ক্রেতার প্রতি আড়ংয়ের দায়বদ্ধতা
জান্নাতুল ফেরদৌস আইভী | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:৫৮ এএম, ১৬ জুন ২০১৯ রবিবার
জান্নাতুল ফেরদৌস আইভী
প্রতি বছরের মত এবছরও রোজার মাসে ভোক্তা অধিকারের প্রতি প্রশাসনের উদ্যোগ যখন শুরু হয় তখন প্রথম দিকে হয়তো বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব বেশি আগ্রহ প্রকাশ করিনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে অন্তত করিনি। কারণ এর বেশির ভাগ উদ্যোগকে আমার অহেতুক লোকদেখানো অথবা মিডিয়াতে পরিচিত পাওয়ার একটা কৌশল বলে মনে হয়। সত্যিকারের সততা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাল চিন্তা করার জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে মনে হয় না।
তবে এবছর ভোক্তা অধিকারের বিষয়ে আমরা অনেকটা আস্থা রাখতে শুরু করি যখন দেশের নামী এবং ব্যয়বহুল বিউটি পার্লারের অসততা আমাদের সামনে প্রকাশ পায় প্রশাসনের উদ্যোগে। এবং সেই একই সময়ে আড়ংয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাতে প্রথমে আমি অনেকটা খুশি হয়েছি অনেকগুলো কারণে গত দশ বছরে আড়ংয়ের পোশাকের দাম এতটাই বেড়েছে যে সাধারণ একটা পোশাকের দাম দশ বছর আগে যেখানে ছিল সতের বা আঠারো শত টাকা বর্তমানে তেমন মানের একটা পোশাকের দাম হয়েছে পাঁচ হাজার টাকার কাছাকাছি। আড়ংয়ের নিজেদের কর্মীদের বেতন কাঠামো কি এতটা বেড়েছে যে ওদের তৈরি পোশাকের দাম এতটা বাড়িয়েছে ওরা? ওদের নিজেদের কর্মীরা কি এসব পোশাক কেনার সামর্থ্য রাখে? যদি না রাখে তাহলে দিনে দিনে দামের এমন ঊর্ধ্বগতি আড়ং কর্তৃপক্ষ কি মনে করে করছিল অথচ সেই হিসেবে পোশাকের মান নিশ্চিত করেনি আড়ং কর্তৃপক্ষ, এমন অনেক অভিযোগ ছিল আমার নিজেরও।
প্রশাসনের এই অভিযানের কারণে এমন জবাবদিহিতার কথা ভাববে আড়ং কর্তৃপক্ষ এমন আশা আমার মনে সৃষ্টি হয়েছিল। শুধু এটাই নয়, আমার আশার মাত্রা আরও একধাপ বেড়েছে যে আড়ং যদি ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে শুরু করে তবে তার দেখাদেখি অন্যান্য দেশীয় বুটিক প্রতিষ্ঠানগুলোও সতর্ক হবে ও মান এবং দামের মাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে দেশের ভোক্তা জনগণের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দামের মান নিশ্চিত করবে। আমার এমন আশা করার কারণে আমি প্রথম দিকে বেশ খুশি হয়েছিলাম যে দেশের প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যে প্রশাসন এ বিষয়টি নজরে এনেছে। যে কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান যারাই হোক তাদের অন্যায় প্রমাণিত হলে তাকে সংশোধন করার জন্য শাস্তি অবধারিত। কাজেই এবছরের ঈদে আড়ং থেকে সব রকম কেনাকাটা করা থেকে আমি নিজেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স্ব-ইচ্ছায়।
আড়ংয়ের ভোক্তা অধিকার অভিযানের বিষয়কে কেন্দ্র করে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবছর ঈদের সময় কালজুড়ে ঘটল। আমি প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের আলোচনায় যাব না। আমার আলোচনা আড়ংকে ঘিরেই। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের কল্যাণে আমরা বাইরে বেরিয়ে রাস্তায় গিয়ে কোন প্রতিবাদে অংশ না নিলেও আজকাল আমরা একটা প্রতিবাদের অথবা আন্দোলনের অংশ হয়ে উঠি সহজেই। তবে এবছর ঈদের আগের দিন থেকে শুরু করে আমার চোখের অসুস্থতা থাকায় আমি এসব আন্দোলনের খবর খুব বেশি রাখিনি। ঈদ শেষ হয়ে যাবার পরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন দেখছি আড়ং বিষয়ে আড়ংয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে কটাক্ষ করে উক্তি করছেন অনেক পরিচিতজনেরা যারা মূলত যে কোন বিষয়ে সমালোচনা করতেই বেশি ভালবাসেন। এধরণের কটাক্ষের মন্তব্য পড়তে পড়তে আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল সবাই এ বিষয়ের অবসান চান কেমন করে?
এক শ্রেণীর আলোচকদের কথায় মনে হচ্ছে তারা চান যেন আড়ংয়ের অস্তিত্ব না থাকে মানে আড়ং বন্ধ হয়ে গেলেই বোধ হয় ওনারা বেশি খুশি হবেন। আমি তাদের মন্তব্যে শঙ্কিত। আমি আড়ংএর পোশাকের মান নিশ্চয়তা চাই এবং সঙ্গে সঙ্গে আমি আড়ংয়ে রপোশাক পরতে গর্ব অনুভব করি।যখনই দেশের বাইরের কোন মিটিংইয়ে যাই অথবা দেশের ভেতরেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোন মিটিংয়ে অংশ নেই, আড়ং আমার দেশীয় পণ্য বলে এসব পোশাক পরতে যেমন গর্ব অনুভব করি।
পাশাপাশি আমি একজন আগুনে পোড়া ব্যক্তি হিসেবে সূতি পোশাক পরার যে সুস্থতার অনুভূতি আমাকে সবার আগে ভাবতে হয়, আমি আড়ংএর পোশাক পরে তেমন সুস্থ অনুভব করি। সেই সঙ্গে আড়ং একটি এনজিও এর পরিচালনার প্রতিষ্ঠান বলে ব্যক্তিগত পছন্দের তালিকায় আমি আড়ংয়ের একনিষ্ঠ অনুরাগী। আমার এই অনুভূতিগুলোর কারণে আমি আড়ংয়ের সম্পর্কে কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করতে চাই।
যদি পেছনে ফিরে দেখি তাহলে মনে পড়ছে আমি যখন কলেজজীবন শুরু করেছিলাম তখন থেকে আড়ংয়ের পরচিতি আমার জীবনে সেটা ১৯৯৪/৯৫ সালের দিকের কথা হবে। আমরা খুলনায় থাকতাম। আমার স্কুল/কলেজ জীবনে রবয়সের উৎসবের পোশাক ছিল খুলনা নিউমার্কেট থেকে কেনা ইন্ডিয়ান থ্রিপিস। সে সময় বধুদের কেউ ঢাকাতে বেড়াতে এলে তাদের কেউ কেউ হয়তো আড়ংয়ের পোশাক কিনতো। খুব সরল ভাষায় বলবো আমার সেই সময় পর্যন্ত একটাও আড়ংয়ের পোশাক ছিল না। এরপর আমার দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
বেশ কয়েক বছর আমি স্বাভাবিক কোন জামা পরতেও পারতাম না, কাজেই এমন সব নামী/দামী পোশাক সবই আমার কাছে অর্থহীন ছিল তখন। আমি যখন অনেকটা সুস্থ হলাম, এমএ পড়ছিলাম তখন বোধ হয় প্রথম আড়ংয়ের পোশাক কিনেছিলাম ২০০৩/০৪ এর দিকে। এরপর যখন চাকুরী করতে শুরু করি তখন থেকে বছরে এক বা দুইটা পোশাক কিনেছি অনেক শখের থেকে। গত প্রায় বার বছর হবে এই পোশাকের সঙ্গে আমার পরিচয়। আমার অভিজ্ঞতায় আমি কখনই নিম্নমানের পোশাক পাইনি। বরং সে সব পোশাক পুরনো হতো না বলে বিরক্ত হয়েছি যে একই পোশাক কতবার পরবো? একারণে সেসব পোশাক আমি অন্যদের দিয়ে দিয়েছি। তবে আড়ং প্রতিনিয়ত দাম বাড়িয়েছে এটা আমার স্পষ্ট মতামত।
আমি নিজে পোশাক তৈরি করতে পারি। এবং আমি পোশাকের এমব্রয়ডারি এবং নকশার বেশির ভাগ করতে পারি। এককভাবে একটি পোশাক তৈরির জন্য যে খরচ হয়, সেই একই ডিজাইনের অনেকগুলো পোশাক একসংগে তৈরি করলে খরচ অনেক কম হয়। আমরা বুঝিযে কর্মীর বেতন এবং শোরুমের যাবতীয় অন্যআন্য খরচও একটি পোশাকের দামের মধ্যে সংযুক্ত থাকে। তবে সব কিছুর পরেও আড়ং যেহেতু একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান এখানকার পোশাকের দাম এতোটা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া কোনভাবেই যুক্তিসংগত নয়।
আড়ং আমাদের দেশের প্রথম একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে এই দেশের নারীরা তাঁদের সাধারণ যে হাতের সেলাইয়ের গুণ তা কাজ লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অংশ হয়েছে। যদি আড়ংয়ের সাফল্য আমরা শিকার করতে না চাই, তাহলে সরকারী এমন কোন প্রতিষ্ঠানের নাম কি আমরা উল্লেখ করতে পারব যেখানে শিক্ষিত অথবা অশিক্ষিত নারীরা ঘরে বসে তাঁদের হাতের কাজের মাধ্যমে উপার্জন করেছে তাঁর জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনও প্রতিষ্ঠান এমন নারীদের কাজ দিয়েছে? আমার জানা মতে নেই। বরং নারীদের যে গুণ কেবল পরিবারের নিজস্ব পণ্যের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ ছিল সেই গুণকে আড়ং উদ্যোগ নিয়ে একটি পরিবারকে অর্থনৈতিকউন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করেছে। একইসঙ্গে ধিরে ধিরে তা একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এমন উদাহরণ সারা বিশ্বে হয়তো একটিই প্রতিষ্ঠান তা হল “আড়ং”। কাজেই আড়ং বন্ধ হয়ে যাক এমন একটা প্রতিহিংসা কি কোনভাবেই দেশের জন্য সম্মানজনক একটি চাওয়া হতে পারে? আমারতো মনে হয় না হতে পারেনা। তবে কেন এই প্রতিহিংসার কটুক্তি?
দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেরই উৎপাদিত পণ্যের মান ও ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছানোর প্রক্রিয়া সামগ্রিকভাবে অনিয়ন্ত্রিত। এসব মান যাচাই এর জন্য সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থাকে অথবা যেসব মিডিয়ার দায়িত্ব থাকে তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনা বলেই তাঁর সুযোগ নিয়ে ভোক্তা অধিকারকে প্রতারণা করতে পারে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি প্রসাশনের দায়িত্বহীনতাতেই বিষয়টা থেমে থাকেনা, বরং এসব কারখান দেখতে যাবার নাম করে প্রশাসনের ব্যক্তিরা গ্রহণ করে উৎপাদিত পণ্যের উপহার সামগ্রী।
কখনো কখনো মিডিয়ার কর্তাব্যক্তিরাও উপহার গ্রহণ করেন বিজ্ঞাপনের সুবিধা প্রদানের নাম করে। এসব উপহারের দাম তখন উসুল করা হয় বাকি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। এই অসৎ প্রক্রিয়া চলছে দেশের সামগ্রিক ক্ষেত্রে। সাম্প্রতিক সময়ে যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম ভোক্তা অধিকারকে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত হয়েছে তাদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে বন্ধের জন্যে অথবা সেসব প্রতিষ্ঠানে আর সেবা নিতে যাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা দাবী উত্থাপন করতে শুনিনি, যেমন দেশের নামী/দামী এসন বিউটি পার্লারগুলো বন্ধ করে দেওয়া হোক জাতীয় দাবী আমরা শুনিনি, শুনছি কেবল আড়ংকে ঘিরে। এর একটি বড় কারণ আড়ংয়ের নামের সঙ্গে এনজিও পরিচয় জড়িত আছে বলে।
আমাদের দেশের সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে বেশিরভাগ মানুষের ধারণা এনজিওদের সম্পর্কে অত্যন্ত অসম্মানজনক। যারা এমন ধারণা করেন তাদের প্রতি আমার অনুরোধ আরও জেনে তারপর মন্তব্য করবেন অনুগ্রহ করে। এনজিও এর কাজ মূলত এমন যেসব ক্ষেত্রে সেবা নেই সেসব বিষয়ে সরকারকে দায়িত্ববান করে তোলা। যেমনঃ শিক্ষা, চিকিৎসা এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মত কাজে সরকারের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করা।
এনজিওদের উদ্যোগের কারণে যেসব ক্ষেত্রে দেশে বড় ধরনের সাফল্য এসেছে তার ভেতরে আমার ধারণায় কয়েকটি হল, দেশে যৌতুকের কারণে সহিংসতা কমেছে, বাড়িতে বাড়িতে রাখা শিশু ও নারী শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতা কমেছে, বাল্যবিবাহ কমেছে, অর্থনৈতিক কাজেনারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এই সাফল্যের কাজটি এনজিওগুলো একাই করেছে এমন দাবী আমি করব না, তবে এই বিশয়গুলোয় সরকারের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করেছে এনজিওগুলো। সেই দায়িত্ব পালনের সফলতায় অবশ্যই মিডিয়ার ব্যাপক ভূমিকা আছে।
কিন্তু সেসব বিষয়ে আমরা পজিটিভ ধারণা না করে একতরফাভাবে এনজিওদের সম্পর্কে সমালোচনা করতে শুনি অধিকাংশ সময়ে আর ক্ষেত্রে। যদি এমনই হয় তবে একবার কি ভেবে দেখা দরকার নয় যেসব বিষয়ে এনজিওরা সরকারকে সচেতন করতে উদ্যোগ নেয়নি সেসব বিষয়ে কতটুকু উন্নয়ন আমরা দেখি?
আমাদের ছোটবেলায় খুলনায় তিনটি বিখ্যাত উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ছিলঃ মন্নুজান স্কুল, করোনেশন স্কুল এবং জেলা স্কুল। সারা দেশে কতগুলো উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা বেড়েছে আমি জানিনা, তবে খুলনাতে গত কয়েক দশকে সরকারী উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা একটিও আর বাড়েনি।
এসব বিষয় নিয়ে এনজিওদের কাজের সুযোগ কম। কারণ এনজিওদের কাজ হতদরিদ্র এবং সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বেশি হয়েছে এই পর্যন্ত। যেসব বিষয় এনজিওরা কাজ করেছে সেসব ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে বৈ অনুন্নয়ন ঘটেনি। আড়ংএকটি এনজিও বলেই যদিআড়ংকে এমন প্রতিহিংসার মন্তব্য শুনতে হবে বলে সবাই মনে করেন, তাহলে কেউ কি ভেবে দেখবেন যে আড়ং গ্রামের নারীর সাধারণ যোগ্যতাকে পুঁজি করে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠিত করেছে, এই উদাহরণ আড়ং তৈরি করেছে।
এই উদাহরণ দেখে দেশে সরকারীভাবে আরও একশতটি আড়ং তৈরি হোক, এমন চেষ্টা নিয়ে কোন দাবী কি কখনও উঠেছে আমাদের দেশে? না ওঠেনি। আমরা নিজেরা সৃষ্টি করতে অথবা উদ্যোগ নিতে আগ্রহী হই খুব কম, তবে অন্যার উদ্যোগকে ধ্বংস করতে পারি সাড়ম্বড়ে।
শুধুমাত্র একটি এনজিও হবার কারণে আড়ংয়ের সম্পর্কে যারা তীব্র সমালোচনা করছেন, তাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আড়ং আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান, এর সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে এবং এর প্রবৃদ্ধির পথ প্রসার করতে আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
যদি এমন হয় যে আন্তর্জাতিক কোন অভিসন্ধির গন্ধ আমরা পাই যে আড়ংএর প্রবৃদ্ধিকে রোধ করতে চায়, সেক্ষেত্রে আমাদের উচিত সারা দেশের জনগণ এগিয়ে এসে আড়ংকে একটি সফল আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা। আমরা আড়ংয়ের অসততার জন্য সাময়িক শাস্তির জন্য কঠোর হতে পারি তবে এই প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হয়ে যাক, সেটা করলে বোধহয় আমরাই একমাত্র জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে উঠব যারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের হাতে ধরে ধ্বংস করতে চাই।
তবে, আড়ং কর্তৃপক্ষের খুব বেশি মনে রাখা দরকার যে, শিল্প উদ্যোগের জন্যে যে চারটি মূল ভিত্তি দরকারঃ শ্রম, জমি, উপাদান ও মূলধন আড়ংয়ের ক্ষেত্রে সেই চারটি উপাদানই এদেশের সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
এদেশের সাধারণ নারীরা আড়ংয়ের শ্রমের উৎস, বেশির ভাগ শ্রমিকের পরিবারের ঘরটিই শ্রমের কারখানা, এদেশের উপাদান আর পুঁজিও এদেশের একটি মানবাধিকার সংস্থার পুঁজি থেকে আসা। কাজেই আড়ং কর্তৃপক্ষের মনে রাখা দরকার যে, অন্য যেকোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের থেকে আড়ং কে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা ও মান নিশ্চিত করার জন্য অনেক বেশি মানবিক ও যত্নবান হতে হবে।
সব আলোচনার পরে এটাই সবার আগে কাম্য, প্রশাসনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আড়ং কর্তৃপক্ষ আগামীতে তাকে সম্মান করবেন। আড়ং কর্তৃপক্ষের মনে রাখা দরকার যে দেশের ভোক্তাদের ঠকিয়ে আন্তর্জাতিক সুনাম অথবা প্রবৃদ্ধির চেষ্টা এক মুহূর্তেই ব্যর্থ হবে। যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার কারণে ক্ষমা চেয়ে মান নিশ্চিত করে আবার উৎপাদন ও বিপনন কার্যক্রম শুরু করা উচিৎ আড়ং কর্তৃপক্ষের, প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে সংশ্লিষ্ট প্রসাশন কর্মকর্তার প্রতি আক্রোশ প্রকাশ করে নয়। কারণ সুনাম রক্ষার দায়িত্ববোধপ্রতিষ্ঠানের একটি সম্পদ। আমরা আশা করব আড়ং কর্তৃপক্ষ তা রক্ষা করবেন।
লেখক : মানবাধিকার কর্মী
(এই লেখার সকল মতামত লেখকের নিজস্ব।)
- সাময়িক বন্ধের পর খুললো যমুনা ফিউচার পার্ক
- ডেঙ্গুতে আরও ১০ জনের প্রাণ গেল
- ৫৭ বয়সেও মাধুরী দীক্ষিত যেন পঁচিশের তরুণী!
- জেনে নিন ভাপা পিঠার সহজ রেসিপি
- প্রথমবার দুঃসাহসিক অভিযানে ইহুদি মেয়েরা
- রোববার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
- ডেঙ্গুতে এ বছরেই ৫১ শিশুর প্রাণহানি
- রাজাপুরের বধ্যভূমি আজো অরক্ষিত
- বিশ্বের সবচেয়ে খাটো দম্পতির গিনেস রেকর্ড
- সাগরে আরেকটি লঘুচাপ, যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
- সম্পদের হিসাব জমা না দিলে শাস্তি হতে পারে সরকারি চাকরিজীবীদের
- ‘নারীরা লড়াই করেছেন সমানতালে, এখন কেন আড়ালে’
- ঢাকার বাতাস আজও ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
- সড়ক দুর্ঘটনায় পরীমণির প্রথম স্বামী নিহত
- এক ইলিশের দাম ৬ হাজার টাকা!
- জেনে নিন বিমানবন্দর নেই যে সব দেশে
- ঘুরে আসুন পানামসহ না.গঞ্জের পাঁচটি পর্যটন স্পট
- আজ পহেলা অগ্রহায়ণ, হেমন্তকাল শুরু
- ড.ইউনুসকে তসলিমা নাসরিনের খোলা চিঠি
- বিশ্ব হার্ট দিবস আজ
- হেমন্তে ছাতিম ফুল সুগন্ধ ছড়িয়ে যায়
- শান্তিতে নোবেল পেল জাপানের মানবাধিকার সংস্থা নিহন হিদানকিও
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন আজ
- স্নাতক পাসে চাকরি দেবে আড়ং
- পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়াল ভারতের মেয়েরা
- ‘রিমান্ড’-এ মম
- রাজু ভাস্কর্যের নারী প্রতিকৃতিতে হিজাব, যা জানা গেলে
- সৈয়দ শামসুল হকের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
- নেপালে ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১১২
- পঞ্চগড় থেকে দেখে আসুন কাঞ্চনজঙ্ঘা