রয়কেন্দ্র হওয়ায় তেমন সুবিধা সারাবছর কিছুটা মিলছে বলে তিনি মনে করেন৷

বাংলা একাডেমি লক্ষ্যে আছে তো?
একুশে বইমেলার মাধ্যমে বই যাতে পাঠকের কাছে যায়, লেখক যাতে পাঠকের কাছে পরিচিত হতে পারেন- বইমেলা নিয়ে এই প্রত্যাশার কথা বললেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন৷ 

তবে তিনি বলছেন, বইমেলা সামনে রেখে আমি লেখালেখি করি না৷ আমি সারাবছর নিজের লেখালেখি ঠিকমতো করি৷ বই সারাবছর প্রকাশও হয়ে যায়৷

এদিকে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি নিজেই ওয়েবসাইটে লিখেছে, তাদের  প্রধান লক্ষ্য- বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা, প্রকাশনা ও অনুবাদের মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক জাতি গঠনে ভূমিকা রাখা৷ একুশে বইমেলা আয়োজন এক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখছে, জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন বলেন, মাতৃভাষার চর্চার ক্ষেত্রে পাঠকের হাতে লেখকের বই তুলে দিয়ে ভূমিকা রাখছে৷ বইমেলার আয়োজন নিয়ে ব্যস্ততায় একাডেমির অন্যান্য কাজে বিঘ্নিত হয় না বলে তিনি দাবি করেন৷