ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১, নভেম্বর ২০২৪ ১৯:০৩:২৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে আজও অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

‘ভুলে যাওয়া’ রোগের জন্য দায়ী করোনা, বলছে গবেষণা

লাইফস্টাইল ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩১ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

করোনা চলে গেলেও প্রতিনিয়ত তাকে স্মরণ করতেই হচ্ছে। শরীরে নিজের অস্তিত্ব ঠিকই রেখে গেছে সে। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তাই করোনা প্রভাবমুক্ত হতে পারেনি বিশ্ববাসী। মস্তিষ্কে কতটা প্রভাব ফেলেছে এই মহামারী? 

দেখা গেছে, পুরো পৃথিবীতে করোনায় আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার পরও ভুলে যাওয়া, মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ না করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধা তৈরি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা এমন রোগীর দেখা পাচ্ছেন অনেক। তাদের মতে, সব সঙ্কট কাটিয়ে উঠলেও অনেকের ক্ষেত্রে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার বছর দেড়েক পরও নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

তাহলে কি করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা কিছু ব্যক্তির মস্তিষ্কের এই ক্ষতি দীর্ঘস্থায়ী? বছর দেড়েক আগে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেন শহরের এক দল গবেষক।

এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। দেড় বছর ধরে চলা এই গবেষণার সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৩৭৬ জন। তারা প্রত্যেকেই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন এক থেকে দেড় বছর আগে। 

এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের যে সমস্যা পরিলক্ষিত হয় তাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হচ্ছে ‘ব্রেন ফগিং’ (কুয়াশাচ্ছন্ন মস্তিষ্ক)। এটি মস্তিষ্কের এমন অবস্থা যা চিন্তা করা, লক্ষ্যে স্থির থাকা, মনোনিবেশ করা, মনে রাখার মতো কাজগুলোকে কঠিন করে তোলে। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি বিভ্রান্তি, ভুলে যাওয়া এবং মানসিক স্বচ্ছতার অভাব অনুভব করতে পারেন। 

ব্রেন ফগ কোনো চিকিৎসাগত অবস্থা নয়। এটি বিভিন্ন কারণের লক্ষণ হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা বয়স্ক অথবা কোমর্বিডিটি আছে, এমন মানুষের ক্ষেত্রে এই ব্রেন ফগিংয়ের উপসর্গ দেখা যাচ্ছিল।

বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসের স্নায়ুরোগ চিকিৎসক তথা গবেষকদলের প্রধান অতনু বিশ্বাসের জানান, নতুন এই ভাইরাসটি তখনই নিত্যনতুন উপসর্গ প্রকাশ করছিল। ভাইরাসকে মারতে শরীরে ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় হয়ে উঠলে, অর্থাৎ, ‘হাইপার অ্যাক্টিভ ইমিউন স্টেট’-এ ধ্বংস হচ্ছিল মস্তিষ্কের অংশ।

এই চিকিৎসকের মতে, গবেষণায় ‘কগনিটিভ ইমপেয়ারমেন্ট’ বা স্মৃতিশক্তির সমস্যাও পাওয়া গেছে। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া, কোভিড থেকে সেরে ওঠা মানুষের চার শতাংশের মধ্যে প্রথম বার ডিমেনশিয়া দেখা গিয়েছে। ছয় শতাংশের মধ্যে পাওয়া গেছে ‘মাইল্ড কগনিটিভ ইমপেয়ারমেন্ট’। 


এই গবেষণায় এমনও দেখা গেছে যে, একটু জটিল বাক্য, উপমা, দ্ব্যর্থে কথা, গভীর চিন্তার প্রকাশ ঘটে যে সব সিনেমায়, সেগুলো বুঝতেও অনেকের সমস্যা তৈরি হয়েছে। করোনা হওয়ার আগে তাদের এসব সমস্যা ছিল না। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া, কোভিড থেকে সেরে ওঠাদের মধ্যে মোট ৪৪.৯৫ শতাংশের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ধরা পড়েছে এই গবেষণায়।

গবেষক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই গবেষণা দেখাচ্ছে, করোনা আক্রান্তদের কেবল ব্রেন ফগ সমস্যাই নয়, সুস্থ হওয়ার পরেও তাঁদের অনেকের মস্তিষ্কে গঠনগত পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ এমআরআই-এ ধরা পড়েছে স্নায়ুকোষ শুকিয়ে যাওয়া বা স্নায়ুকোষের গঠনে বদল। 

এসবের কারণেই ভুলে যাওয়া, অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশনের মতো মনস্তাত্ত্বিক সমস্যাও দেখা গিয়েছে। এখন অব্দি গবেষণায় যা বিশ্লেষণ করে পাওয়া যাচ্ছে, তা হলো কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরে ডিমেনশিয়ার মতো রোগের সূত্রপাত ঘটেছে বেশ কিছু মানুষের মধ্যে। এটি চিরস্থায়ী বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোগের শুরুতেই যাতে চিকিৎসা আরম্ভ করা যায়, সেই সতর্কতা প্রয়োজন বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

তথ্যসূত্র: এবিপি, নিউজ মেডিকেল, এনআইএইচ