ঢাকা, রবিবার ১৭, নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৬:৫৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বাহাত্তরেও সুরের জাদু ছড়াচ্ছেন রুনা লায়লা ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট লাফিয়ে বাড়া স্বর্ণের দামে হঠাৎ পতন, জানা গেল কারণ বাড়ছে শীতের প্রকোপ, ১৬ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নারীসহ দগ্ধ ৪ মওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কিটো-ডায়েট হতে পারে যে ৭ মারণব্যাধির কারণ

লাইফস্টাইল ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:২৮ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২১ শুক্রবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

ইদানীং দ্রুত ওজন কমানোর উদ্দেশে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন  কিটো-ডায়েট পদ্ধতি। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এই ডায়েট মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।

কিটো গ্রিক শব্দ ‘কিটোল’ থেকে এসেছে। কিটো এসিভোসিস হলো দেহে কিটোন পদার্থ জমাট বাঁধার ফলে অম্লব্যাধি তৈরি হওয়া। এপিলেপসি বা মৃগীরোগীদের চিকিৎসায় কিটোজেনিক ডায়েট ব্যবহার করা হয়।

এতে থাকে কম শর্করা ও উচ্চমাত্রার প্রোটিন, উচ্চমাত্রার চর্বি। মৃগীরোগীদের শরীরে কিটোজেনেসিস হয়, যেন ফ্যাটি অ্যাসিড জারণে বিঘ্ন ঘটে। কিটোজেনিক ডায়েটের ফলে মৃগীরোগীদেরও ওজন কমে যেতে দেখা যায়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, হালে এই ডায়েটই ওজন কমানোর জন্য সঠিক পথ বলে কেউ কেউ মনে করছেন।

ওয়াশিংটন ডিসির ‘ফিজিসিয়ানস কমিটি ফর রেসপন্সিবল মেডিসিন’-এর ‘নিউট্রিশন এডুকেশন ম্যানেজার’ ও পুষ্টিবিদ লি ক্রসবি সম্প্রতি এই ‘কিটো ডায়েট’ নিয়ে বিশ্লেষণমূলক গবেষণা করেছেন।

‘ফ্রন্টিয়ারস অফ নিউট্রিশন’ শীর্ষক সাময়িকীতে তার সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি ওই খাদ্যাভ্যাসকে বিপদজনক আখ্যা দিয়ে দাবি করেছেন, ‘কিটো ডায়েট’-এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সাতটি প্রাণঘাতী রোগ। এর মধ্যে কয়েকটি আবার ওই খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে নিরাময় করে বলে ধারণা করে সাধারণ মানুষ।

বেস্টলাইফ ডটকম’-এ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ‘কিটোজেনিক ডায়েট’-এ ‘কার্বোহাইড্রেইট’ বন্ধ করে দেওয়া হয় পুরোপুরি। আর বাড়ানো হয় স্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়ার মাত্রা, সঙ্গে থাকে মাঝারি পরিমাণের প্রোটিন।

যারা এই খাদ্যাভ্যাসের আদর্শ অনুসারী তারা খাওয়ার সময় নির্দিষ্ট করে রাখেন যাতে শরীরে ‘কিটোসিস’ অবস্থা তৈরি হয়। এই খাদ্যাভ্যাসের প্রবর্তনকারীদের মতে, ‘কিটোসিস’ মানে হল শরীরে ‘কিটোন বডি’ তৈরি হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করা। মস্তিষ্কের ‘নিউরন’ ও অন্যান্য যেসব কোষ সরাসরি ফ্যাটি অ্যাসিড ব্যবহার করতে পারে না তাদের জন্য জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে এই ‘কিটোন বডি’।

ক্রসবি ও তার দলের দাবি, কিটো ডায়েটের কিছু পদ্ধতি দাবি করে সেগুলো ক্যান্সার, ‘আলৎঝাইমার’স ডিজিজ’, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।তবে তাদের গবেষণায় দেখা গেছে এই খাদ্যাভ্যাসের একমাত্র উপকারিতা, যার পেছেনে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে, তা হল এটি ‘এপিলেপ্সি’র চিকিৎসায় ব্যবহারযোগ্য। বরং ‘কিটো ডায়েট’ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও ‘আলৎঝাইমার’স ডিজিজ’য়ের ঝুঁকি বাড়ায়।

অনেকের শরীরেই এই খাদ্যাভ্যাস অনুসরণের কারণে রক্তে কোলেস্টেরল বাড়তে দেখা গেছে। যাদের বৃক্কের দুর্বলতা আছে তাদের বৃক্ক একেবারে অকেজো হয়ে যেতে পারে।

এছাড়া গর্ভবতী মা এই খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে শরীরে ‘কার্বোহাইড্রেইট’-এর অভাবের কারণে নবজাতকের ‘নিউরাল লোব’ অপরিণত থেকে যেতে পারে। তাই সবমিলিয়ে ‘কিটো ডায়েট’ আসলে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি বর্ধক স্বাস্থ্যের জন্য ধ্বংসাত্মক একটি খাদ্যাভ্যাস। 

১৯৯৯ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ২৪, ৮২৫ জনের উপর যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ স্ট্যাটিসটিকস পরিচালিত একটি জরিপ গবেষণায় দেখা গেছে, এদের মধ্যে কম শর্করা গ্রহণকারীদের হার্ট অ্যাটাক ও অন্যান্য হৃদরোগ, ব্রেইন স্ট্রোক এবং ক্যানসারে মৃত্যুর আশঙ্কা যথাক্রমে ৫১, ৫০ ও ৩৫ শতাংশ বেশি! 

২০২০ সালে কিটো ডায়েটের কারণে কিডনি জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলিউড অভিনেত্রী মিষ্টি মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি আমাদের দেশে আজওয়াদ আহনাফ করিম সামিন নামের এক স্কুলছাত্রের  মৃত্যুর জন্যেও দায়ী করা হচ্ছে কিটোকে।

এ-সব কারণে দেশ-বিদেশের স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা এখন কিটোর ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে সরব হয়েছেন। আমেরিকার পুষ্টিবিদ ও ডায়েটেশিয়ানদের মাঝে পরিচালিত এক জরিপে ২০২০ সালের নিকৃষ্টতম ডায়েট নির্বাচিত হয় কিটো।

ওজন নিয়ন্ত্রণের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি হলো দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের হিসাব রাখা। খাদ্যাভ্যাসে বিভিন্ন ধরনের খাবার থাকতে হবে। ফল, সবজি, লতা, পরিপূর্ণ শস্য, মাংস সবকিছুই শরীরের জন্য জরুরি। তাই পরিমাণ মতো সবই খেতে হবে।

মনে রাখবেন, কোনো ডায়েট শুরু করতে হবে সরাসরি চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে। কারো ইউটিউব ভিডিও দেখে বা ব্লগ পড়ে নয়।