ঢাকা, শনিবার ১৬, নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৩২:৩৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
মহাকাশচারীদের নিয়ে উপন্যাস ‘অরবিটাল’ লিখে বুকার জিতলেন হার্ভে জাতীয় সংসদে কোনো সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে না রাষ্ট্র সংস্কারই এই সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ: প্রধান উপদেষ্টা দিনাজপুরে তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ৮, বাড়ছে শীতের প্রকোপ আজ ঢাকায় আসছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভারতে হাসপাতালে ভয়াবহ আগুন, ১০ শিশুর মৃত্যু ডাকাতির সময় নিয়ে যাওয়া শিশু মোহাম্মদপুর থেকে উদ্ধার

বাংলাদেশের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:২৯ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০২২ বুধবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশের তাপমাত্রা গত তিন দশকে দ্রুত বেড়েছে। সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে বলছে, শীতকাল আরো বেশি শুষ্ক এবং বর্ষাকাল আরো বেশি আর্দ্র হচ্ছে।

গত তিন দশকে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা তার আগের তিন দশকের চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৭ উপলক্ষে প্রকাশিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান বা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফর্মেশন সার্ভিসেস বা সিইজিআইএসের হিসেবে, ১৯৬১ থেকে ১৯৯০ সালে প্রতিবছর গড়ে তাপমাত্রা বেড়েছে ০.০০৬৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১৯৯১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়েছে প্রতিবছর গড়ে ০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ আগের তিন দশকের তুলনায় গত তিন দশকে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে এর প্রায় সাড়ে চার গুণ।

সিইজিআইএসের হিসেবে আরো দেখা যায়, যতই সময় গড়াচ্ছে তত তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বাড়ছে। যেমন, গত তিন দশকের মধ্যে ১৯৯১ থেকে ২০০০-এর মধ্যে তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত বেড়েছে বছরে গড়ে ০.৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গড়ে ১.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া : শীত ও বর্ষায় সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা যথাক্রমে বছরে বেড়েছে ০.৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ০.৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, শীতকাল ক্রমে উষ্ণতর হচ্ছে।

একইসঙ্গে বৃষ্টিপাতের ধরনও বদলে যাচ্ছে। যেমন, দেশ জুড়ে গড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে ৮.৪ মিলিমিটার বেড়েছে। শীতকালে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং প্রাক বর্ষা মৌসুমে অর্থাৎ মার্চ থেকে মে মাসে বৃষ্টিপাত বছরে কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে, বর্ষা ও বর্ষার পর, অর্থাৎ, জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে। এর অর্থ শীতকাল আরো বেশি শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুম আরো বেশি আর্দ্র হচ্ছে।

ভবিষ্যৎ কোন দিকে? : এদিকে, জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল আইপিসিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হচ্ছে তাতে সারা পৃথিবীতে তাপমাত্রা ২০৩০ সাল নাগাদ শিল্পযুগের শুরু থেকে দেড় ডিগ্রি বাড়বে। আর ২০৫০ সাল নাগাদ ১.৭ ডিগ্রি থেকে ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। দীর্ঘমেয়াদে, অর্থাৎ শতাব্দীর শেষে তাপমাত্রা বাড়তে পারে ১.৮ ডিগ্রি ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাদের হিসেবে, বাংলাদেশের তাপমাত্রা ২০৩০ সাল নাগাদ তাপমাত্রা শিল্পযুগের শুরুর চেয়ে ০.৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ০.৬৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। ২০৫০ সাল নাগাদ ১.৩ ডিগ্রি থেকে ২ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে।

তাপমাত্রা বাড়লে কী হবে? : আইপিসিসির গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে অতিবৃষ্টির হার বাড়ে ৭ ভাগ। বাড়ে শক্তিশালী সাইক্লোনের হার। 

প্রতিবেদনটি বলছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা আর ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে প্রতি শতকে দুই থেকে তিনবার ভয়ঙ্কর অতিবৃষ্টির কবলে পড়বে পৃথিবী। প্রতি দশকে একবার প্রচণ্ড খরায় অধিকাংশ জমি শুকিয়ে যাবে এবং চারবার উর্বরতা হারাবে। হিট ওয়েভ বা তাপপ্রবাহের ঘটনা এরই মধ্যে বেড়েছে ২.৮ গুণ। আর একটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়লে তা ৯.৪ গুণ বাড়বে এবং তাপমাত্রা বাড়বে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

‘এই প্রতিবেদনটি হলো বাস্তবতা,’ বলেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং আইপিসিসির ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ভেলেরি ম্যাসন-ডেলমট। 

প্রতিবেদনটি বলছে, জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করে মানুষ পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাকশিল্পযুগের চেয়ে এরই মধ্যে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়িয়ে ফেলেছে (০.৮ ডিগ্রি সে. থেকে ১.২ ডিগ্রি সে.)। এর অর্থ গড়ে প্রতি দশকে মানবসৃষ্ট কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে ০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জুরিখভিত্তিক বিজ্ঞানী সোনিয়া জেনেফিরাটনে বলেন, রিপোর্টের ফল দেখে এটা নিশ্চিত যে, আমরা এরইমধ্যে একটি জলবায়ু সংকটের ভেতর পড়ে গেছি।

বাংলাদেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সালিমুল হক বলেন, আইপিসিসির প্রতিবেদনে এটি পরিষ্কার যে, মানবসৃষ্ট কারণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ফলে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হচ্ছি। এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। বেড়েছে দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা।

সূত্র: ডয়চে ভেলে