ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১, নভেম্বর ২০২৪ ১৬:১৭:২৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে আজও অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৩১ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বাংলা সাহিত্যের অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী আজ। উনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও নাট্যকার তথা বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। 

মহাকবি মাইকেল মদুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে বিখ্যাত দত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন জমিদার। মা ছিলেন জাহ্নবী দেবী। মধুসূদনের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় মা জাহ্নবী দেবীর কাছে। জাহ্নবী দেবীই তাকে রামায়ন,মহাভারত,পুরাণ প্রভৃতির সঙ্গে সুপরিচিতি করে তোলেন। 


তেরো বছর বয়সে মদুসূদন দত্ত কলকাতা যান এবং স্থানীয় একটি স্কুলে কিছুদিন পড়াশোনার পর তিনি সে সময়কার হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। তিনি বাংলা, ফরাসি ও সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষালাভ করেন। এরপর  তিনি কলকাতার বিশপস কলেজে অধ্যয়ন করেন। এখানে তিনি গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখেন। পরবর্তীতে আইনশাস্ত্রে পড়ার জন্য তিনি ইংল্যান্ড যান। 


মাইকেল মদুসূদন দত্ত বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক ছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের পাশাপাশি ইংরেজি সাহিত্যেও অসামান্য অবদান রাখায় বিশ্ববাসী এ ধীমান কবিকে মনে রেখেছে কৃতজ্ঞচিত্তে। পাশ্চাত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ১৮৪৩ সালে খৃষ্টধর্মে দিক্ষিত হন এবং মাইকেল উপাধি গ্রহণ করেন। 

ইংরেজি সাহিত্যে তাঁর কীর্তির যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় তিনি মনক্ষুন্ন হয়ে পড়েন। ইংরেজি সাহিত্য থেকে দূরে সরে বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। বাংলা সাহিত্যে মাইকেল মদুসূদন দত্তের কালজয়ী রচনাবলীর অন্যতম হলো মেঘনাদবধ কাব্য, দ্য ক্যাপটিভ লেডী, শর্মিষ্ঠা, ক্যাপটিভ লেডী, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, কৃষ্ণকুমারী, বুড়ো শালিকের ঘাঁড়ে রোঁ, পদ্মাবতী, ব্রজঙ্গনা কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, হেক্টরবধ ও চতুর্দশপদী কবিতাবলী। 

মাইকেল মদুসূদন দত্ত ১৮৫৯ সালে রচনা করেন পৌরাণিক নাটক শমিষ্ঠা। ১৮৬০ সালে রচনা করেন একেই বলে সভ্যতা, বুড়ো শালিকের ঘাঁড়ে রোঁ এবং পদ্মাবতী নাটক। পদ্মাবতী নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। এরপর ১৮৬১ সালে মেঘনাদ বধ মহাকাব্য, ব্রজঙ্গনা কাব্য, কৃষ্ণকুমারী নাটক, ১৮৬২ সালে পত্রাকাব্য বীরাঙ্গনা এবং ১৮৬৬ সালে চতুর্দশপদী কবিতাবলী রচনা করেন।

এ মহাকবির জন্মের কারণেই সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ নদ জগৎবিখ্যাত। কালের প্রবাহে কপোতাক্ষ নদের যৌবন বিলীন হলেও মাইকেলের কবিতার কপোতাক্ষ নদ যুগে যুগে বয়ে চলেছে। ১৮৭৩ সালে ২৯ জুন কলকাতায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন এ মহাকবি। কলকাতায় তাকে সমাধিত করা হয়।

কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তুহিন হোসেন বলেন, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির জন্মভিটা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের পাড়ে সাগরদাঁড়িতে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে নয়দিনব্যাপি মধুমেলা। হাজারো মধুভক্তের উপস্থিতিতে প্রতিদিন মুখরিত হচ্ছে মেলা প্রাঙ্গণ। মধুমঞ্চের আলোচনা সভা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্যান্ডেলে সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী, মৃতুকূপসহ প্রতিদিনের বিভিন্ন আকর্ষনীয় খেলাধুলা দর্শকদের নজর কাড়ছে।

সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বলেন, মেলা শুরুর দিন থেকে সাগরদাঁড়ি এলাকাসহ আশপাশের গ্রামে আত্মীয়-স্বজন এসে ‘মধুমেলা’ উপভোগ করছেন। এ মেলাকে কেন্দ্র করে অনেকেই মেয়ে-জামাই, বন্ধু-বান্ধবসহ আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দিয়েছেন। প্রতি বাড়িতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। 

অন্যবারের তুলনায় এবারের মেলায় অনেক বেশি দর্শনার্থী ও মধুপ্রেমীদের সমাগম ঘটছে বলে তিনি জানান।

যশোর জেলা প্রশাসন ও কেশবপুর উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত মধুমঞ্চে প্রতিদিন মহাকবির স্মৃতিময় জীবনী নিয়ে আলোচনা সভায় দেশবরেণ্য খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকরা উপস্থিত থাকছেন। মধুমেলায় গ্রামীণ কুটির শিল্পপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রায় ৪শ’ স্টল বসেছে।