ঢাকা, সোমবার ২৫, নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪২:৫৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে ব্রাজিলে বাস খাদে পড়ে ২৩ জনের প্রাণহানী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ ১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী

শরৎ উৎসবে গানে গানে মুখরিত ঢাবির বকুলতলা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:০৪ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে শরৎ উৎসব ১৪২৯ পালিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ ও সংস্কৃতিজনরা প্রকৃতি সুরক্ষার প্রত্যয় গ্রহণ করেন।

শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় এ অনুষ্ঠান পালিত হয়। গান, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে মুখরিত হয়ে উঠে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন।

উৎসবের শরৎ কথন পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ; বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহ সভাপতি ড. নিগার চৌধুরী। এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট স্বাগত বক্তব্য দেন। একক আবৃত্তি পর্বে নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি পাঠ করেন নির্মলেন্দু গুণের ‘কাঁশফুলের কাব্য’ আহসান উল্লাহ পাঠ করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছিন্নপত্র’ থেকে। সেবতি প্রভা পাঠ করেন মো. নাসির উদ্দিনের ‘শরৎকাল’ কবিতাটি।

একক সংগীত পর্বে ফাহিম হোসেন চৌধুরী শোনান রবীন্দ্রসংগীত ‘এবার অবগুণ্ঠন খোলো’, অনিমা রায় শোনান ‘শরৎ আলোর কোমল বনে’, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস শোনান লোকসংগীত ‘হিংসা হিন্দা ছাড়ো’।

এরপর সঞ্জয় কবিরাজের নজরুল সংগীত ‘দূর প্রবাসে মন কাঁদে’, আরিফ রহমানের লোকসংগীত ‘চাতুরি করিয়া মোরে’, ফেরদৌসী কাকলীর রবীন্দ্রসংগীত ‘হৃদয়ে ছিলে জেগে’, জমিয়ে তুলে বকুলতলা।

এরপর ‘আকাশটা তো নীল চিঠি নয়’, ‘আরে ও জীবন ছাড়িয়া না যাও মোর’, ‘আমি সুরের পিয়াসী’, ‘ভাসে আকাশে শুকতারা হাসে’, ইত্যাদির গান ও কীর্তন পরিবেশন করেন শিল্পীরা।

দলীয় সংগীত পর্বে বহ্নিশিখা পরিবেশন করে আগমনী সংগীত ‘শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে ভোরের আগমনী’, সুরনন্দনের শিল্পীরা শোনান ‘এসো শারদ প্রাতের প্রতীক’, পঞ্চভাস্করে শিল্পীরা শোনান ‘আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়’, সুরবিহারের শিল্পীরা গেয়েছেন ‘শিউলি তলায় ভোরবেলায়’, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা শোনান ‘দেখ দেখ শুকতারা আঁখি মেলে চায়’ ও ‘নম নম নম বাংলাদেশ মম’।

নৃত্য পরিবেশনায় রবীন্দ্রসংগীত ‘ওগো শেফালী ওগো শেফালী’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্য সংগঠন ভাবনার শিল্পীরা। ‘আজ শরতে আলোর বাঁশি বাজলো’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনায় ছিল নৃত্যাক্ষ। রবীন্দ্রসংগীত ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলী’ গানের সঙ্গে মঞ্চে আসে নৃত্য সংগঠন নৃত্যজনের শিল্পীরা; বাফার শিল্পীরা পারফরম্ করে নজরুল সংগীত ‘এসো শারদ প্রাতের পথিক’ গানের সঙ্গে। এছাড়া নৃত্য সংগঠন স্পন্দন আগমনী নৃত্য পরিবেশন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘আমাদের দেশে ঋতুর আবির্ভাবের অনুষ্ঠান শুরু করেছে ছায়ানট। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের মধ্য দিয়ে তারা ঋতুকে আমন্ত্রণ জানানোর অনুষ্ঠান শুরু করেছিল। এখন সারাদেশে প্রত্যেক ঘরে ঘরে ধর্ম বর্ণ মত নির্বিশেষে প্রত্যেকে পহেলা বৈশাখ পালন করছে। এর ধারাবাহিকতায় শরৎ উৎসব স্বচ্ছতার আনন্দ নিয়ে আমাদের মধ্যে আসে। সবকিছুর উর্ধ্বে শরৎ আমার সবচেয়ে পছন্দের একটি ঋতু। এ সময় কাশফুল দেখা যায়। স্বচ্ছ নীলাকাশে সাদামেঘ-এগুলো খুবই উপভোগ্য। তবে জীবনের ব্যস্ততায় এটিকে খুব উপভোগ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।’

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘শরৎ বাঙালি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে রূপান্তরিত হয়েছে। শরতের কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে যা কবিদের লেখনীতে ফুটে উঠেছে। যেমন: আকাশ, কাশফুল, শিউলি ইত্যাদি। শরতের সুবিশাল আকাশ যেন আমাদের মন কে আরো প্রসস্থ করে। তবেই আমরা আরো অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক হতে পারব।’

গোলাম কুদ্দুছ বলেন, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই এমন সাংস্কৃতিক, ঋতুভিত্তিক অনুষ্ঠান আরও বেশি পালন করতে হবে। কারণ এগুলো অসাম্প্রদায়িক বাঙালির উৎসব। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আরেকটি বড় লক্ষ্য এ ধরণের অনুষ্ঠান।

নিগার চৌধুরী বলেন, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী এই উৎসব করে নগর জীবনে মানুষ যখন প্রকৃতির দিকে তাকাবার সুযোগ পাই না তখন তাদের জানান দিতে যে শরৎ ঋতু এসেছে৷ শরৎ হচ্ছে সমৃদ্ধির ঋতু। এসময় তিনি বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্কৃতি পালনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার দিকে
 এগিয়ে যেতে সকলকে আহ্বান জানান।