ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১, নভেম্বর ২০২৪ ২২:১৫:২৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ের তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা ডেঙ্গুতে একদিনে নয়জনের প্রাণহানী সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া, স্বাগত ও ধন্যবাদ জানালেন ড. ইউনূস রাজধানীতে আজও অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার

মেয়েরা কেন সাংবাদিক হতে পারবে না!

সজীব সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:২৭ এএম, ৪ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার

সজীব সরকার, সহকারি অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি।

সজীব সরকার, সহকারি অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি।

প্রায় দশ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে শিক্ষকতা করছি। এখন পর্যন্ত যাদের পড়িয়েছি আর এখন যাদের পড়াচ্ছি, সেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের প্রায় শতভাগই বলে, তারা বাবা-মা এবং অন্য সবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়তে এসেছে।

মেয়েদের জিজ্ঞেস করলে ওরা বলে, 'সাংবাদিক হতে চাই' বললে বাবা-মা কিংবা আত্মীয়-প্রতিবেশিরা বকা-ঝকা করে, অনেকে পরিহাস করে; তারা বলে, 'সাংবাদিক হয়ে ক্যামেরা নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো আর ছেলেদের সাথে গা ঘেঁষাঘেষি করে খবর যোগাড় করা মেয়েদের কাজ না।' ঘটকরাও নাকি বলে, 'ক্যামেরা নিয়ে এভাবে ছেলেদের সাথে রাস্তায় ঘুরে বেড়ালে মেয়ের বিয়ে হবে না।' আর মিডিয়ায় কাজ করলে মেয়ে 'খারাপ' হয়ে যাবে - এটি সবার দৃঢ় বিশ্বাস। তাদের একবার ভেবে দেখা দরকার, মেয়েরা মিডিয়াতে গিয়ে যেমন 'খারাপ' হতে পারে, তেমনি মিডিয়াতে না গিয়েও হতে পারে। আর মেয়েরা কি একা একা 'খারাপ' হতে পারে? একটি মেয়ের 'খারাপ' হতে হলে তার সঙ্গে একটি ছেলেকে দরকার হয়; সেই ছেলেটির কথা কখনো কেন বলা হয় না? আমরা কখনো একটি ছেলেকে বলি না, 'মিডিয়ায় গেলে তুমি খারাপ হয়ে যাবে, তোমার বিয়ে হবে না'; তাহলে মেয়েকে কেন বলবো?

অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিকেও পরিহাস করতে শুনি; মেয়েরা সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ে শুনে অনেকেই বিস্মিত হন। কেউ কেউ বলেন, 'মেয়েদের দিয়ে সাংবাদিকতার মতো কঠিন কাজ হবে না, শুধু শুধুই ওদের পড়াচ্ছেন- পুরোটাই পণ্ডশ্রম।' আজ থেকে ৫০ বছর আগে হলে মেয়েরাও যে দারুণ সাংবাদিক হতে পারে, তার দু-চারটি উদাহরণ দিতাম। কিন্তু ২০১৯ সালে এসে সেই উদাহরণ টেনে মেয়েরাও যে সাংবাদিক হতে পারে, তা প্রমাণের চেষ্টা করা বাহুল্যমাত্র; কেননা কেবল বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীজুড়ে গণমাধ্যমে আজ নারীদের জয়-জয়কার। এই ব্যক্তিরা হয়তো চারপাশের খোঁজ-খবর রাখেন না, অথবা রাখতে ভয় পান।

মেয়েরা গণমাধ্যমে রিপোর্টিং থেকে শুরু করে ক্যামেরার কাজে, উপস্থাপনা কিংবা ব্যবস্থাপনার কাজে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। মেধা, দক্ষতা বা যোগ্যতা না থাকলে হাজারো বাধা-বিপত্তির মধ্যেও অন্তত বাংলাদেশে মেয়েরা ভালো সাংবাদিক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারতো না। আর বাধার পরিবর্তে সবার সহযোগিতা পেলে আমাদের দেশের মেয়েরা-নারীরা আরো কতো দূর যাবে!

আমাদের মেয়েদের পাশে থাকুন, সহযোগিতা করুন। পৃথিবীতে এমন কোনো পেশা বা কাজ নেই, যা পুরুষ পারে আর নারীরা পারে না কেবল নারী হওয়ার কারণে; নারী বা পুরুষ হওয়া এসব ক্ষেত্রে একমাত্র যোগ্যতা বা অযোগ্যতা নয়, মেধা আর দক্ষতা জরুরি।

মেয়েরা সব কাজই করতে পারে - এ সত্য যতো দ্রুত মেনে নেয়া যাবে, সমাজের ততোই মঙ্গল হবে।

সজীব সরকার : সহকারি অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি।
ইমেইল : [email protected]