ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১২, ডিসেম্বর ২০২৪ ৭:৫৯:০১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
কেমন আছেন পাপিয়া সারোয়ার, মৃত্যু নাকি গুঞ্জন? পঞ্চগড়ে বৃষ্টির মতো শিশির, শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন গাড়ির সংঘর্ষ, বৃদ্ধা ও শিশুর মৃত্যু অনিয়ম পার্বত্য এলাকায় একটু বেশি: প্রধান উপদেষ্টা শীত নিয়ে আবহাওয়া অফিসের দুঃসংবাদ দিনাজপুরে দিনের বেশির ভাগ সময় মিলছে না সূর্যের দেখা

শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল, জনজীবন বিপর্যস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৩৬ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

দেশের উত্তরাঞ্চলে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতা প্রতিদিনই বাড়ছে। পর্যায়ক্রমে যা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। উত্তরের জনপদের পাশাপাশি শীত নেমেছে রাজধানীতেও। গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার আকাশ ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন।

শীতে গ্রামগ্রঞ্জে বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের অবস্থা কাহিল। ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা আরও করুণ। সবচেয়ে বিপদে আছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে দেয়া ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে, তবে কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা।

পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় অবশ্য বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। আর সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা। আর বর্ধিত ৫ দিনেও একই অবস্থা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

এদিকে, তীব্র শীতে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় প্রতিবছর এই জেলায় শীতের প্রকোপ অনেক বেশি থাকে। এবছর অক্টোবর মাসে শীতের আমেজ শুরু হলেও নভেম্বরের দিকে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত ঠান্ডা অনুভূত হতো। তবে ডিসেম্বরের শুরুতে হালকা কুয়াশা ও হিমেল বাতাস অব্যাহত থাকলেও হঠাৎ করে ৯ ডিসেম্বর রাত ৯টা থেকে ঘনকুয়াশার দাপট অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক থেকে শুরু করে পথচারী ও জনসাধারণ পড়েন চরম বিপাকে।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় উত্তরের এই জেলা। কুয়াশার এতোই ঘনত্ব যে যানবাহনের হেডলাইটও হার মেনেছে। লাইটের আলো ১০-১৫ গজ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারছে না। সড়কে গাড়ি চালানো প্রায় অনোপুযোগী হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কায় ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে দেখা গেছে চালকদের।

এর আগে কখনো এতো ঘন কুয়াশা ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ দেখেনি। আগামী দিনগুলোতে আরও কুয়াশা ও শীত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষগুলো। রাস্তার ধারেই যে যা পারছেন খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতার জন্য আগুন পোহাচ্ছেন।

অন্যদিকে ঠান্ডার প্রকোপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে বিশেষ করে ঠান্ডার কারণে নবজাতক ও কমবয়সী শিশুরা বেশি ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও প্রতিনিয়ত প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের ওপর রোগী ভর্তি থাকেন। সচরাচর শীতের সময় রোগীর বেশি চাপ থাকে। তবে এবার আগের মতোই রোগীর চাপ থাকলেও বর্তমানে বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি। হাসপাতালটিতে ৪০ শয্যার শিশু ওয়ার্ড হলেও সোমবার রাত ১১ টার দিকে ১৩০ জনেরও বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন।

যা ধারণ শয্যার থেকে তিন গুণ বেশি বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত বেশিরভাগ শিশু ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে জানান রোগীর অভিভাবক ও স্বজনরা।

শীতকালে নবজাতক শিশুদের ৬ মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ পানসহ অন্যান্য বয়সী শিশুদের পুষ্টিকর তাজা খাবার খাওয়ানো, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে সর্দি-কাশি ও জ্বর হলে দেরি না তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আবু মো. রাজিব-উল-দোজা (তূর্য)’।

রাজিব-উল-দোজা তূর্য বলেন, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছি। এটা আমাদের পেশা ও দায়িত্ব।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তার তথ্য মতে, ঠাকুরগাঁওয়ে বর্তমানে সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। দিন দিন তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের শীত সহনশীল পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনের পরামর্শসহ কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। কৃষকরা শীত সহনশীল পদ্ধতি অবলম্বন করলে ফসলের ক্ষতি হওয়ার তেমন সুযোগ নেই।

ইতোমধ্যে চাহিদা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠকুরগাঁও জেলার জন্য ৮০ হাজার শীতবস্ত্রের চাহিদা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পাঠানো হয়েছে। সেগুলো পেলে তা দ্রুত বিতরণ করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা।