ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ৯:২৫:৪২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সাময়িক বন্ধের পর খুললো যমুনা ফিউচার পার্ক ডেঙ্গুতে আরও ১০ জনের প্রাণ গেল ডেঙ্গুতে এ বছরেই ৫১ শিশুর প্রাণহানি মাকে হত্যা করে থানায় হাজির ছেলে আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু ঢাকায় আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা

ফেসবুকে নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রিবাট্টা

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০১:৩৬ এএম, ১১ জুন ২০১৮ সোমবার

ডিজিটাল বাংলাদেশে হালে অনলাইনে কেনাকাটা বেশ বেড়েছে। ফেসবুক বেচা-কেনার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। দেশের নারীরা ঝুকছেন এ ব্যবসায়। এসব নারী উদ্যোক্তারা কিভাবে ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করছেন? ক্রেতারাই বা কিভাবে কিনছেন সেসব পণ্য?


জানা গেছে, নতুন আসা পণ্যের ছবি তুলে ফেসবুক পাতায় তুলে দেয়া হয়। ক্রেতাদের সাড়া পাওয়ার পর সেগুলো `ক্যাশ অন ডেলিভারি` ভিত্তিতে পৌঁছে দেয়া হয় নির্দিষ্ট ঠিকানায়।

বাংলাদেশে গত ক`বছর ধরে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ফেসবুক ভিত্তিক অনেক পাতা তৈরি হয়েছে, যেখানে নানা ধরণের পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে। এসব পণ্য ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেশিরভাগই নারী এবং যাদের অনেকে ছাত্রী বা গৃহবধূ।

এসব ফেসবুক দোকানের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে পোশাকআশাক থেকে শুরু করে রূপসজ্জা এবং গৃহসজ্জার নানা জিনিসপত্র, ঈদের সময় যাদের বিক্রি বাট্টা অনেকগুণ বেড়ে যায়।


প্রতিদিনই বাংলাদেশের ফেসবুক পাতাগুলোয় কাউকে না কাউকে এ ধরণের পণ্য বিক্রির লাইভ বা সরাসরি সম্প্রচার দেখতে পাওয়া যাবে। যেমন ‘কল্পতরু’ নামের একটি ফেসবুক পাতায় দেখা যাচ্ছে, পাতাটির মডারেটর নতুন সংগ্রহ করে আনা কাপড়চোপড় ফেসবুক পাতার মাধ্যমে সরাসরি তুলে ধরছেন।


প্রতিদিনই দেশে ফেসবুক পাতাগুলোয় কাউকে না কাউকে এভাবে সম্প্রচার করতে দেখা যায়। ঈদের আগে আগে এই প্রবণতা আরো বেড়েছে। কারণ দেশ এখন এভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির অসংখ্য প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাপড়, রূপসজ্জা বা গৃহসজ্জার নানা উপকরণ।

’রঙের বাড়ি’ নামের একটি ফেসবুক পাতা রয়েছে। যেখানে বাংলাদেশি ও ভারতীয় কাপড় বিক্রি করা হয়।এরকম একটি ফেসবুক পাতার কর্ণধার এলমা খন্দকার এশা বলেন, চাকরির পাশাপাশি এই পাতা থেকে তার ভালো আয় হচ্ছে।


তিনি বলেন, একবার ডিজাইন করে কিছু বন্ধুকে দেখালাম, দেখলাম সবাই খুব ভালো বলছে। সেখান থেকেই আসলে শুরু। যেহেতু আমি অনলাইনে থাকি, তখন ডিজাইন করে সেখানে তুলে ধরতে শুরু করলাম।


চাকরিজীবী হওয়ায় চাকরির পাশাপাশি তিনি শাড়ি ডিজাইন করে বিক্রি করতে শুরু করেন। ফেসবুক সেগুলো তুলে দেয়ার পর তা দেখে অর্ডার আসে। তখন তিনি তাদের কাছে সরবরাহ করার পর দাম বুঝে নেন।


এশা বলেন, পাশাপাশি আমাদের দেশের মেয়েরা ভারতীয় কাপড় বেশ পছন্দ করে। তাই ভারতের কাপড় সংগ্রহ করে সেগুলোও বিক্রি করতে শুরু করি।


ফেসবুকের এসব দোকান পরিচালকদের বেশিরভাগই নারী। যারা নিজেদের তৈরি করার ছাড়ায় ঢাকা অথবা দেশের বাইরে থেকে পণ্য সংগ্রহ করে ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করেন। সঠিক কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও উদ্যোক্তারা বলছেন, এদের সংখ্যা কয়েকশো হবে।


তাদের বড় একটি অংশ গৃহবধূ অথবা শিক্ষার্থী, যারা একে বিকল্প একটি আয়ের মাধ্যম হিসাবে নিয়েছেন। তাদের ক্রেতাদের বড় অংশটিও আবার নারীরাই।

ঢাকার কাঠালবাগানের ফওজিয়া বেগম বিভিন্ন ফেসবুক পাতা থেকে গত প্রায় দুই বছর ধরে প্রায়ই জিনিসপত্র কিনে থাকেন।


এ প্রসঙ্গে ফওজিয়া বেগম বলেন, আমি একজন গৃহবধূ হওয়ায় সংসারের নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সময়ের অভাবে চাইলেই মার্কেটে যাওয়া হয় না, আবার মার্কেটে গিয়ে অনেক সময় পছন্দ মতো জিনিসটিও সহজে পাওয়া যায়না। তাই ফেসবুক ব্যবহার করার সময় এরকম নানা জিনিস দেখতে পাই, রিভিউ পাই, তারা আবার সেটি বাসাতেও পৌঁছে দেয়। এ কারণেই ফেসবুক থেকে প্রায়ই নানা জিনিসপত্র কেনা হয়।


পণ্য মান প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, দুই একটি খারাপ অভিজ্ঞতা যে হয়নি, তা নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মান বেশ ভালো।


উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এসব পণ্যের বেশিরভাগই ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি বাজার, ভারত, থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুর থেকে সংগ্রহ করা হয়। তার সঙ্গে অল্প মুনাফা যোগ করে `ক্যাশ অন ডেলিভারি`র ভিত্তিতে বিক্রয় করা হয়।



বিক্রেতারা বলছেন, প্রচলিত দোকানের মতো প্রাতিষ্ঠানিক খরচ না থাকায় তারা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারেন, আর তাই ক্রেতারাও তাদের কাছে আসেন। কিন্তু পণ্য বিক্রির জন্য ফেসবুক কেন?


এলমা খন্দকার এশা বলেন, আপনিই বলুন আজকের দিনে কার আইডি নেই ফেসবুকে? সবাই ফেসবুক ব্যবহার করছে। অনলাইনে অনেকের হয়তো ওয়েবসাইট আছে। কিন্তু সেজন্য সেখানে যেতে হবে, আলাদাভাবে যেতে হবে। কিন্তু সবাই যখন ফেসবুক ব্যবহার করে, তখনি আমার পণ্যটি তাদের চোখের সামনে সহজে চলে যাচ্ছে। তাই তাদের আমি সহজেই ধরতে পারছি।


এদিকে সরকার পক্ষ বলছে, ফেসবুক ভিত্তিক এসব প্রতিষ্ঠানকেও তারা করের আওতায় আনার কথা ভাবছেন।


তবে এই উদ্যোক্তাদের মতে, এই খাতটি সদ্য গড়ে উঠেছে। তাই কর আরোপের জন্য আগে আয়ের একটি সীমা নির্ধারণ করা উচিত। যাতে অন্তত স্বল্প আয়ের এরকম উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত না হয়ে পড়েন।

সূত্র : বিবিসি অনলাইন