ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ৩:০৯:২৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সাময়িক বন্ধের পর খুললো যমুনা ফিউচার পার্ক ডেঙ্গুতে আরও ১০ জনের প্রাণ গেল ডেঙ্গুতে এ বছরেই ৫১ শিশুর প্রাণহানি মাকে হত্যা করে থানায় হাজির ছেলে আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু ঢাকায় আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারী

আসমা আলমগীর | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০৮ পিএম, ২১ জুন ২০১৯ শুক্রবার

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারী। নানা ক্ষেত্রে তারা রেখে চলেছে অবদান। পেশাগত দক্ষতার ফলে আয় করে স্বনির্ভর হচ্ছে তারা। সংসারে অবদান রাখছে। ভূমিকা রাখছে দেশের অর্থনীতিতে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জয়িতা ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে নারীর ক্ষমতায়নে।

এই সংস্থা থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নিজেদের মেলে ধরছেন নারীরা। হচ্ছেন সাবলম্বী, পরিবারে রেখে চলেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ভূমিকা রাখছেন সিদ্ধান্ত গ্রহণে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে এখন নারী শুধু ঘরে নয়, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়েও নিজের মহাত্ম উড়িয়ে চলেছেন তারা। সরকারের নানা প্রকল্পের জন্যই তা সম্ভব হয়েছে।

জানা যায়, নারীর ক্ষমতায়নে জয়িতা ফাউন্ডেশনের অধীন ১৮০টি সমিতির মাধ্যমে দেশজুড়ে তৃণমূল পর্যায়ের ১৪ হাজার ৯৬০ জন নারী উদ্যোক্তার পণ্য বাজারজাতকরণে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে নিজেদের উৎপাদিত কুটির শিল্পের নানা পণ্য বিক্রি করতে পারছেন তারা।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীন নিবন্ধিত মহিলা সমিতিভুক্ত দরিদ্র মহিলা এবং দুঃস্থ ও অসহায় মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের তৈরি পৈাশাক/পণ্য সামগ্রী বিক্রয় করা হচ্ছে। রাজস্ব বাজেটের আওতায় অধিদপ্তরের সদর কার্যালয়ে বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র ‘অঙ্গনা’ পরিচালিত হচ্ছে।

আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের আওতায় ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৬৫০জন নারীকে ৪৩ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা বিতরণ করেছে সরকার।

এছাড়া মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়া মায়েদের জন্য ‘স্বপ্ন প্যাকেজ’ কর্মসূচির আওতায় ৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি জেলার ১০টি উপজেলায় ৭০০ জন উপকারভোগী মায়ের স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানাসহ আবাসনের ব্যবস্থা করেছে সরকার।

এ প্রকল্পের উপকারভোগী ময়মনসিংহের নাছিমা বেগম বলেন, সরকার আমাগোর ল্যাট্রিন বানায়া দিছে। বানায়া দিয়েছে ঘর। আগে আমরা ছাপড়া ঘরে থাকতাম। ব্যবহার করতাম বেড়ার ল্যাট্রিন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের আয়বর্ধক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় নিবন্ধিত মহিলা সমিতিসমূহে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত ৩৯ কোটি ৪৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে দুঃস্থ অসহায় নারীদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৭৪৩ টি। দুঃস্থ ও শিশু কল্যাণ তহবিল থেকে ৯৩৪ জনকে ১ কোটি ৫২ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণাদানের জন্য ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ কর্মসূচির মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৫টি ক্যাটাগরিতে উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মাননা পেয়েছেন নির্বাচিত ১৮৫জন নারী। যারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে সমাজের কল্যাণে অবদান রেখে চলেছেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদফতর সূত্র জানায়, নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং শিক্ষা, সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণেও উদ্যোগ নিয়েছে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার। এই উদ্যোগের আওতায় ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ১৬ জন নারীকে ‘বেগম রোকেয়া পদক’ দেওয়া হয়েছে।

স্বল্প ব্যয়ে আবাসন সুবিধা দিতে কর্মজীবী নারীদের জন্য ঢাকা শহরে ৪টি, রাজশাহী, খুলনা, যশোর এবং চট্টগ্রামে ১টি করে মোট ৮টি কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল চালানো হচ্ছে। এসব হোস্টেলে আসন সংখ্যা রয়েছে ১ হাজার ৬০৬টি।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, শুধু তাই নয়, গার্মেন্টসে কর্মরত নারীদের স্বল্প ব্যয়ে আবাসন সুবিধা দিতে বড় আশুলিয়া, সাভার, ঢাকায় ৭৪৪ আসনের একটি ১২তলা হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের জন্য রয়েছে দিবাযতœ কেন্দ্র।

এছাড়া কর্মজীবী মায়ের সন্তানদের জন্য ঢাকা শহরে ২৫টি, বিভাগীয় শহরে ৫টি এবং জেলা শহরে ১৩টিসহ মোট ৪৩টি ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করা হয়েছে। ফলে সন্তানদের জন্য দুঃশ্চিন্তা ছাড়াই কর্মস্থলে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারছেন মায়েরা।

‘গার্মেন্টসে কর্মরত নারীদের সন্তানের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে ১৫টি ডে-কেয়ার সেন্টার চালু রয়েছে। যেখানে প্রতিটির আসন সংখ্যা ৩০টি,’ বলেন তিনি।

এ বিষেয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার বলেন, নারীর উন্নয়নে সরকার নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নারী নীতি, ডমেস্টিক ভায়োলেন্স আইন, নারী উন্নয়ন বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা, ডিএনএ আইনসহ অনেক আইন প্রণয়ন করছে।

নারীর দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ: নারীর উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার ৩৩ কোটি ৪৩ লাখ নারীকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। যাতে তারা নিজেদের দক্ষ করে স্বাবলম্বী ও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।

জাতীয় মহিলা প্রশিক্ষণ একাডেমি থেকে ১ কোটি ৮৪ হাজার নারী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং আবাসিক ও অনাবাসিক বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আত্ম-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সেলাই ও এমব্রয়ডারি, ব্লক-বাটিক, চামড়াজাত শিল্প এবং খাদ্য প্রস্তুত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অনগ্রসর, বেকার মহিলারা।

সচিব কামরুন নাহার বলেন, দেশের ২ কোটি নারীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্ষমতায়িত করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। নির্যাতিত নারীদের সহায়তায় চালু করা হয়েছে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার।