ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬, নভেম্বর ২০২৪ ০:০৩:১৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে ব্রাজিলে বাস খাদে পড়ে ২৩ জনের প্রাণহানী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ ১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী

রাজধানীর অর্ধশত রেস্তোরাঁয় অভিযান, আটক ৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:২৯ এএম, ৪ মার্চ ২০২৪ সোমবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, মিরপুর, বসুন্ধরা ও উত্তরার প্রায় অর্ধশত রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অভিযানে এসব রেস্তোরাঁ–ভবনে জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে কি না তা ঘুরে দেখেছে তারা। এ সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ভয়াবহ অনিয়ম নজরে আসায় কয়েকটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক ও কর্মীসহ অন্তত ৩৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এসব খাবারের দোকানে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ বলছে, নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে এসব রেস্তোরাঁ–ভবনে জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে কি না, তা দেখতেই এই অভিযান চালিয়েছেন তারা। এ সময় জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি না থাকা, সিঁড়ি আটকে রান্নাঘর বসানো ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপকও রয়েছেন। এছাড়া যেসব রেস্তোরাঁয় ছোটখাট অনিয়ম পাওয়া গেছে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা রেখে সতর্ক করা হয়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম ধরা পড়েছে ধানমন্ডি এলাকায়। রোববার রাতে এখানকার ১৯টি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, অভিযানকালে কয়েকটি খাবারের দোকানের ম্যানেজারসহ ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কয়েকজনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর গুলশান এলাকায় ১০টির মতো খাবারের দোকানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এ ব্যাপারে গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা দেখার চেষ্টা করেছি, খাবারের দোকান থাকা ভবনের জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি রয়েছে কি না। সিঁড়িতে বিপজ্জনক কোনও কিছু রাখা হয়েছে কি না, সেটাও দেখছি। দু–একটি ছাড়া সব কটির পরিবেশ সুন্দর ছিল। তাদের ব্যবস্থাপনা দেখে আমরা সন্তুষ্ট।’

উত্তরা এলাকার অন্তত ২০টি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক পার্থ প্রতীম। নগরবাসীর নিরাপত্তা রক্ষায় তাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া বসুন্ধরা এলাকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। এ বিষয়ে ভাটারা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, অভিযানে খোঁজার চেষ্টা করেছি রেস্টুরেন্টে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে কি না এবং যথাযথ অনুমতি আছে কি না। এর মধ্যে ফুটপাত দখল করে বিভিন্নভাবে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করার দায়ে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে ফুটপাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খাবারের দোকানগুলোতে জলন্ত চুলা ও গ্যাস সিলিন্ডার উচ্ছেদ করে পুলিশ। এসময় আটক করা হয় ৮ জনকে।

নিউমার্কেট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ফুটপাত, মার্কেটের রাস্তা কিংবা সরুপথে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে যারা বিভিন্ন ভাজাপোড়া তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। কেননা এই এলাকাটি অত্যন্ত জনবহুল এবং জনগুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন কাজে আসেন। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, আইন মোতাবেক আমরা এখানে কাজ করছি। অভিযানে মানুষের চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে এমন ৮ জনকে আমরা আটক করেছি এবং সড়কের মালামাল অপসারণ করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

গত বৃহস্প‌তিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১১ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এখনও। তবে তারা কেউই শঙ্কামুক্ত নন। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।

গ্রিন কোজি কটেজ নামে ৭ তলা ওই ভবনের একটি তলা ছাড়া বাকি সবকটি তলায় ছিল রেস্তোরাঁ। একে ভবনটিতে ছিল না জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি, তার উপর ভবনের মূল সিঁড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা ছিল গ্যাসের সিলিন্ডার। ফলে আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে তা। আর মর্মান্তিক এক ঘটনার সাক্ষী হয় দেশবাসী।

এ ঘটনার পরই রেস্তোরাঁ ও ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি আবার সামনে আসে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।