ঢাকা, সোমবার ১৪, এপ্রিল ২০২৫ ২০:৪৮:২৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
উৎসবের আমেজে শেষ হলো ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ ১৪ ঘণ্টা পর উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার রেলরুট সচল জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বটমূলের বর্ষবরণ বর্ষবরণে ঢাবি এলাকায় উৎসবের ঢেউ, বর্ণিল শোভাযাত্রা শুরু রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু আজ পহেলা বৈশাখ, স্বাগত ১৪৩২

বীর মুক্তিযোদ্ধা নিবেদিতা: নারী মুক্তিফৌজের অন্যতম সংগঠক

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:৪৯ পিএম, ৭ মার্চ ২০২১ রবিবার

বীর মুক্তিযোদ্ধা নিবেদিতা: নারী মুক্তিফৌজের অন্যতম সংগঠক

বীর মুক্তিযোদ্ধা নিবেদিতা: নারী মুক্তিফৌজের অন্যতম সংগঠক

সিলেটে ১৯৫৪ সালের ৭ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন নিবেদিতা দাস৷ বাবা নলিনী কান্ত দাস এবং মা স্নেহলতা দাস৷ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নিবেদিতা পরিবারসহ ছাতক হয়ে ভারতের চেলা শিবিরে চলে যান৷

ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সিলেট থেকে প্রথমে ছাতক যাই৷ সিলেট থেকে নদীর তীরে কারিগরি বিদ্যালয়ের কাছে যেতেই প্রচন্ড গোলাগুলি শুরু হয়৷ এর মধ্যেই আমরা কোনমতে একটি রাত ওই বিদ্যালয়ে কাটাই৷ পরের দিন নৌকায় করে ছাতকে সিমেন্ট কারখানায় চলে যাই৷ কিন্তু পাঞ্জাবিরা হামলা চালিয়ে সেখানকার সেতুটি ভেঙে ফেলে৷ এরপর আমরা দোয়ারা বাজার যাই৷’

তিনি আরও বলেন, ‘দোয়ারা বাজারে আমরা যে বাড়িতে উঠেছিলাম সেখানে ডাকাত ছিল৷ আমাদের সবকিছুই তারা নিয়ে নেয়৷ প্রায় শূন্য অবস্থায় মাত্র তিন মাসের শিশু ছেলেটিকে নিয়ে ছুটতে ছুটতে শেষ পর্যন্ত চেলা শিবিরে পৌঁছাই৷'

শরণার্থী শিবিরে শুধু বসে বসে দিন পার না করে দেশের মুক্তির জন্য কাজ করার কথা ভাবতে থাকেন নিবেদিতা দাস৷

যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। এ সময় জাতীয় পরিষদ সদস্য আব্দুল হক এবং আওয়ামী লীগ নেতা হেমেন্দ্র দাস পুরকায়স্থের সহায়তায় সিলেটের নারীদের নিয়ে মহিলা মুক্তি ফৌজ গঠন করেন৷ একদল সাহসী নারী নিয়ে গঠিত এই বাহিনীর প্রধান ছিলেন প্রীতিলতা দাস পুরকায়স্থ এবং সম্পাদিকা ছিলেন নিবেদিতা দাস৷

তারা পাঁচ নম্বর সেক্টরের আওতায় থেকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য কাজ শুরু করেন৷ মহিলা মুক্তি ফৌজের কাজে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন ভারতের সমাজসেবী ও নারীনেত্রী অঞ্জলি লাহিড়ী৷ মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এমএজি ওসমানী এবং প্রবাসী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মহিলা মুক্তি ফৌজের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তারা অর্থ সহায়তাও করেন৷

নিবেদিতা দাস এবং তার সঙ্গীরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য তরুণদের উৎসাহিত করতেন। তাদের প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতেন৷ আহত মুক্তিসেনাদের চিকিৎসা সেবা দিতেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার তৈরি ও সরবরাহ এবং নারীদের কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ দিতেন৷ এছাড়া নারীদের তৈরি হস্তশিল্প বিক্রি করে যুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন তারা৷

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার চার দশক পেরিয়ে গেলেও এখনও সরকারিভাবে স্বীকৃতি ও কোন সুযোগ-সুবিধা পাননি নিবেদিতা দাস৷

তার ভাষায়, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার কাজের দলিল-পত্র রয়েছে৷ সেসব কাগজসহ আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছি৷ অথচ এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে স্বীকৃতি পাইনি৷’

তিনি বলেন, ‘সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাহেবের নির্দেশ মত সমাজকল্যাণ দপ্তরের জেলা কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম আমার সাথে যোগাযোগ করেন। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে আমন্ত্রণ জানান৷ কিন্তু শুধু সভা আর বৈঠকে গিয়ে কী হবে৷ তারা তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে স্বীকৃতি দেননি৷'