ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, নভেম্বর ২০২৪ ৪:৫০:৪৫ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আয়ারল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে ওয়ানডেতে বড় জয় টাইগ্রেসদের জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস ভারতীয় আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বাড়ছে দাম ঢাকায় জিকা ভাইরাস শনাক্ত খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা নিয়ে যে তথ্য জানা গেল টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা

চিকিৎসার জন্য আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০৩ পিএম, ২০ জুন ২০২০ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সরকারের অনুমতি নিয়ে আপাতত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন না। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বেগম জিয়ার চিকিৎসা ও তাকে লন্ডনে যাওয়ার বিষয়ে যে খবর প্রকাশ হয়েছে তাকে ভিত্তিহীন, অনাকাঙ্ক্ষিত বলে দাবি করেছে স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার রাতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি। বৈঠকে লন্ডন থেকে সংযুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে কিছু শুনিনি। জানিও না। তবে এটা তো ঠিক যে উনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা ভালো নয় এবং তার উন্নত চিকিৎসা জরুরি।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চেয়ারপারসনকে নিয়ে কিছু কিছু জায়গায় অসত্য খবর প্রকাশ করা হচ্ছে। তিনি লন্ডন যাবেন বলে বলা হচ্ছে। যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে আমরা কিছু জানলাম না আর সেইসব মিডিয়ার লোকেরা জানল। এটা তার পরিবারের বিষয়। তবে পরিবার থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলে তা আমরা অবশ্যই জানব। খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দরও গণমাধ্যমে প্রচারিত লন্ডন যাওয়ার খবর অস্বীকার করেছেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “ম্যাডাম ও তার পরিবার তো উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে চাইবেন। কারণ মুক্তির উদ্দেশ্যই ছিল উন্নততর চিকিৎসা, সেটা তো সফল হয়নি। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে সরকারের মনোভাব তথা হিসাব-নিকাশের ওপর। সরকার চাইলে সব কিছু পারে। আমি মনে করি, ম্যাডাম যদি যেতে চান, তবে বিশেষ বিমানে করে তাকে যেতে দেওয়া উচিত। তবে তিনি যাবেন কি না, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

তবে খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ও দলের নীতিনির্ধারকরা জানান, করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার মধ্যে আপাতত তার বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। ৬ মাসের জামিনের মেয়াদের মধ্যে তার বিদেশে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে। তবে খালেদা জিয়ার হয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হতে পারে। পাশাপাশি তার স্থায়ী জামিনের জন্য আইনজীবীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন।

আবেদনের পর সরকার কি সিদ্ধান্ত নেয় তার ওপরই নির্ভর করবে তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি। জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হলে রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতি হিসাব করেই চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার চিন্তাভাবনা করবেন তিনি। তার আগে দেশেই চিকিৎসা নেবেন খালেদা জিয়া। বর্তমানে গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার হাঁটুর ব্যথা কিছুটা বেড়ে গেলেও মানসিকভাবে তিনি বেশ ভালো আছেন।

টানা ২৫ মাস কারাবন্দি থাকার পর ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ৬ মাসের জন্য জামিনে মুক্তি পান সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। ২৪ সেপ্টেম্বর তার জামিনের মেয়াদ শেষ হবে। খালেদা জিয়া এ আদেশের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করবেন। এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে বিএনপি। এরই মধ্যে দলের একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। মুক্তির পর এখনও খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা শুরু হয়নি। করোনার কারণেই সেটি সম্ভব হচ্ছে না। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় দলীয় চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি টিম রয়েছে। তাদের এক-দু’জন নিয়মিত খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ফলোআপ করছেন। এ ছাড়া পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান নিয়মিত তার চিকিৎসার তদারকি করছেন। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নতুন করে চিকিৎসা শুরু করবেন তিনি।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি খালেদা জিয়ার এক ঘনিষ্ঠজন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসার বিষয়টি আলোচনায় এলে ঘনিষ্ঠ ওই নেতা জানতে চান, ‘ম্যাডাম আপনার যে শারীরিক অবস্থা তাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া ব্যাপারে কিছু ভাবছেন কিনা।

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে এবং বিশ্বের যে পরিস্থিতি তাতে এ মুহূর্তে যাওয়া ঠিক হবে না। ওই নেতা যুগান্তরকে বলেন, আপাতত চেয়ারপারসন বিদেশ যাচ্ছেন না তা তার মনোভাব দেখে বোঝা গেছে। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চেয়ারপারসনের বিদেশ যাওয়া নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, এগুলো পুরোপুরি মিথ্যা। বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা তো নেই, এমনকি পরিবার এখনও পরবর্তী কিছু নিয়ে আলোচনা করেনি।

সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেও কিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। ওই শর্তের মধ্যে রয়েছে, জামিনে থাকাকালীন তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পারবেন না। গুলশানের বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে। তাই খালেদা জিয়া চাইলেও বিদেশ যেতে পারবেন না। এজন্য তাকে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। সরকার অনুমতি দিলেই শুধু তিনি বিদেশ যেতে পারবেন। তাই তার বিদেশ যাওয়াটা অনেকটা সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, যে কারণে ম্যাডামকে মুক্তি দেয়া হয়েছে, সে কারণ এখনও রয়েছে। করোনার কারণে ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়নি। তার চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয়নি। স্বাভাবিক কারণে প্রয়োজনবোধে আবারও সরকার মানবিক কারণে সময় বৃদ্ধি করতে পারে। তবে এটির জন্য আবেদন করতে হবে। যেহেতু তার মুক্তির প্রক্রিয়াটি নির্বাহী আদেশে হয়েছে, সে কারণে আবারও আবেদন করার মধ্য দিয়ে সময় বাড়ানোর অনুরোধ করতে হবে।

অপর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, সরকার উনাকে চিকিৎসা করানোর জন্য মুক্তি দিয়েছে। উনার হাঁটুর চিকিৎসা বিদেশে হয়েছে। গত সোয়া ২ বছর ধরে উনার চেকআপ নেই। এখন ব্যথ্যা করছে। তার বাম হাত বেঁকে গেছে। করোনা পরিস্থিতি কারণে এখন উনি চিকিৎসা করতে পারছেন না। আবার হাসপাতালগুলোও প্রস্তুত নয়। পরিবার থেকে প্রথমেই সরকারের কাছে আবেদন করা হয়ছিল তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য। সেক্ষেত্রে সরকার বিবেচনা করতে পারে। আশা করি সরকার তা করবে।

-জেডসি