ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৬, ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৭:৫০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ সাংবাদিক নিহত লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা কুষ্টিয়ায় নারী পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার খুলল প্রবেশ পথ, সচিবালয়ে ঢুকছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেসব মন্ত্রণালয়ের অফিস আছে আগুন লাগা ভবনে পাঁচ ঘণ্টা পর সচিবালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে ধর্ষিতাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে হবে: দিল্লি হাইকোর্ট

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে পঞ্চগড়, তাপমাত্রা নামল ৯ ডিগ্রিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৪৪ এএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

পাহাড়ের হিমেল বাতাসে কনকনে শীতে জর্জরিত উত্তরের হিমকন্যা পঞ্চগড়। তাপমাত্রা নেমেছে ৯ ডিগ্রিতে।

এই জেলায় নেমে আসা মৌসুমের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের প্রকোপে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্র থেকে নিম্ন আয়ের মানুষরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ, আবাল-বনিতারা কাঁপছে শেষ অগ্রহায়ণে ঝেঁকে বসা শীতে।

আজ শুক্রবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বাতাসে তাপমাত্রা সাধারণত ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে ও ৮ ডিগ্রির উপরে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নেমে এলে মাঝারি ও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হয়ে থাকে।

সকালে আবহাওয়ার তথ্যটি জানিয়েছে জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয়।

ভোরেই হালকা কুয়াশা ভেদ করে দেখা গেছে সূর্য। গত দিনের তুলনায় ঘন কুয়াশা না থাকলেও কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তর জনপদের মানুষ। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরেছে বরফ শিশির। শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে কাজে বেরিয়ে পড়েছেন দিনমজুর, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, কৃষক থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ। এদিকে গতকাল রাতে শীতের কারণে হাটবাজারগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কমে যেতে দেখা যায়। কাগজের কাটন, শুকনো কাঠখড়ি জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতে মনে হয়েছে তাপমাত্রা জিরোতে নেমে এসেছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় হাড় পর্যন্ত কেঁপেছে। সন্ধ্যার পর শীতের প্রকোপ একটু বেশি থাকছে। একইসঙ্গে পাহাড়ের হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ। সন্ধ্যার পর থেকেই গরম কাপড় পরে চলাফেরা করছে মানুষ। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে।

সকালে কথা হয় ভ্যানচালক দেলোয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে যখন ভ্যানে যাত্রী নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম, মনে হচ্ছিল কনকনে ঠাণ্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসছিল। শরীরে তিন-চারটা গরম কাপড় পড়েও শিরশির করে শীত কাটার মতো লাগছিল। সন্ধ্যার পর কিংবা সকালে যাত্রী তেমন পাওয়া যায় না। শীতের কারণে ভ্যান ঠিকভাবে চালানো যায় না। ফলে উপার্জন কমে গেছে।

বয়স্ক হানিফ আলী বলেন, রাতে ও ভোরে প্রচণ্ড ঠান্ডা। আমাদের মতো বয়স্করা পড়েছি বিপাকে। ঠাণ্ডায় জ্বর, সর্দি, কাঁসি লেগেই থাকছে।

আজমির ও আমজাদ আলী নামের দুই চাষি বলেন, আমরা তো শাকসবজি আবাদ করি। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে খেতে টাটকা সবজি তুলতে গেলে হাতপা অবশ হয়ে আসে। প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে আজ।

আসমা, ফিরোজা ও মর্জিনাসহ কয়েকজন গৃহিণী জানান, রাতে বিছানা থেকে শুরু করে ঘরের ফ্লোর, বালতিতে রাখা পানি বরফ হয়ে ওঠে। ভোরে উঠে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।

এদিকে এবার হাটবাজারের ফুটপাতে সেভাবে গড়ে ওঠেনি পুরোনো কাপড়ের দোকান। কাপড়ের যে দোকানগুলো বসেছে তাতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের পোশাক। অনেকে সাধ্যমতো কিনতে পারলেও বেশির ভাগ নিম্ন আয়ের মানুষ কিনতে পারছে না শীতের কাপড়। এবার এখনো সেভাবে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ চোখে পড়েনি।

জেলা প্রশাসন জানায়, জেলায় মাত্র ২ হাজার কম্বল বরাদ্দ পেয়েছে। তা বিতরণ করা হয়েছে। এজন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সমাজের বিত্তশালীদের শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলার সদরসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা শীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ বলেন, তাপমাত্রা নেমে ৯ ডিগ্রিতে চলে এসেছে। আজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ তাপমাত্রা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশা ভেদ করে সকালেই সূর্য দেখা গেছে। তবে হিমবাতাসের সাথে প্রবাহিত শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে উত্তরের জনপদ।