ঢাকা, সোমবার ১৮, নভেম্বর ২০২৪ ১২:৫১:১২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ গাইবান্ধায় নিখোঁজের ৪ দিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হবে: ড. ইউনূস শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা ঘন কুয়াশায় শাহজালালের ফ্লাইট নামবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে হেভিওয়েট ১৩ আসামিকে বাংলাদেশি নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

চপস্টিক দিয়ে খাওয়া-দাওয়া

লাইফস্টাইল ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১২:১৩ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৮ শুক্রবার

চীন বা জাপানে যদি কখনও ঘুরতে যান তবে একটা জিনিস অবশ্যই দেখতে পাবেন। ওখানকার লোকজন দুটোকাঠি দিয়ে চটপট খাওয়া শেষ করে ফেলে। কোন চামচ টামচের বালাই নেই। স্রেফ দুটো কাঠি।

 

মজার বিষয় হলো চীন বা জাপানে যারা বেড়াতে যান তারা অন্তত একবারের জন্য হলেও কাঠি দিয়ে খাবার চেষ্টা করেন। সবাইকে যথারীতি নাকাল হয়ে ফিরতে হয়। শেষে সবাই বিচিত্র বিষ্ময় নিয়ে প্রশ্ন করেন, “আরে, এরা কাঠি দিয়ে খায় কি করে?”

 

কথা সত্য। কাঠি দিয়ে এরা খায় কি করে? আর কাঠি দিয়ে খুটখুট করে খাবার দরকারটাই বা কী? হাত দিয়ে খেলেই তো হয়, তাই না?

 

এর উত্তর চাইনিজ এক উপকথায় পাওয়া যায়। তাতে বলা হয়েছে, "একবার এক খুব ক্ষুধার্ত লোক খেতে বসেছে। রান্নাও শেষ হয়েছে মাত্র। সবকিছু একেবারে আগুন গরম। ওদিকে লোকটার ক্ষিদেও লেগেছে মারাত্মক। পেটে কিছু না দিলেই মর মর অবস্থা হবে। তিনি বুদ্ধি করে দুটি কাঠি দিয়ে কড়াই থেকে মাংসের টুকরো ধরে ফু দিয়ে মুখে ঢুকিয়ে দিলেন। গরমে তার হাতেরও ক্ষতি হলো না। আর প্রাণটাও বাঁচলো।"

 

 

খাবার জন্য এই কাঠির ব্যবহার নাকি তারপরই শুরু হয়ে যায়। আস্তে আস্তে এই কাঠি এশিয়ার অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ৫০০ খ্রিষ্টাব্দে এই কাঠি পৌঁছে যায় জাপানে। এই কাঠিরই ইংরেজি নাম চপস্টিক। জাপানে বলা হয় "হাসি", যার অর্থ হলো সাঁকো। চপস্টিক খাবার প্লেট আর মুখের মাঝে খাবারের জন্য সাঁকোর মতো কাজ করে। তাই এর নাম জাপানিজদের কাছে হাসি।

 

আর চীনদেশে এর নাম "কু আই জি", যার অর্থ চটপটে বন্ধু। চপস্টিকের মাধ্যমে খাওয়া দ্রুত শেষ করা যায় তাই এমন নাম।

 

জাপানে এই চপস্টিক ব্যবহারের জন্য নিদিষ্ট কিছু নিয়ম কানুন এবং বিধি নিষেধ আছে। যেমন চপস্টিক দিয়ে খাবার পাশের জনকে দেয়া যাবে না। কারণ মৃতদেহের সৎকারের সময় চপস্টিক দিয়ে মৃতের অস্থি ভষ্ম আত্মীয়দের মাঝে দেয়া হয়।

 

আবার চপস্টিক কখনো ভাতের গামলায় খাড়া করে রাখা যাবে না। কারণ জাপানে পরিবারের কেউ মারা গেলে মৃতের খাবার জায়গায় একটি ভাতের গামলায় এক জোড়া চপস্টিক খাড়া করে রাখা হয়।

 

চীনে খাবার সময় চপস্টিকেরও ভাষা তৈরি হয়। আকার ইঙ্গিতের ভাষা। যেমন কোন দাওয়াতে হোস্ট যতক্ষণ তার চপস্টিক ভাতের প্লেটে রাখছেন ততক্ষণ অতিথিরা চপস্টিকে হাত দেন না। খাওয়া শেষে প্লেটের উপর পাশাপাশি চপস্টিকদের শুইয়ে দিতে হয়। এটাও চীনে প্রচলিত আরেকটি নিয়ম।

 

চপস্টিক নিয়ে চীনে বেশ কিছু কুসংস্কারও প্রচলিত আছে। যেমন, প্লেটের সাথে টুংটাং শব্দ করে কেউ যদি চপস্টিক ব্যবহার করে তবে তার উত্তর পুরষেরা দরিদ্র হয়।

 

ছোটবেলায় বাচ্চাদের চপস্টিকে খাওয়া শেখাবার জন্য প্লাস্টিকের চপস্টিক ব্যবহার করা হয়। এসব চপস্টিকে একটা করে রিং থাকে। রিং এর ভেতর আঙুল ঢুকিয়ে তারা খাবার মুখে দেয়া প্র্যাকটিস করে। তাও বাচ্চাদের সমস্যা কমে না। তারা মুখ প্লেটের খুব কাছে নিয়ে প্রথমে খাবার খাওয়া শুরু করে। এ নিয়ে বড়রা হাসাহাসি করেন। বড়রা যখন ছোট ছিলেন তখন তাদের নিয়েও হাসাহাসি হয়েছে। এভাবেই চলে আসছে যুগ যুগ। বড়রা ছোটদের এই ভঙ্গিতে খাওয়াকে বলে "কুকুর ভঙ্গি"। 

 

চপস্টিক ব্যবহারের কিন্তু একটা নিয়ম আছে। এবারে বলছি নিয়মটা।

 

১) ডান হাতের অনামিকা আর মধ্যমার অগ্রভাগ দিয়ে একটা চপস্টিক ধরেন। সেই চপস্টিকটাকে বুড়ো আঙুলের গোড়ার দিক দিয়ে চেপে রাখেন।

 

২)ডান হাতের তর্জনী আর বৃদ্ধাঙুলির অগ্রভাগ দিয়ে ধরো আরেকটা চপস্টিক। ঠিক যেমন করে পেন্সিল ধরা হয়, সেরকমই অনেকটা।

 

৩) যখন খাবার প্লেট থেকে তুলতে চাইবেন, তখন তর্জনী উপরের দিকে উঠিয়ে চপস্টিক দুটোকে আলাদা করবেন। স্টিকের অগ্রভাগ দিয়ে খাবার চেপে ধরবেন। সোজা চালান করে দেবেন মুখে। ব্যস কাজ শেষ।

 

সোজা না কাজটা? একবার চেষ্টা করে দেখবে নাকি?