ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ২২:৫৬:০৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই প্রিয়াঙ্কার বাজিমাত বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস

শুরু হলো দুই দিনের জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব

বিনোদন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৩৩ পিএম, ১২ মে ২০২৩ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

‘করিস নে লাজ, করিস নে ভয়/ আপনাকে তুই করে নে জয়’- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই অমিয়বাণী ধারণ করে শুরু হলো ৩৪তম জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব। বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার উদ্যোগে আজ শুক্রবার (১২ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে উৎসবের দুই দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে। প্রথমে উৎসব মিলনায়তনের বাইরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এতে অংশ নেন নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা। প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা করেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। এরপর উপস্থিত সবাই রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গাইতে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন। সূচনা পর্বে সংস্থার শিল্পীরা পর পর সমবেত গাইলেন ‘আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার’ও ‘দারুণ অগ্নিবাণে রে’। 

মিলনায়তনের মূল মঞ্চে ১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবের মূল পর্ব শুরু হয় দলীয় পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযূষ বড়ুয়া এবং সভাপতির বক্তব্য রাখেন আমিনা আহমেদ। 

বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কলিম শরাফী এবং এর অগ্রজদের স্মরণ করে আমিনা আহমেদ বলেন, ‘আমরা খুব উচ্ছ্বসিত আপনাদের উপস্থিতিতে। এটা আমাদের প্রেরণা জোগায়। রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা, সাধনা এটা যেন সবসময় থাকে। নতুন প্রজন্মের কাছে, আমাদের তরুণদের কাছে যেন বাঙালির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রবীন্দ্র চর্চা ছড়িয়ে দিতে পারি, সেজন্য আমাদের এই প্রয়াস।’   

সকালের  অধিবেশনে দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয় বৈতালিক, বিশ্ববীণা, উত্তরায়ণ, সুরের ধারা, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) ও সঙ্গীত ভবন। তাদের পরিবেশনায় উঠে আসে সম্প্রীতি, প্রকৃতি, কল্যাণ ও আত্মশুদ্ধির বাণী। যা উপস্থিত শ্রোতা-দর্শকের মনে মুগ্ধতা-প্রশান্তির আবেশ ছড়িয়ে দেয়।

দলীয় পরিবেশনার শুরুতেই বৈতালিক দুইটি গান পরিবেশন করেন। এই সংগঠনের শিল্পীরা  

পর পর গাইলেন ‘আকাশভরা সূর্য-তারা’ও ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারো’। এর পর মঞ্চে আসে বিশ্ববীণার শিল্পীরা। তারাও পরিবেশন করেন দুইটি গান। প্রথমটি ছিল ‘মধ্য বিজন বাতায়নে’ এবং দ্বিতীয় গানটি ছিল ‘ফিরে চল মাটির টানে’।  এর পর উত্তরায়নের শিল্পীরা গাইলেন ‘আনন্দেরই সাগর হতে এসেছে আজ বান’। বুলবুল লতিকলা একাডেমি (বাফা) শিল্পীরা শোনান ‘অগ্নিশিখা, এসো এসো, আনো আনো আলো’ ও ‘আমরা নূতন যৌবনেরই দূত’। সুরের ধারার শিল্পীরা পরিবেশন করেন‘গানের ভিতর দিয়ে যখন দেখি ভুবনখানি’ ও ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’ এবং সঙ্গীতভবনের শিল্পীরা শোনান ‘তোমার  সুরের ধারা ঝরে যেথায় তারি পারে’ ও ‘তোর আপন জনে ছাড়বে তোরে’। এ ছাড়া একক গান পরিবেশন করেন বীথি বিশ্বাস অন্তরা, শ্রেয়া সাহা ও তাসনিতা মাহবুব নরিন। এই পর্বটি উপস্থাপনা করেন সীমা সরকার।

প্রথম দিনের প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি হয় দুপুর ১২টার দিকে। এর পর কয়েক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় বিকাল ৫টায়। মূলত পর্বটি ছিল এবারকার উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজন। উদ্বোধন শেষে প্রদান করা হয় গুণিজন সম্মাননা। এ বছর সম্মাননা দেয়া হয় কিংবদন্তি গিটার শিল্পী এনামুল কবীর ও বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী লিলি ইসলামকে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযুষ বড়ুয়া। 

সম্মাননা পর্ব শেষে সন্ধ্যা ৬টায় ছিল আবৃত্তি ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। এই পর্বে একক গান পরিবেশন করেন রফিকুল আলম, এনামুল কবীর, লিলি ইসলাম, মল্লিকা বাগচি, রমা বাড়ৈ, মমিতা মমি, স্বাতী সরকার, 

রিফাত জামাল, অনুশ্রী ভট্টাচার্য, তনুশ্রী ভট্টাচার্য, আঁখি হালদার, মৃদুল চক্রবর্তী, জয়ন্ত আচার্য, পারভেজ বাধন, শাকিল হাশমি, তমাল চক্রবর্তী, জাফর আহমেদ, সত্যম দেবনাথ, মুস্তাফিজুর রহমান তুর্য, কেশব জিপসি, দেবাশীষ চৌধুরী, মহুয়া মঞ্জুরী সুনন্দা, মোকসেদুল ইসলাম,  ফেরদৌসার রহমান সহ আরও অনেকে। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ডালিয়া আহমেদ। 

শিল্পীদের কণ্ঠে শোনা গেলো-‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’, ‘বিশ্বসাথে যোগে যেথায়, ‘সজনি সজনি রাধিকালো বাজিল কাহার বীণ ‘, ‘বরিষ ধরামাঝে’, ‘আমার মন মানে না’, ‘আমার খেলা যখন ছিল তোমার’, ‘বৈশাখ হে মৌনী তাপস’, ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’, ‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’, ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’, ‘এ মোহ-আবরণ খুলে দাও’, ‘শুন্য হাতে ফিরি হে’, ‘অধরা মাধুরী ধরেছি ছন্দোবন্ধনে’, ‘ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝড়ে’, ‘আমার দোসর যে জন ওগো তারে’, ‘কে বসিলে আজি হৃদয়াসনে’, ‘আনন্দধারা বহিছে ভুবনে’, ‘চৈত্র পবণে মম চিত্ত’, ‘তরীতে পা দিইনি’, ‘জীবনে আমার যত আনন্দ’, ‘লুকালে বলেই, ওগো তোমার চক্ষু দিয়ে’, ‘শাঙনগগনে’, ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি’, ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’, ‘সুখহীন নিশিদিন’, ‘কী ধ্বনি বাজে’, ‘নিশীথ শয়নে ভেবে রাখি মনে’, ‘আমি তোমার প্রেমে হব সবার কলঙ্ক ভাগি’ সহ আরও গান। 

যুগ যুগ ধরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের গান বাংলা ও বাঙালির অস্তিত্বে মিশে আছে। শিল্প-সংস্কৃতির ধারাকে গতিশীল ও সমৃদ্ধ করে চলেছে। তার গানকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এবং অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখতেই প্রতি বছর এই উৎসব উদযাপন করা হয়। আগামীতেও এই উৎসবের ধারা অব্যাহত রাখা হবে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। 

উৎসবের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হবে কাল শনিবার (১৩ মে) বিকাল ৫টায়। এদিনের পরিবেশনায় থাকছে আবৃত্তি ও সংগীত। অনুষ্ঠানের সূচনা হবে পর সংস্থার শিল্পীদের কণ্ঠে পর পর তিনটি গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এদিন একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন আমিনা আহমেদ, রাইয়ান খালিদ স্যান্ড্রা, তনুশ্রী দীপক, কনক খান, শর্বাণী চক্রবর্তী, শর্মীলা  চক্রবর্তী, সুস্মিতা মণ্ডল, ছন্দা রায়, সঞ্জীব সূত্রধর, সেঁজুতি বড়ুয়া, রাকিবা খান লুবা, মাহজাবিন রহিম মৈত্রী, সুমা রানী রায়, আহমাদ মায়া আখতারী, সীমা সরকার, মেরি দেবনাথ, মেহেরা মোস্তফা নিপা, তালাত সুলতানা, তানজিনা তমা, শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য, ফারমিন ইসলাম ইমা, গুলজার হোসেন উজ্জ্বল, আজিজুর রহমান তুহিন, সত্য চক্রবর্তী, আবদুর রশিদ, খন্দকার খায়রুজ্জামান কাইয়ুম, খোকন চন্দ্র দাস, নির্ঝর চৌধুরী, বিষ্ণু মণ্ডল, দীপাঞ্জন, এ টি এম জাহাঙ্গীর, অশোক সাহা, শ্রাবণী সাহা, অর্পিতা কুন্ডু (খুলনা), ফাহমিদা হোসেন, বন্দনা রানী গোমস্তা সহ আরও অনেকে। আবৃত্তি পরিবেশন করবেন জয়ন্ত রায়।

অনুষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত।