ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ৬:৫৮:৫২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সাময়িক বন্ধের পর খুললো যমুনা ফিউচার পার্ক ডেঙ্গুতে আরও ১০ জনের প্রাণ গেল ডেঙ্গুতে এ বছরেই ৫১ শিশুর প্রাণহানি মাকে হত্যা করে থানায় হাজির ছেলে আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু ঢাকায় আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা

কেরালায় নারী-শিশুসহ ৩৫০-র বেশি মৃত

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০১:০৯ এএম, ২৯ আগস্ট ২০১৮ বুধবার

ভারতের কেরালার বিধ্বংসী বন্যা কেড়ে নিয়েছে নারী ও শিশুসহ ৩৫০-র বেশি প্রাণ। সাড়ে তিন হাজার ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ৷ এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী কারণে ভারত বিদেশি অনুদান সরাসরি নাকোচ করছে? একের পর এক বিদেশি অনুদান ফেরাচ্ছে মোদী সরকার৷ এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে৷ উত্তরের খোঁজে উঠে আসছে বেশ কিছু তথ্য।

 

আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিকাঠামোয় ভারত নিজেকে কোনওভাবে দুর্বল প্রমাণ করতে চায় না৷ তাই বিদেশ মন্ত্রনালয় সূত্রে ঘোষণা, দেশীয় অর্থেই বন্যা কবলিত কেরালাকে নতুন রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি। তবে, বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় বা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের প্রেরিত আর্থিক সাহায্য গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে তারা৷

 

এদিকে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী-২০০৫ সালে ক্যাটরিনা হারিকেনে বিধ্বস্ত আমেরিকা ভেনেজুয়ালা, কাতার থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়েছিল৷ সেই সময় ভারতও ২৫ টন ত্রাণ সামগ্রী আমেরিকাকে পাঠায়৷ ফলে বর্তমান ভারতের এমন সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি আমেরিকাও এদেশের থেকে আর্থিক খাতে পিছিয়ে পড়ছে? কারণ জাতীয় বিপর্যয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। কিন্তু দরিদ্র দেশগুলি থেকেই সাহায্য নিয়েছিল কয়েক বছর আগে ৷ তাহলে ভারত নয় কেন? কেন্দ্রের দাবি, প্রয়োজন নেই তাই অনুদান নেয়া হবে না৷ ভারত বিপর্যয় মোকাবিলায় একাই লড়বে৷

 

 


এক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে আরও একটি বিষয়, চলতি বছরেই পার্লামেন্টে বিদেশি অনুদান সংক্রান্ত একটি বিল পাশ হয়৷ যেখানে, রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে বিদেশি অনুদান স্বাগত জানাতে পারছে৷ ২০১০ সালে এই ‘ফরেন কনট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট’নিষিদ্ধ করা হয়৷ ২০১৮ সালে সেই অ্যাক্টের সংশোধিত বিল পাশ হয়৷ প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক দল নিজেদের প্রয়োজনে বিদেশি অনুদান নিতে পারবে, অথচ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিদেশি অনুদান নিলেই দেশের সম্মানহানি হবে?

 

এই বিপর্যয়ের ফলে জট বাড়ছে National Disaster Management Plan (NDMP)-র ব্যখ্যা ঘিরেও৷ ২০১৬ সালের মে মাসের মোদি শাসিত সরকারই এই পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিয়েছিল৷ যেখানে বলা হয়েছে, বড়সড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে ভারতের অবশ্যই বিদেশি অনুদান গ্রহণ করা উচিত৷ কারণ, অনুদান গ্রহণ আন্তর্জাতিক সম্পর্ককেও মজবুত করে৷ ২০০৫ সালে সুনামির ধকল সামলানোর পরেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিদেশি অনুদান নিষিদ্ধ করে মনমোহন সিংয়ের সরকার৷ সেই নিয়মকে খারিজ করেই নতুন ভাবে পরিকল্পনা গঠন করে NDMP৷ এখন সেই পরিকল্পনাকেই মানছে না কেন্দ্র৷ বাম শাসিত কেরল বলেই কী এই অনিহা বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদী সরকারের? উঠছে প্রশ্ন নানা মহলে৷

 

এই প্রশ্ন নিয়ে ব্যখ্যা করতে গিয়ে লক্ষ্য করা গিয়েছে, কেরলে বন্যা দুর্গতদের জন্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য করার কথা বলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭০০ কোটি। যেখান খোদ কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে ৬০০ কোটি টাকা৷ এছাড়াও কাতারের পক্ষ থেকে ৩৫ কোটি এবং মালদ্বীপের পক্ষ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা সাহায্য করার ঘোষণা করা হয়। কেরলের সঙ্গে আরবের সুসম্পর্ক অজানা নয়৷ তাই অনুদান ঘোষণার পরই কেরল মুখ্যমন্ত্রী আরবকে স্বাগত জানায়৷ ঠিক তখনই আবার নিয়মবিধির ধূয়ো তুলে বাঁধ সাধছে কেন্দ্র৷ ফলে বিতর্ক দানা বাঁধছে, কোনওভাবে কি কেরলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ মোদি প্রশাসন?

 

এই জটিল পরিস্থিতিতে দেখা গেছে–ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইউএই-র রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, কেরালাকে অনুদান খাতে ৭০০ কোটি টাকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছিল আরব আমিরশাহী। কিন্তু এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ঘোষণা হয়নি৷ আরবের হঠাৎ এই বক্তব্যে কিছুটা হলেও ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভারতের অনুদান ফেরতের মনোভাবে প্রভাবিত হয়েছে ইউএই-র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত৷ যা দেশের আন্তর্জাতিক একতার বার্তাকে পদ দলিত করছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ কারণ, ভারত নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান, ইরানকেও বিভিন্ন খাতে অনুদান দিয়ে থাকে৷ সেখানে দেশের এতবড় বিপর্যয়ে কেন্দ্রের বিদেশি অনুদান গ্রহণে নেতিবাচক মনোভাব পারস্পরিক সম্পর্ক নড়বড়ে করে দেবে না তো?