ভোলার চরাঞ্চলে মহিষ পালন প্রধান জীবিকা
ফিচার ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৫:৪৭ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার
ভোলার চরাঞ্চলে মহিষ পালন প্রধান জীবিকা
দ্বীপ জেলা ভোলায় মহিষ পালন একটি ঐতিহ্যগত পেশা। এখানকার অর্ধশতাধিক চরের মানুষ বংশপরাম্পরায় মহিষ পালন করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক বিছিন্ন দ্বীপ চরগুলোতো প্রায় দুইশ' বছর ধরে মহিষ বাতান আকারে পালন করে আসছেন চাষীরা। প্রতিটি মহিষের বাতানে দু’শ থেকে হাজার পর্যন্ত মহিষ পালন হয়ে থাকে। যা ঘরোয়া পরিবেশে একেবারেই অসম্ভব।
কিন্তু বর্তমানে এ মহিষ পালন অধিক লাভজনক হওয়ায় স্থানীয়রা বসত বাড়ির গোয়ালঘরে পালন শুরু করেছেন। মহিষ পালনের ব্যাপকতায় এলাকার দরিদ্র কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। একদিকে মহিষ বিক্রি অন্যদিকে মহিষের দুধ বিক্রিতে লাভবান হয়ে উপকূলের চাষীরা দেখছেন দিন বদলের স্বপ্ন। কালের বিবর্তনে দক্ষিণ উপকূলবাসী আধুনিক নিয়মে উন্নতজাতের মহিষ পালন করে নিজেরা যেমনি স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি এখানকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তাদের অর্থনৈতিক ভিতকে আরো মজবুত করে গড়ে তুলছেন।
জানা গেছে, জেলা সদর ভোলা, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক বিচ্ছিন্ন চর রয়েছে। এসব চরে সরকারি হিসেবে ২ লক্ষ ৬০ হাজার মহিষের হিসেব থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষাধিক। এখানে ৯৭ টি মহিষের বড় বাতান (খামার) সহ প্রায় ৭০৫ দুগ্ধ খামার রয়েছে। এসব খামার থেকে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার লিটার দুধ আসে। এসব দুধ ও দুধের তৈরি দই দিয়ে জেলার ২১ লক্ষ মানুষের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা পূরণ করছে। নদীর মাঝখানে এসব চরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এলাকা জুড়ে সবুজ ঘাসের সমারোহ। আর এসব চরে পালন করা হয় হাজার হাজার মহিষ। সবুজ ঘাস খেয়ে পালিত হয় এসব মহিষ। যুগ যুগ ধরে বংশপরাম্পরায় বহু পরিবার এখানে মহিষ ও দই বিক্রির পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।
অনেকে আবার নিজস্ব মহিষের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন করে দই তৈরি করেন। দই ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন চরে গড়ে উঠেছে শত শত মহিষের বিশাল বাতান। প্রতিদিন সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গেএসব বাতান থেকে শত শত লিটার দুধ আসতে শুরু করে শহর ও বাজারগুলোতে। গ্রামাঞ্চলে হাটের দিনে মহিষা দই এর টালির পসরা সাজিয়ে বসেন অনেক বিক্রেতারা। বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হয় মহিষের দুধের দই। নির্ভরযোগ্য তথ্যমতে,প্রায় ১২২০ সালে বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেগে উঠে দ্বীপ জেলা ভোলা। এরপর এখানে গত ৪শ' বছর ধরে ক্রমশই জনবসতি গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হলে তারা মহিষ, গরু, ছাগল, ভেড়াসহ নানা জাতের গবাদিপশু পালন শুরু করেন। ভোলা দ্বীপ জনপদ হওয়াতে এখানকার ছোট বড় অসংখ্য চরে মহিষ পালনে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। বিশেষ করে অবস্থা সম্পন্ন গৃহস্থ পরিবারগুলোর শত শত মহিষ পালন করতে তেমন বেগ পেতে হয়না।
স্থানীয় জানান, প্রায় ২শ' বছর ধরে এ জেলায় মহিষের দুধ থেকে কাঁচা দই উৎপাদন শুরু করে। যা ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু হয়ে বর্তমান সময়েও জনপ্রিয়। এখানে বিয়ের অনুষ্ঠানসহ এমন কোন সামাজিক অনুষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে দই দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়নি।
মহিষ পালনকারী ভোলার চরের মিন্টু খাঁ বলেন, মাত্র ৫০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ২০০১ সালে চারটি মহিষ নিয়ে যাত্রা শুরু করি। এখন আমার ৪১টি মহিষ। বর্তমানে তার দুই একর জমি হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২০ লাখ টাকা। এ মহিষের দুধ বেঁচে তিনি তার সংসারের খরচ মেটান। ভোলায় এখন মহিষ পালনে চরাঞ্চলের সবাই ঝুঁকছে। এতোদিন শুধু বাতানে পালন হলেও এখন তা বাড়িতে বাড়িতে ঘরোয়া পরিবেশেও পালন হচ্ছে। মহিষ পালনে দিন বদলের এ গল্প জেলার অনেক কৃষকের।
ভোলার চর বৈরাগিয়ার মহিষের বাতান মালিক জাকির হাওলাদার বলেন, তার ৯৫টি মহিষ রয়েছে। এটা আমার দাদা পালন করেছে। তারপর চাচা,এখন আমি করছি। তবে আগে মহিষ একটু সামান্য রোগেই মরে যেত। তাই অনেকে বেশি পালন করতে চাইতো না। কিন্তু এখন কৃমি নাশক ওষুধও বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন দেয়ার কারণে মহিষ মারা যাওয়ার ঝুঁকি কমেছে। অন্যদিকে মাংস ও দুধের দাম বাড়ার কারণে লাভের পরিমানও বেড়েছে। তাই অনেকের মতো আমারও বেশি মহিষ পালনের আগ্রহ বেড়েছে। আমি এ মহিষ পালন করে প্রায় ৫ একর জমি কিনেছি।
মহিষের বাতানের অপর মালিক ইউনুছ মিয়া বলেন, দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরে তাদের বাতানে প্রায় আড়াই শত মহিষ রয়েছে। যা তারা চার পুরুষ ধরে লালন করে আসছেন। দৈনিক এখান থেকে ১৩০ থেকে ১৫০ কেজি দুধ হয়। জেলায় অনেকেই ঐতিহ্য ধারণ করে মহিষ পালন করে আসছেন। যা তাদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
স্থানীয় দধি বিক্রেতারা বলেন, সাধারণত দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের দই (টালির) চাহিদা বেশি। বর্তমানে দেড় কেজি ওজনের দধি ২৫০ ও দুই কেজি ৩শ' টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ দই থেকে মাখন, ঘি ও ঘোল বানানো হয়। মাখনের কেজি ৯শ' ও ঘিয়ের কেজি ১৬ শত ১৮ শত টাকায় বিক্রি হয়। এর ভালো দাম পাওয়ায় তাদের লাভও ভালো হয়। তবে দুধের দাম বৃদ্ধি পেলে দইর দামও বেড়ে যায় বলে জানান তিনি।
এ বিষয় ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ভোলায় সরকারী হিসেবে জেলায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার মহিষ রয়েছে।
এতে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার লিটার দুধ আসে। এগুলো জলা মহিষ নামে পরিচিত। মাংস ও দুধ উৎপাদনের জন্য তারা এসব মহিষ পালন করে থাকে।
তিনি বলেন, আমাদের মুদ্রাজাতের মহিষ উৎপাদনের জন্য বাগেরহাট ও টাংগাইলে দু'টি মহিষ প্রজনন খামার রয়েছে। সেখান থেকে ভোলাতে আমরা ১৫০টির মত চেলা মহিষ বিতরণ করেছি । এ চেলা মহিষ দিয়ে বাতানের মহিষগুলোকে কোড়াছ করে উন্নত জাতের মুদ্রাজাতের মহিষ উৎপাদনের জন্য কাজ করছি, যাতে প্রতিটি মহিষ প্রথম থেকেই ১০ থেকে ১৫ কেজি দুধ উৎপাদন করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমরা ভোলা জেলায় ১শ' একর জমির উপর ডি এল আরই ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রাণালয়ের যৌথ উদ্যোগে উন্নত মুদ্রাজাতের মহিষ উৎপাদনের খামার করার কাজ করে যাচ্ছি, আশা করি ভোলার মহিষের বাতান মালিকরা খুব শীঘ্রই এর সুফল পাবেন। সব মিলিয়ে দ্বীপাঞ্চল ভোলার জনপদে আধুনিক প্রযুক্তিতে মহিষ পালন ও এর ব্যাপক প্রজনন সক্ষমতা
দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে ঘুরে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
- শুক্রবার থেকে খুলছে সাফারি পার্ক
- ফের কমলো স্বর্ণের দাম, ভরিতে কত
- দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
- শেখ হাসিনাকে নিয়ে যা জানাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
- দৃষ্টি হারানোর ঝুঁকিতে ৩৪ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগী
- ছাদখোলা পর্যটন বাস এখন চট্টগ্রামের ব্র্যান্ড
- বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, তাপমাত্রা নিয়ে নতুন বার্তা
- লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে অভিনেত্রী নিখোঁজ
- এবার একুশে বইমেলা কোথায়, জানালেন উপদেষ্টা ফারুকী
- জাতীয় নির্বাচন কবে জানালেন ড. ইউনূস
- মার্কিন দপ্তরে সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল প্রসঙ্গ
- যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক হচ্ছেন তুলসী
- জনসচেতনতার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের প্রকোপ কমিয়ে আনা সম্ভব
- আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু বিপিএল
- ডেঙ্গু কেড়ে নিলো ৫ প্রাণ, হাসপাতালে সহস্রাধিক
- জেনে নিন বিমানবন্দর নেই যে সব দেশে
- ২৬ তারিখ কী ঘটবে, কেন এত আলোচনা!
- অফিসে ‘গোপন কক্ষ’ নিয়ে মুখ খুললেন মালা খান
- ঘুরে আসুন পানামসহ না.গঞ্জের পাঁচটি পর্যটন স্পট
- বর্ষার রাণী কেয়া ফুল: কত যে বাহার
- ড.ইউনুসকে তসলিমা নাসরিনের খোলা চিঠি
- বৃষ্টি নিয়ে ফের দুঃসংবাদ
- বিশ্ব হার্ট দিবস আজ
- সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গ্রেপ্তার
- ফের অভিষেকের সঙ্গে বিচ্ছেদ গুঞ্জন
- হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
- হারিয়ে যাচ্ছে কদম ফুল
- নারী বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা বাংলাদেশের
- হেমন্তে ছাতিম ফুল সুগন্ধ ছড়িয়ে যায়
- রাজধানীতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ