ঢাকা, শনিবার ২৮, ডিসেম্বর ২০২৪ ১:৩৯:৩৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একসঙ্গে চলবে: ড. ইউনূস সবজিতে স্বস্তি, চাল ও মাছের দাম ঊর্ধ্বমুখী টেকনাফে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের ৭২ যাত্রীকে উদ্ধার কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী কাবেরী আটক ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন’ নিয়ে জাতীয় সংলাপ শুরু আজ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ সাংবাদিক নিহত লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা

ভোগান্তি পেরিয়ে জমেছে কক্সবাজারের ঈদবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৫৯ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দেখতে দেখতে পার হয়েছে পবিত্র রমজানের ২০ দিবস। আর মাত্র সপ্তাহ দেড়েক পর ঈদুল ফিতর। করোনার পর কক্সবাজার পৌরবাসী ও জেলা শহরের মার্কেটমুখী ক্রেতাকে ভোগাচ্ছে সড়ক মেরামত। শহরের প্রধান ও প্রায় উপ-সড়ক, ড্রেন নতুন করে নির্মাণের ফলে যান চলাচলতো দূরে থাক পায়ে হাঁটাও দুরহ হয়ে পড়েছে। ফলে রমজানের শুরু থেকে সব শ্রেণি পেশার মানুষ মার্কেটবিমুখ ছিল। ফলে রমজানের ১৮ দিবস পর্যন্ত আশানুরূপ কেনাবেচা হয়নি কোথাও।

কিন্তু শুক্রবার বিকেল থেকে ধীরে ধীরে বাড়ছে বিকিকিনি। এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার নিউ মার্কেটের খোয়াব ফ্যাশনের মালিক লুনা আকতার ও তুষার তুহিন।

তাদের মতে, গত দুটি বছর করোনার থাবায় নাজেহাল হয়েছে জনজীবন। এ বছর করোনার বিধিনিষেধমুক্ত থাকলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। হয়তো এসব কারণে ঈদ বাজারমুখী ক্রেতার উপস্থিতি আশানরূপ ছিলো না। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে কিছুটা ক্রেতা আসা শুরু হয়েছে।

আগে পরিবারের সবাই একসঙ্গে বাজারে এলেও এখন হয় পরিবারের পুরুষ না হয় নারী অভিভাবক একা এসে সবার কাপড় পছন্দ করছেন।

ঈদবাজার করতে আসা শিউলি আকতার বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাজার করতে আসার মজাই আলাদা। কিন্তু কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কসহ মার্কেট কেন্দ্রীক সকল প্রয়োজনীয় উপ-সড়কও মেরামত করা হচ্ছে। ফলে যানবাহনে চলা দূরে থাক পায়ে হাঁটাও কষ্টকর। গত দুদিনের বৃষ্টিতে সড়কে ফেলা মাটিগুলো কয়েক ইঞ্চি কাদায় ভরে আছে।

শুক্রবার রাত ও শনিবার  সকালে গিয়ে দেখা যায়, ঈদে উৎসবের আমেজ ছড়াতে রমজানের শেষ সময়ে এসে কেনাকাটায় মনোযোগী হয়েছেন সব শ্রেণির মানুষ। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীরা অগ্রিম বেতন-বোনাস না পেলেও অনেকে বাড়ির ছোট-বড় সদস্যদের চাপাচাপিতে ধার-দেনায় হলেও বাজারে পা ফেলছেন। বাজারে আসছেন প্রবাসীদের পরিবার-পরিজনও। এতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কক্সবাজারের ঈদবাজার। ফলে জেলা, উপজেলা ও পৌর শহরের বাণিজ্যিক এলাকার বিপনীবিতানগুলো মুটামুটি লোকারণ্য। চলছে মধ্যরাত পর্যন্ত বিকিকিনি।

জেলা শহরের নিউ মার্কেট, আপন টাওয়ার, ফিরোজা শপিং কমপ্লেক্স, পৌর সুপার মার্কেট, ফজল মার্কেট, সমবায় সুপার মার্কেট, এ ছালাম মার্কেট, ইডেন গার্ডেন সিটি, সী-কুইন মার্কেট, বাটা মার্কেট, ডাবা বাজার, মসজিদ মার্কেট ও হকার মার্কেটসহ বিপনীবিতানগুলোতে পুরুষের চেয়ে নানা বয়সী নারী ক্রেতার ভিড় রয়েছে। তাল মিলিয়ে আসছে কিশোর ও তরুণরাও।

ঈদের পোশাকে মধ্যবয়সী কিংবা নব বিবাহিতা নারীরা বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের শাড়ি খুঁজলেও তরুণী ও কিশোরীদের পছন্দ থ্রি-পিস ও ভারতীয় সিনেমা ও সিরিয়ালের চরিত্রের সঙ্গে মেলানো নামের নানা পোশাক।

নির্দিষ্ট কোনো ব্র্যান্ড না থাকলেও ছোটদের জন্য খোঁজা হচ্ছে লেটেস্ট ব্র্যান্ডের নানা ধরনের পাঞ্জাবি ও মেয়েদের ড্রেস। এসবের সঙ্গে কেউ কেউ চাচ্ছেন পুরোনো শিপন, থ্রি-পিস, জিন্স প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতানসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক।

কক্সবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, রমজান শুরুর পর থেকেই বাজার খুবই মন্দা। ঈদে বিনিয়োগ উঠে আসবে কিনা তা নিয়ে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে কিছুটা বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। এতে ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।

শুধু কাপড় নয়, বাড়ছে পাদুকা বিক্রিও। শহরের পান বাজার সড়কের বাটা, ডাটা, মসজিদ মার্কেটগুলো দেশি-বিদেশি কোম্পানির নানা ডিজাইনের জুতার পশরা সাজিয়ে রেখেছে। বেড়েছে প্রসাধন সামগ্রী বিক্রিও।

ফজল মার্কেটের অংকুর বিপনীর মালিক আইনজীবী কামরুল হাসান বলেন, গত দু’বছর করোনার কারণে বাজার জমেনি বললেই চলে। এবার করোনার খড়গ না থাকলেও উন্নয়নের প্রসববেদনায় ভোগান্তিতে পড়েছে ক্রেতারা। ফলে চিন্তিত ব্যবসায়ীরা। তবে হালকা বিকিকিনি বেড়েছে।

জেলার নয় উপজেলার সব মার্কেটগুলোতে মোটামুটি বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। গ্রামের লোকজন প্রথম ১০ রোজার পর থেকে বাজারে আসা শুরু করে পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দের পোশাক কিনেছেন। বাকিরা এখনও কিনছেন বলে দাবি করেছেন তারা। এদিকে চুরি-ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে বিপনী বিতানগুলোর সামনে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুকুল।

কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, কক্সবাজার ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতিভুক্ত প্রায় অর্ধশত মার্কেটসহ উপজেলার প্রতিটি মার্কেটে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত বলয় রয়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে মার্কেটের নিজস্ব কর্মীও।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাছানুজ্জামান জানিয়েছেন, ঈদে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আগে থেকেই নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মার্কেটের সামনে বসানো রয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশ পাহারা। আগে থেকেই বলা হয়েছিল, কেউ কোথাও কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হলে পুলিশকে অবহিত করতে। শুধু মার্কেট নির্বিঘ্নকরণ নয়, চলাচলেও প্রশান্তি দিতে সড়কে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা। তবে নির্মাণাধীন সড়কের কারণে চলাচলে একটু ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।