বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদা খানম: ‘চট্টগ্রামের অগ্নিকন্যা`
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৬:৫৭ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২১ শনিবার

বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদা ‘চট্টগ্রামের অগ্নিকন্যা`
শরীয়তপুরের পালং থানায় সফল অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদা খানম৷ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অস্ত্র পৌঁছে দিতেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদা খানম৷
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ি থেকেই পালং থানায় অভিযান চালানো হয়৷ আমরা দেখলাম, পালং থানা দখল করতে না পারলে শরীয়তপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের চলাফেরা ও কর্মকাণ্ড খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে৷ কারণ পাকিস্তানি সৈন্যরা যখন মাদারীপুরে থাকতো, তখন স্পিড বোটে করে তাদের শরীয়তপুর আসতে মাত্র ১০/১৫ মিনিট লাগতো৷ এছাড়া পালং থানায় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ছিলই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ অবস্থায় স্টুয়ার্ড মুজিবের নেতৃত্বে আমরা পালং থানা দখল করার পরিকল্পনা করলাম৷ তখন আমাদের বাসাতে বড় বড় চার ঘর ভর্তি অনেক মুক্তিযোদ্ধা। বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ছিল৷ আরো কিছু সামনের সারির মুক্তিযোদ্ধা এসে হাজির হলেন৷ আমি মেয়েদের নিয়ে বৈঠক করলাম৷ পালং থানা অভিযানে আমি, আমার বোন এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মেয়েদের কয়েকজন অংশ নিলাম৷’
তিনি বলেন, ‘তখন অনেক বর্ষা৷ নৌকায় করে আমাদের সেই অভিযানে যেতে হয়েছিল৷ আমরা পরিকল্পনা মাফিক সফলভাবে পালং থানায় অভিযান চালিয়েছিলাম৷ আমাদের দখলে চলে আসে পালং থানা৷ কিন্তু এরপরই আমাদের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি থাকার কথাটি জানাজানি হয়ে গেল৷
খালেদা খানম বলেন, ‘একদিন পাক সেনারা আমাদের বাড়ি আক্রমণ করতে আসে৷ তারা লঞ্চে করে আমাদের বাড়ির বেশ কাছেই চলে এসেছিল৷ কিন্তু পথে একটি খাল কাটা ছিল৷ সেই খাল পেড়িয়ে পাকসেনাদের আসতে দেরি হয়েছিল৷ ঠিক এসময়ই একটি ছোট্ট ছেলে চিৎকার করে সেনাদের আসার খবর জানিয়ে দেয়৷ ফলে সেদিন আমরা দ্রুত বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাই৷'
তিনি জানান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন নানা ঘটনা৷ খালেদা খানম বলেন, ‘আমাদের বাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি উঠে যাওয়ার পর দোমসার, দাসাত্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘাঁটি করা হয়৷ কিন্তু একটি জায়গায় খুব বেশি দিন ঘাঁটি রাখা যেতো না৷ আমি প্রায়ই নৌকাতে অস্ত্র বোঝাই করে নিয়ে যেতাম। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দিতাম৷ মুক্তিযোদ্ধাদের বলতাম, আপনারা অস্ত্র বহন না করে খালি হাতে যান৷ আমি আপনাদের জায়গামতো অস্ত্র পৌঁছে দেবো৷ তা নাহলে যোদ্ধারা পথে ধরা পড়ে যেতেন৷ কিন্তু আমি যখন নৌকায় করে অস্ত্র নিয়ে যেতাম, তখনও রাজাকার এবং পাক সৈন্যরা আমাকে নৌকা নিয়ে ঘাটে ডাকতো৷ আমি তাদের ফাঁকি দেওয়ার জন্য মাঝে মাঝে আমার চাচাতো বোনকে নতুন বউ সাজিয়ে নৌকায় নিয়ে যেতাম৷ একদিন পাক সেনারা আমাকে ডাক দেয়৷ কিন্তু আমি জানি, ধরা পড়লে নৌকাভর্তি অস্ত্র তাদের হাতে চলে যাবে৷ আবার আমি সব মুক্তিযোদ্ধার নাম-ঠিকানা জানি-সেগুলো ওরা পেয়ে যেতে পারে৷ ফলে একবার অস্ত্র পানিতে ফেলে দেওয়ার কথা ভাবি৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেন অলৌকিকভাবেই বেঁচে যাই৷ আমাদের মাঝি বেশ চালাক ছিল৷ সে পাক সেনাদের একটি বাড়ি দেখিয়ে বলল, ওই বাড়িতে যাচ্ছি৷ এরপর আমাদের ওরা ছেড়ে দিয়েছিল৷'
খালেদা খানম এবং তার সহকর্মীরা বিশ্বাস করতেন, দেশ স্বাধীন করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিতে হবে৷ তাই খালেদা গুরুত্বের সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার কাজ করতেন৷ এছাড়া গ্রামে গ্রামে ঘুরে উঠান বৈঠক করার সময় তিনি সঙ্গে কাগজ আর কলম রাখতেন৷ যুদ্ধে অংশগ্রহণে আগ্রহী নারীদের নাম-ঠিকানা লিখে নিতেন৷ পরে তাদের বিভিন্ন ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ দিতেন৷
মুক্তিযুদ্ধে বাংলার নারীদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে খালেদা খানম বলেন, আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের নারীরা যদি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এতোটা সাহায্য না করতো তাহলে এতো কম সময়ে দেশ স্বাধীন হওয়া সম্ভব ছিল না৷
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শরীয়তপুর থেকে চট্টগ্রাম ফিরে যান সংগ্রামী নারী খালেদা খানম৷ আবারও লেখাপড়া শুরু করেন। পাশাপাশি দেশগড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন৷ তিনি চট্টগ্রাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদিকা নির্বাচিত হন৷
খালেদা খানম স্কুল জীবন থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে এতোটাই সক্রিয় এবং সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন যে, সেখানকার মানুষ তাকে ‘চট্টগ্রামের অগ্নিকন্যা' বলে ডাকতো৷ পরে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে রাজধানী ঢাকায় এসে তিনি কেন্দ্রে দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷ এছাড়া প্রচার সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এই সাহসী নেত্রী৷
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন খালেদা খানম৷ এছাড়া লালমাটিয়া কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন এবং বিভাগীয় প্রধান ছিলেন তিনি৷ ২০০৯ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়েছেন৷ তবে পেশাগত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলেও দেশ গড়ার কাজে এখনও সামনের সারিতে রয়েছেন৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে
- ইনজেকশন দেওয়া তরমুজ চেনার উপায়
- আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত বিদেশিরাও
- সাংবাদিক নিয়োগ দেবে দৈনিক ডেসটিনি
- উৎসবের আমেজে শেষ হলো ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’
- সয়াবিন তেলের দাম বাড়ল লিটারে ১৪ টাকা
- ফিজিতে ৬.৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
- বর্ষবরণে রাজধানীতে দিনভর যত আয়োজন
- আজ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
- বাঙালি বিয়ে দেখতে আমেরিকা থেকে পাবনায় তরুণী
- ১৪ ঘণ্টা পর উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার রেলরুট সচল
- জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বটমূলের বর্ষবরণ
- যে কারণে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে দুই মেট্রো স্টেশন
- বর্ষবরণে ঢাবি এলাকায় উৎসবের ঢেউ, বর্ণিল শোভাযাত্রা শুরু
- রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু
- আজ পহেলা বৈশাখ, স্বাগত ১৪৩২
- ‘উইমেন ফর উইমেন,এ রিসার্চ এন্ড স্টাডি গ্রুপ’এর বার্ষিক সভা
- বইমেলায় আইরীন নিয়াজী মান্নার ছড়ার বই ‘টুটুলের কাছে চিঠি’
- মিষ্টি আলুর হালুয়া রেসিপি
- রোজার ঈদের পর দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া
- জাতীয় নাগরিক পার্টির ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন
- শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ট্রাইব্যুনালে বিএনপির অভিযোগ
- শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়
- দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করতে হবে: খালেদা জিয়া
- মাঠে ফিরছেন বিদ্রোহী সাবিনারা
- ১৮ বছর পর সব মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেলেন খালেদা জিয়া
- নারীদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে প্রকাশিত হলো ‘তুমি যেমন’
- নারীর নিরাপত্তা রক্ষায় সরকারকে আরও তৎপর হতে হবে
- যেসব অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- খালেদা জিয়ার খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি ২ মার্চ
- চবি ছাত্রলীগ নেত্রীকে পুলিশে দিল স্থানীয় লোকজন