ঢাকা, শনিবার ৩০, নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৫১:০১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক থেকে তরুণীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার টস হেরে ফিল্ডিংয়ে টাইগ্রেসরা পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৯ বস্তা টাকা তাপমাত্রা নামল ১০ ডিগ্রিতে, শীতে কাঁপছে পঞ্চগড় ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৪ তেল-আলু-পেঁয়াজে স্বস্তি নেই, মাছের বাজার চড়া

প্রিন্সেস ডায়ানা মরেও অমর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৩৯ পিএম, ৮ মে ২০২৩ সোমবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের নাম শুনলে বিশ্লেষণ ও পদবির প্রয়োজন হয় না। বিশ্ববাসী কাছে যেমন মাদার তেরেসা, বঙ্গবন্ধু, নেলসন ম্যান্ডেলা, বেগম রোকেয়া, নুরজাহান, রাজিয়া বেগম, সুফিয়া কামাল পরিচিত। তেমনি একজন আলোচিত নারী প্রিন্সেস ডায়ানা। তার মৃত্যুতে কেঁদেছিল বিশ্ববাসী।

একজন সাংবাদিক তার ভক্তকে প্রশ্ন করেছিলেন আপনি কেন কাঁদছেন? আপনি কি প্রিন্সেস ডায়নাকে চিনতেন? উত্তরে সে বলল না। এ থেকে বোঝা যায় তিনি মানুষের অজান্তেই নিজ কর্মদক্ষতায় ও ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা-চেতনার মাধ্যমে স্থান করে নিয়েছিলেন কোটি মানুষের হৃদয়ে।


ডায়ানার মৃত্যুর সংবাদ শুনে কাঁদেনি এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কম আছে। ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্যারিসের রিৎজ হোটেলে রাতের খাবার খেয়ে ‘পন্ট ডি আলমা’ রোড পার হওয়ার সময় তার বন্ধু দোদি ফায়েদ ও গাড়িচালক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় শিকার হন। প্রিন্সেস ডায়ানা ফ্রান্সের পিটি সালপিত্রও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অকালে চলে যাওয়া ডায়ানার প্রতি সম্মান জানিয়ে ফরাসি সরকার টানেলের ওপরে (প্যালেইস ডায়ানা) স্বাধীনতার মশাল স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করেছেন।

স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে চেইনের বেষ্টনী এবং স্মৃতিস্তম্ভের নিচ অংশে ডায়ানার ছবি রয়েছে। ওপরের অংশে স্বর্ণকারের মশাল জলন্ত। স্মৃতিস্তম্ভকে অন্তর দৃষ্টিতে অবলোকন করলে মনে হয় স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

বিশ্ববাসীর কাছে ভালোবাসার নদী নামে খ্যাত প্যারিসের স্যাইম নদী (সোনাই নদী) আর নদীর এক পারে আইফেল টাওয়ার অপর প্রান্তে পন্ট ডি আলমা রোড টানেল আর টানেলের ওপরে ডায়ানার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে চোখেপড়ার মতো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। যা দেখতে ভিড় জমান বিশ্ব পর্যটকরা। ডায়ানা ভক্তরা ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে অনেক ধরনের তালা ঝুলে আছে। এখনকার সংস্কৃতি অনুযায়ী প্রেমিক-প্রেমিকারা চেইনে তালা মেরে, চাবিটি শ্যাইম নদীতে ফেলে দিয়ে মনে করেন যতদিন তালা থাকবে ততদিন অটুট থাকবে প্রেমিক যুগলের ভালোবাসা।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের পুত্রবধূ ডায়ানা আর চার্লসের বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয় ১৯৯৬ সালের ২৮ আগস্ট। সেবামূলক কাজের মাধ্যমে ডায়ানা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এইডস প্রতিরোধে তার ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। আক্রান্তদের হাত ধরে মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন স্পর্শের মাধ্যমে এইডস ছড়ায় না।

মানবতার সেবক, শিক্ষা অনুরাগী ডায়ানা নার্সারি স্কুল ও হাসপাতাল পরিদর্শনে যেতেন নিয়মিত। সাধারণ মানুষের সঙ্গে গড়ে তোলেন সখ্যতা। রাজপরিবারের সদস্য হয়েও দুই সন্তানের জননী ডায়ানা চেয়েছিলেন তার সন্তানরা সাধারণ ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে লেখাপড়া করবে। এজন্য উইলিয়ামকে নার্সারিতে যেতে হয়।

ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা-চেতনার কারণে বিশ্বে আলোচিত নারী ডায়ানা ছিলেন মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত খ্যাতিমান দানশীল, মুক্তচিন্তার অধিকারী, উদার মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। সৌন্দর্য ও ফ্যাশন ডিজাইনে প্রতিভাকে করেন বিকশিত।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, তার ব্যক্তি জীবনে ছোটখাট ভুল থাকলেও আর্ত-মানবতার সেবায় ছিলেন এক মহীয়সী নারী। আজও তিনি বেঁচে আছেন লাখ লাখ তরুণ-তরুণীর প্রেরণার উৎস হয়ে তাদের মনিকোঠায়। ইংল্যান্ডে তার সমাধি হলেও বিশ্বমানবতার দেশ ফ্রান্সের ফরাসি সরকার দুর্ঘটনা স্থানে ডায়ানার স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করে। ডায়ানাভক্তদের হৃদয়ে গহিনে উচ্চ আসনে স্থান করেছে ফ্রান্স। মরেও অমর হয়ে আছেন প্রিন্সেস ডায়ানা।

কবির ভাষায় বলতে গেলে

‘এমন জীবন তুমি করিও গঠন

মরিলে হাসিবে তুমি

কাঁদিবে ভূবন’
স্মৃতিস্তম্ভের পাশে দাঁড়ালে দেখা যায় প্রিন্সেস ডায়ানা হাঁসছেন এবং আশপাশের সবাই মনের অজান্তে যেন কাঁদছেন।