ঢাকা, মঙ্গলবার ২৮, জানুয়ারি ২০২৫ ৮:৩০:৪৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছে না সাত কলেজ জামিন পেলেন পরীমনি শীতের দাপটে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে আজ পবিত্র শবে মেরাজ দূষণের শীর্ষে থেকে ঢাকার বাতাস আজ ‘দুর্যোগপূর্ণ’ পরীমনি আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন আজ

বাড়ি নেই, ৬ সন্তানকে নিয়ে জঙ্গলে বসবাস

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৩ পিএম, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সোমবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

তিন ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে জঙ্গলে বসবাস করছেন দেবিদ্বারের ভিটেহীন মামুন মিয়া। উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের পশ্চিম পোমকাড়ার পরিত্যক্ত ঝোঁপে কোনো রকম জীবন পার করছে পরিবারটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, চারপাশে বাঁশ ঝাড় ও বন্য গাছে ঘেরা ঝোঁপে নড়বড়ে একটি টিনের ঘর। মশা-মাছি, পোকা-মাকড়ে আবৃত স্থানটি। নোংরা পরিবেশে সন্তান-স্ত্রী নিয়ে বসতি গড়েছেন মামুন মিয়া। অতিরিক্ত মশা ও নোংরা পরিবেশের কারণে প্রায়ই অসুস্থতায় ভোগেন পরিবারের সদস্যরা।

দিনমজুর মামুনের বড় ছেলের বয়স ১২ বছর। ছোট সন্তানের বয়স তিন মাস। দারিদ্র্যের কষাঘাতে শারীরিক ভাবে পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন পরিবারের সদস্যরা। নড়বড়ে টিনের ঘরে নেয় কোনো চৌকি কিংবা খাট। মাটিতে ছেঁড়া পাটি ও পলিথিন বিছিয়ে রাত যাপন করেন কোনো রকম।


মামুন মিয়া জানান, ‘মাটিতে ছয় ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এক সাথে ঘুমাই। এখানে অনেক সাপ, পোকা-মাকড় আছে ৷ ঘরে একটি মশারীও নেই। গরীব মানুষ পরিবার নিয়ে কোনো রকম দিনপার করছি।’


শনিবার দুপুরে মাটির চুলায় কুড়ানো লাকড়ীতে ডাল রান্না করছেন মামুনের স্ত্রী নিলুফা আক্তার। তাদের দুপুরের খাবার ভাত, আলুর ভর্তা ও ডাল। এটিই তাদের ভাল খাবার। নিলুফা আক্তার বলেন, ‘এমন দিন যায় ছেলে-মেয়েদের পরিমাণ মতো ভাত দিতে পারি না। নুন দিয়ে ভাত খেয়েও দিন পার করেছি। স্বামী মামুন মাঝে-মধ্যে কাজ খুঁজে পান। গত ছ'মাসে মাছ দিয়ে ভাত খাওয়া হয়নি তাদের পরিবারের।’


মামুন মিয়া এর আগে দেবিদ্বারের বারেরা এলাকায় পরিত্যক্ত বাড়িতে বসবাস করতেন। সেখানকার জমির মালিক নতুন ঘর তৈরী করায় তিনি আশ্রয় নিয়েছেন এই পরিত্যক্ত ঝোঁপে। চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাননি বলে জানান তিনি।


বলেন, ‘আমার জমি নেই, ঘর নেই। ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছি। ছেলে সন্তানকে নিয়ে ঝোঁপে বসবাস করছি। একটি ঘর পেলে সন্তানদের নিয়ে ভালো থাকতে পারতাম।’

মামুনের তথ্যানুযায়ী তার সন্তানদের নাম ও বয়সের দিক থেকে জানান, বড় ছেলে আরিফ(১০), বড় মেয়ে শারমিন(৮), মেঝো ছেলে সজিব(৬), মেজো মেয়ে মাহিমা (৫), ছোট মেয়ে মারিয়া (১৫ মাস) এবং ছোট ছেলে আলী বাবা (১৪ দিন)।

তিনি তার পিতৃপরিচয় দিয়ে বলেন, তার বাবা একসময় বেবী টেক্সি চালাতেন, একটি ঘর ছিল তা বিক্রি করে দেন। বাবা এখন ভিক্ষাবৃত্তির আয়ে চলেন, মা পাগল হয়ে নিরুদ্দেশ, বড় ভাই সুমন মিয়া ময়মনসিংহে শশুর বাড়িতে থেকে রিক্সা চালিয়ে সংসার চালান, ছোট ভাই স্বজল চট্রগ্রামে শশুর বাড়িতে থেকে তরকারি বিক্রি করে সংসার চালান।

সুবিল ইউপি চেয়ারম্যান মুকুল ভূইয়া জানান, ‘পরিবারের খবরটি জেনে খারাপ লাগছে। আশ্রয়ণের নতুন প্রকল্প আপাতত নেই। আমার ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক গুলো ঘর পরিত্যক্ত। যার মালিক ঘরে থাকে না শুনেছি। ইউএনও মহোদয়ের অনুমতি পেলে সেখানে পরিবারটিকে আশ্রয় দেওয়া যেতে পারে।’

এই বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’