ঢাকা, শুক্রবার ২২, নভেম্বর ২০২৪ ১০:৩৮:২০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ের তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা ডেঙ্গুতে একদিনে নয়জনের প্রাণহানী সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া, স্বাগত ও ধন্যবাদ জানালেন ড. ইউনূস রাজধানীতে আজও অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার

মা দিবসের প্রবর্তক অ্যানের অজানা কাহিনী

নীলা দাশ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১২ এএম, ৮ মে ২০২২ রবিবার

মা দিবসের প্রবর্তক অ্যান

মা দিবসের প্রবর্তক অ্যান

সাদা ফুলের সাজে প্রথমবার ‘মা দিবস’ পালন করেছিলেন তিনি। মায়েদের জন্য একটি দিন থাকা দরকার, আন্দোলনের মাধ্যমে সে কথা বুঝিয়েছিলেন রাষ্ট্রকে। অথচ শেষজীবনে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে আফশোস করতেন প্রতি মুহূর্ত। জানুন মা দিবসের প্রবর্তকের অজানা কাহিনী...।

সময়টা ১৯০৭ সাল। আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে প্রথমবার 'মাদার্স ডে' পালিত হয়েছিল। অ্যানা জার্ভিস নামের এক মার্কিন নারী তার মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিসের মৃত্যুদিন একটু অন্যভাবে পালন করার কথা ভেবেছিলেন। আসলে অ্যান সমাজকর্মী ছিলেন। তিনি নারীদের জন্য কাজ শুরু করেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কাজ করতেন তিনি। তার সমস্ত কাজের প্রভাব পড়েছিল নিজের নবম শিশুকন্যাটির উপর। 

একদিন ছোট মেয়েটির সামনেই ধর্মপ্রাণা অ্যান হাত জোড় করে বলেছিলেন, 'আই হোপ অ্যান্ড প্রে, দ্যাট সামওয়ান, সামটাইম, উইল ফাউন্ড আ মেমোরিয়াল মাদার্স ডে কমেমোরেটিং হার ফর দ্য ম্যাচলেস সার্ভিস সি রেন্ডার্স টু হিউম্যানিটি ইন এভরি ফিল্ড অফ লাইফ.. সি ইজ এনটাইটেলড টু ইট।' বাংলায় অনুবাদ করলে যার অর্থ হয়, 'আমি আশা করি, প্রার্থনা করি, একদিন কেউ না কেউ, কোনও মায়েদের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তাঁরা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটা তাদের অধিকার।' 

মায়ের প্রতিটি শব্দ মনে রেখেছিলেন অ্যানা। আর সেই কারণেই অ্যানের মৃত্যুর দিনটিকে (১২ মে, ১৯০৭) সারাবিশ্বের প্রতিটি মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তিনি।

সে বছর আমেরিকাতে প্রথমবার মা দিবস পালিত হল। এরপর ১২ মে দিনটিকে মার্কিন জাতীয় মাতৃ দিবস করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন তিনি। পরের বছর ফিলাডেলফিয়া জুড়ে পালিত হয় 'ন্যাশনাল মাদার্স ডে'। পাঁচ বছরের মধ্যে আমেরিকায় অ্যানার দাবি মেনে নেওয়া হয়। অবশেষে আনার প্রচেষ্টা সফল হয়। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবেও ঘোষণা করা হয়। আমেরিকার আশেপাশের দেশগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে মা দিবস পালনের রীতি।

জার্ভিস এক বিশেষ রীতি চালু করেছিলেন। তিনি নিজের সাজে সাদা কারনেশন ফুল ব্যবহার করে, শুধু নিজের নয় অপরের মায়েদেরও শ্রদ্ধা জানাতেন। পরে ওই রীতিকে এগিয়ে নিয়ে যান আমেরিকার নারীরা। যারা মারা গেছেন, তাদের পাশাপাশি যারা জীবিত রয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য লাল কিংবা গোলাপি রঙের কারনেশন ফুলের ব্যবহার শুরু হয়। ধীরে ধীরে নানি-দাদি-মা কিংবা খালা-ফুফুদেরও সম্মান জানানো শুরু হয় ওই দিনে। 

যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে। ক্রমেই দিবসটি ঘিরে বাণিজ্য শুরু হয়। এতে লঙ্ঘিত হয় দিবসটির মূল চেতনা। মর্মাহত হন আনা। দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি। নারীরা একে অপরকে উপহার দিতে শুরু করলে পুঁজিপতিদের রমরমা ব্যবসা বেড়ে যায়। বিষয়টি কোনওদিনই মেনে নিতে পারেননি অ্যানা। সেই কারণে শেষজীবন অবধি আর কখনও মা দিবস পালন করেননি তিনি। ১৯৪৮ সালের ২৪ নভেম্বর প্রাণ হারান মাতৃ দিবসের প্রবর্তক অ্যানা জার্ভিস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪।

অনেক দেশে আজও ১২ মে মা দিবস পালিত হয়। যদিও কয়েকটি দেশে বছরের অন্যান্য দিনকেই মাতৃ দিবস আখ্যা দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, মধ্যযুগে যারা পরিবারের থেকে আলাদা থাকতেন, তারা ইস্টারের আগে মাসের চতুর্থ রোববার বাড়ি ফিরে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। দীর্ঘদিন ধরেই ওই রীতির চল ছিল। আর সেই কারণে ওই দিনই মাতৃ দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে ব্রিটেনবাসী। তবে আধুনিক যুগে প্রবেশ করার পর থেকেই মে মাসের দ্বিতিয় রোববার 'মাদার্স ডে' হিসেবে স্বীকৃত হয়।