ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১, নভেম্বর ২০২৪ ১২:২৭:০২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে আজও অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

কিশোর লেখা: সাত ছড়াকারের সাতটি ছড়া

কিশোর লেখা ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:৪৯ পিএম, ১ নভেম্বর ২০২৪ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

ছড়া বাংলা সাহিত্যের একটি আদি এবং জনপ্রিয় মাধ্যম। ছোট-বড় সকলের কাছে ছড়া অত্যন্ত প্রিয়। ছোটরা তো মুখে মুখে ছড়া কাটতে পছন্দ করেই, বড়রাও কম যায় না। আমাদের পাঠকদের কথা চিন্তা করে আমরা আজ দেশবরেণ্য সাতজন ছড়াসাহিত্যিকের নানা সাধের সাতটি ছড়া প্রকাশ করলাম। আমাদের প্রত্যাশা বিভিন্ন বয়সী ছড়াপ্রেমীদের ছড়াগুলো ভালো লাগবে।

শরৎ আসে ছড়িয়ে হাসি
ফা রু ক  ন ও য়া জ 

শিউলি যখন 
        ছড়িয়ে থাকে 
               শিশিরঝরা ভোরের ঘাসে
গগনশিরিষ 
        উঁচিয়ে মাথা 
               আকাশমুখো তাকিয়ে হাসে
পুন শেফালি 
        জারুল বকুল 
                 জুঁই কেতকী সুবাস ছড়ায়
পান্থপাদপ 
        পদ্ম শালুক 
             মিঞ্জিরিরা চোখ তুলে চায়
ভাববে তখন 
         শরৎ এলো 
              ঋতুর রানী বাংলাদেশের
মনকাড়া মেঘ 
         মেঘের জাদু 
              রূপের খেলা বর্ষাশেষের।

শরৎ মানেই 
      হঠাৎ দেয়া
            হঠাৎ রোদের ঝিলমিলানি
হঠাৎ সাঁকো 
      রংধনুকের
            ইলিকঝিলিক ঝিলের পানি
আঁকনবাঁকন 
      ছোট্ট নদীর 
           পারটি ঘেঁষে কাশের দোলা
শুভ্র মেঘের 
     পালতোলা নাও 
           আকাশ যেন হৃদয়খোলা--

এমন যখন 
      হঠাৎ তখন 
            রথখোলাতে টাকডুমাডুম
বাজল ঢোলক
       ঝাঁঝর সানাই 
              পুজোর খুশি কাড়ল যে ঘুম।
ঘুম কেড়ে নেয় 
        ঝিঁঝির বাঁশি
             সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালায় জুনি
দূরের বনের
       হুতুম পেঁচার
             হুমহুমানি ডাকটি শুনি
ইপিলঝোপে 
       উছলে পড়ে 
             পূর্ণ শশির আলোকরাশি
এমন হলে 
      বুঝতে হবে 
            শরৎ এলো ছড়িয়ে হাসি।
---


ঢাক কু না কুর, না কুর না কুর
মিহির কান্তি রাউত

ঢাক কু না কুর, না কুর না কুর 
ঢাক্কে ওঠে দোল ;
ঢাকের তালে শরৎ কালে
দুগ্গা মাকি বোল।

ঢাক কু না কুর, না কুর না কুর
ঢাক্কে বাজে সুর;
ঢাকির ঢোলে মনটা দোলে
ছোটে অচিনপুর।

ঢাক কু না কুর, না কুর না কুর
ঢাক্কে ভরা তাল;
তালের তালে আবির ঢালে
রঙে রাঙে গাল ।

ঢাক কু না কুর, না কুর না কুর
হাসি খুশির ধুম;
পূজার দিনে কারণ বিনে
পালায় চোখের ঘুম ।

ঢাক কু না কুর, না কুর না কুর
দুগ্গা মায়ের জয়;
পূজার ক্ষণে ভাবনা মনে 
অসুরেরই ক্ষয়।

---

সোনাবু, আমি এবং কাশবালা 
আ ন ও য়া রু ল  ক বী র  বু লু

সোনাবুবু'র ওই হাসিতে মুক্তো রাশিরাশি
দুধকুমারীর দু'পাড়ে আজ কাশবালাদের হাসি। 

সুখ-আনন্দে কাশমেয়েরা পড়ছে হেলেদুলে 
আচম্বিতে সোনার বুবু দিলো খোঁপা খুলে
বাওরি বাতাস দোল খেয়ে যায় বুবুর দীঘল চুলে!

উচ্ছ্বলতায় লাফিয়ে উঠি.আমার বাজিমাত 
ধমকে যেনো বুবু আমার.. জড়িয়ে ধরে হাত।

ওই আকাশে মেঘের ভেলা.. হায় দিগন্তছোঁয়া
ইটের ভাটায় কুন্ডলিতে উড়ছে কালো ধোঁয়া
বুবু  বলে- বেলাশেষে.. নামছে আঁধার- ধীরে
পাখিরা তো- ক্লান্ত হয়ে ফিরছে আপন নীড়ে

কাজলপরা বুবুর দু চোখ.. কপালে নীল টিপ   
বুবু বলে.. ওই  যে দূরে.. আছে  নিঝুম  দ্বীপ 
'জলদি চল. মাটির ঘরে জ্বালবো সুখের প্রদীপ'।    

---


হয়তো ছড়া প্রজাপতি
রোকেয়া খাতুন রুবী

মন মাতানো প্রজাপতি
রংবতী সে রঙিন
উতল ঝড়ে মাতাল হাওয়া
হয় যদি হয় সঙ্গিন ।
প্রজাপতি ফুলের বনে
গাছের ডালে পাতার সনে,
দিব্বি মিশে যায়,
ছড়াতো নয়, ছড়ানো বেগ
ঝড় কি ছুঁতে পায়?

প্রজাপতি প্রজাপতি
ছন্দ মাখা ছড়ার গতি 
রোদের বাতির ঝাড়, 
তোমার সঙ্গে ছড়া পেরোয়
বিশাল নদীর পাড়।
 
নদীর পাড়ে ঘাসের মায়া
নাম না জানা গাছের ছায়া
রোদ ঝিকমিক বালি,
প্রজাপতি উড়ছে হাওয়ায়
সংগে ছড়ার ডালি।
ধুলো বালি নরোম কাদা
বকের ডানায় মেঘের সাদা
ঝরনা জলে ছন্দ বাজা নুপুর,
বিকেলটাকে কাছে পেলে
মিলমিশ হয় দুপুর।

এখান থেকে সেখানে যায়
নিত্য নতুন খবরটা পায়
দূর অসীমের পানে,
আমার ছড়া প্রজাপতি
ছুটতে থাকে অতল মায়ায়
নিজের রচা গানে।

---
 

থাকতে হবে সতর্কে
ইকবাল বাবুল

ভুল করেছেন যাননি তিনি 
সাপটি মেরে
সাপটি ছিলো ঘরের ভেতর
ঘাপটি মেরে
সাপটি হঠাৎ তুললো ফণা
আচমকায়
ব্যাপার দেখে কার না তবে
গা চমকায় ? 
সাপটি নাকি খুব ভয়ানক
বিষধর
সব চেনা তার কী অন্দর
কী সদর
তাই যদি কেউ চাও বাঁচাতে
গতরকে
থাকতে হবে জাগ্রত আর
সতর্কে।

---

কাটাবাড়িয়া
জাহাঙ্গীর আলম জাহান

এই সেই ঘরবাড়ি, এই সেই গ্রাম
এই গ্রামে আমরাও জন্মেছিলাম
এই সেই বটতলা, এই সেই মাঠ
বৈশাখী উৎসবও জমতো বিরাট।

এই বাড়ি সেই বাড়ি নেই বাড়ি আর
এই ঘরে থাকতেন আমাদের স্যার
অংকের সেই স্যার বেঁচে নেই আজ
মনে পড়ে স্যারদের কঠিন মেজাজ।

এই সেই তালগাছ, এই ঘন বন
বাঁশঝাড়ে বায়ু বয় আজও শনশন
ভাস্করখিলা নামে এই সেই বিল
বিনোদ বাবুর দিঘি করে ঝিলমিল।

এই সেই আলপথ, এই পোড়োবাড়ি
মন জুড়ে স্মৃতিকথা জাগে বারোয়ারি।
একজন বারী খান ছিল বীর সেনা
তার কথা কোনোদিন কেউ ভুলবে না।

এই সেই হাইওয়ে, এই বড়পুল
এইখানে এই মন আকুল-ব্যাকুল
এই পুল শহিদের স্মৃতিময় ধাম
মনে পড়ে স্বাধীনতা আর সংগ্রাম।

এই সেই বলাদিঘি, এ দিঘির জল
সেইকালে মনটাকে করতো শীতল
এই কাটাবাড়িয়াই আমাদের গ্রাম
এইখানে শৈশব আজও উদ্দাম।

---


কিশোর লেখা
গোলাম নবী পান্না

কিশোরের ভাবনাটা
তুলে ধরা চাই
ভাবনার কথাগুলো
দিতে হবে ঠাঁই।

এমন এ স্বপ্নের
রাজ্যটা তাই---
'কিশোর লেখা'তে এর
ঢের খুঁজে পাই।

নানামুখি বিষয়েই
তাই লিখে যাই
ছন্দ ও উপমায়
স্বপ্ন কুড়াই।

---০---

ছড়াগুলো ছোটদের প্রিয় পত্রিকা কিশোর লেখার অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বর-২০২৪ সংখ্যায় প্রকাশিত।