ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ১২:১৩:০৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই প্রিয়াঙ্কার বাজিমাত বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস আজ ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস কুড়িগ্রামে বাড়ছে শীতের প্রকোপ, তাপমাত্রা নামল ১৫.৬ ডিগ্রিতে

দেশে শিশুশ্রম নির্মূলে উদ্যোগ নেই

আইরীন নিয়াজী মান্না | উইমেননিউজ২৪

আপডেট: ০২:২৭ পিএম, ৯ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার

যথেষ্ঠ উদ্যোগগ্রহণ না করার কারণে বাংলাদেশ থেকে কমছে না শিশুশ্রম। অথচ আগামী আট বছরের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মাত্র আট বছরে দেশে থেকে শিশুশ্রম নিমূল করা সম্ভব কি না!

 

বাংলাদেশ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন (এসডিজির) লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম দূর করতে চায়৷ কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের প্রস্তুতি যথেষ্ঠ নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেটা বাস্তবায়নে যথেষ্ঠ উদ্যোগও নেই৷ তারা বলছেন, এ জন্য প্রয়োজন যথাপোযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ এবং তা কার্যকর করা।

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে জানা যায়, দেশে এখন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ১৭ লাখ৷ কিন্তু ২০০১-২০০৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৫ লাখ৷ গত এক দশকে বাংলাদেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছে৷

 

২০০৬ সালে বাংলাদেশ শ্রম আইনে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে কাজে নেয়া যাবে না৷ ১৪ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত কাজে নেওয়া যাবে, তবে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নেওয়া যাবে না৷ আর শিশুদের জন্য ৩৮ ধরনের ঝঁকিপূর্ণ কাজে নেয়া নিষিদ্ধ করা হয়৷

 

তবে আজও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যথাপোযুক্ত মনিটরিং এবং আইন প্রয়োগ না করার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

বিবিএস’র জরিপে বলা হয়েছে, দেশে ১৭ লাখ শিশু পূর্ণকালীন শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। এদের মধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত৷ ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু অপেক্ষাকৃত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত৷ এছাড়া ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যে যে শিশুরা সপ্তাহে এক ঘণ্টার বেশি কর্মে নিয়োজিত থাকে, তাদের সংখ্যা ৩৪ লাখ ৫০ হাজার৷ সব মিলিয়ে দেশে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার শিশু কোনো না কোনোভাবে শ্রমের সাথে যুক্ত আছে৷

 

শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শিশুমেলার নির্বাহী পরিচালক আসমা জেসমিন বলেন, আসলে যথেষ্ঠ উদ্যোগের অভাবে এমন হচ্ছে। চামড়া, মোটর গ্যারেজ, ওয়েল্ডিংসহ আরো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে আজও৷

 

তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ‘ড্রপ আউট`-এর হার দেখলেই শিশুশ্রমের বাস্তব অবস্থা বোঝা যায়৷ শিশুদের একটা বড় অংশ কাজ করে ‘নন ফরমাল` গৃহশ্রমিক হিসেবে৷ তাদের প্রকৃত হিসাব কারো কাছে নেই৷ ফলে প্রকৃত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি হবে৷ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে গৃহশ্রমিক হিসেবে শিশুদের নিয়োগ বন্ধের পরিকল্পনা করেছে৷ ২০১৫ সালে শিশুশ্রম বন্ধে একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়৷ কিন্তু তা বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি৷নতুন বছরে কিছু প্রকল্প আসছে৷ তখন হয়ত শিশুশ্রম কমবে৷

 


ওদিকে শিশু অধিকার ফোরামের প্রধান এমরানুল হক চৌধুরী জানান, বাংলাদেশে এখন ১২ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত৷ ২০২১ সালের মধ্যে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের বাইরে নিতে হবে৷ বলঅ হচ্ছে ২০২৫ সালে দেশে শিশু শ্রমিক থাকবে না৷ কিন্তু সেটা বাস্তবায়নে যথেষ্ঠ উদ্যোগ নেই৷ ফলে আমি লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সন্দিহান৷ এ জন্য বাজেট এবং প্রকল্পও নেই৷ নেই শিশুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়।

 


জানা গেছে, বিশ্বের প্রতি ১০ জন শিশুর একজন শিশু শ্রমিক৷ আর তাদের অর্ধেকই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত৷ তবে নব্বই দশকের পর শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা ১০ কোটি কমে গেছে৷

 

আইএলও প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, বিশ্বে ১৫ কোটি ২০ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে৷ তাদের আড়াই কোটি শিশুকে জোর করে শ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে৷

 


ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ‘টাইম টু রিচার্জ` শীর্ষক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের বড় ২৮টি প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকই নিকেল জাতীয় ধাতু উত্তোলনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের ব্যবহার করছে৷