ঢাকা, শুক্রবার ২৯, নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৮:২১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৪ তেল-আলু-পেঁয়াজে স্বস্তি নেই, মাছের বাজার চড়া ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজাল’ অস্ট্রেলিয়ায় কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ৩ বিভাগে হতে পারে বৃষ্টি, ৪ সমুদ্রবন্দরে সতর্কতা সংকেত পর্যটক সংকট, সেন্ট মার্টিনে যাচ্ছে না জাহাজ তীব্র শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ

পশ্চিমবঙ্গে পহেলা বৈশাখকে ‘বাংলা দিবস’ করার প্রস্তাব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:০০ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২৩ শুক্রবার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

পহেলা বৈশাখকে বাংলা দিবস হিসাবে পালন করা হবে কী না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

বৈশাখের প্রথম দিনটিকে ‘বাংলা দিবস’ হিসাবে পালন করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার একটি কমিটি। এ প্রস্তাব ছাড়াও রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটিকে গ্রহণ করার প্রস্তাবও দিয়েছে বিধানসভার ওই বিশেষ কমিটি।

অনেকে মনে করছেন, বিজেপি এবং বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে 'বাংলা দিবস' পালনের বিষয়টি সামনে এসেছে।

এর আগে ২০শে জুন তারিখটিকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করতে শুরু করেছে ভারত সরকার, বিজেপি এবং অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।

ভারত ভাগের আগে ১৯৪৭ সালের ২০শে জুন অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইনসভায় বাংলা ভাগ হবে কী না, সেই প্রশ্নে ভোটাভুটি হয়েছিল।

হিন্দুত্ববাদী নেতা ও হিন্দু মহাসভার নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীই উদ্যোগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গকে পৃথক করে এনেছিলেন বলে দাবি করে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো, তাই সেই দিনটিকেই রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস ও মি. মুখার্জীর কৃতিত্বকে তুলে ধরার উদ্যোগ নেয় তারা।

'বাংলা দিবস' বনাম 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস'
এর আগের কয়েক বছরে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের অনুষ্ঠানে জাঁকজমক কম থাকলেও এবছর কেন্দ্রীয় সরকার রীতিমতো নির্দেশ জারি করে যে দেশের প্রতিটি রাজ্যের সরকারকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসাবে পালন করতে হবে।

কলকাতায় রাজ্যপালের নিবাস রাজভবনে আনন্দানুুষ্ঠান হয়েছিল সেদিন। ইতিহাসবিদ ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, ২০শে জুন, ১৯৪৭ তারিখটিকে যদি উদযাপনই করতে হয়, সেটাকে আনন্দানুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে না করাই শ্রেয় ছিল।

ওই ভোটাভুটির ফলে দেশভাগের সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছিল, যার ফলে প্রায় দশ লাখ মানুষের প্রাণ গিয়েছিল, ছিন্নমূল হয়েছিলেন এক কোটি ২০ লক্ষ মানুষ। তাদের মতে, এটা কোনও উদযাপনের দিন হতে পারে না।

হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো অবশ্য বলে, ২০শে জুন পশ্চিমবঙ্গের ‘ভারত-ভুক্তি’র দিন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল তৃণমূল কংগ্রেস। বিধানসভার একটি কমিটি পাল্টা ‘দিবস’ হিসাবে পহেলা বৈশাখকে ‘বাংলা দিবস’ হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে।

এনিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপির মধ্যে প্রত্যাশিতভাবেই রাজনৈতিক ঠোকাঠুকি লেগেছে।

প্রস্তাবে কী আছে?
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যে কমিটি তৈরি করেছিলেন, তার উপদেষ্টা হিসাবে রাখা হয়েছিল ইতিহাসবিদ ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের গার্ডিনার অধ্যাপক সুগত বসুকে।

বিবিসি বাংলাকে অধ্যাপক বসু বলছিলেন, “একটি রাজনৈতিক দল পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে ২০শে জুন দিনটিকে উদযাপন করেছে। ব্রিটিশরা ৩রা জুন, ১৯৪৭-এই দেশভাগের পরিকল্পনা ঘোষণা করে দিয়েছিল। তাই ২০শে জুন দিনটি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক দুঃখজনক পাদটীকা মাত্র।"

"এর কোনও বিশেষ ঐতিহাসিক তাৎপর্য নেই। তাই আমরা কমিটিতে ভাবনা চিন্তা করে ঠিক করলাম যে রাজ্যের জন্য কোনও বিশেষ একটি দিন যদি বাছতেই হয়, সেরকম একটা শুভ দিন আমাদের বাংলার নববর্ষ, পহেলা বৈশাখই হওয়া উচিত।"

“এছাড়াও আমরা দেখলাম যে অনেক রাজ্যেরই নিজস্ব রাজ্য-সঙ্গীত আছে। আমি সুপারিশ করি যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটি বেছে নেওয়া যেতে পারে। গানটি রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন ১৯০৫ সালের ভাদ্র মাসে, বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে যে স্বদেশী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই সময়ে,“ বলেন অধ্যাপক বসু।

কমিটির সুপারিশের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে চলেছেন ২৯শে অগাস্ট। বিধানসভায় যেসব দলের প্রতিনিধিত্ব আছে এবং যেসব দল রাজ্য রাজনীতিতে সক্রিয়, তাদের সবাইকেই ডাকা হতে পারে বলে সরকারি সূত্রগুলি জানিয়েছে।

তবে এই কমিটির সুপারিশ এবং সর্বদলীয় বৈঠকের কথা সামনে আসতেই প্রত্যাশা মতোই এ নিয়ে রাজনৈতিক দ্বৈরথ শুরু হয়েছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে।

(সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন)